ধর্ষিতা মাঙ্গলিক কি না, তা জানাতে জ্যোতিষ বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। এই 'অপ্রাসঙ্গিক' নির্দেশকে খারিজ করে বিচারের দরবারকে বড় লজ্জার হাত থেকে বাঁচাল সুপ্রিম কোর্ট। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের পর প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ সংক্রান্ত এক ধর্ষণের মামলা উঠেছিল এলাহাবাদ হাইকোর্টে। সেই মামলায় অভিযুক্ত দাবি করেছে, তার বিয়ে করারই ইচ্ছে ছিল। কিন্তু, যখন জানতে পারে যে সঙ্গীর জন্মছকে সমস্যা আছে, অভিযোগকারিণী মাঙ্গলিক, তখন বিয়ে করতে অস্বীকার করে।
অভিযুক্তের সেই বক্তব্যের ভিত্তিতে নির্যাতিতা সত্যিই মাঙ্গলিক কি না, জানতে চেয়েছিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। সেজন্য লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতিষ বিভাগকে নির্যাতিতার জন্মছক দেখতেও আদালত নির্দেশ দিয়েছিল। গত ২৩ মে এই আদেশ দিয়েছিল এলাহাবাদ হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। তার প্রেক্ষিতে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলাটি গ্রহণ করে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া এবং বিচারপতি পঙ্কজ মিথালের বেঞ্চ। শীর্ষ আদালত এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশটি খারিজ করে দিয়েছে। একইসঙ্গে হাইকোর্টকে তার নিজস্ব (আইনের) ধারায় বিচার করা নির্দেশ দিয়েছে।
একইসঙ্গে শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরা বলেছেন, 'আমরা এই পর্যায়ে মামলাটির গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে কিছু বলতে চাই না। শুধু ন্যায় বিচারের স্বার্থে লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতিষ বিভাগকে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাতে স্থগিতাদেশ দেওয়া হচ্ছে।' শীর্ষ আদালত বলেছে যে বিচারব্যবস্থা জ্যোতিষশাস্ত্র এবং জ্যোতির্বিদ্যার অনুভূতিকে সম্মান করে। তবে যা ঘটেছে তা 'অপ্রাসঙ্গিক' এবং গোপনীয়তার সমস্যাও এতে জড়িত।
আরও পড়ুন- আহতদের চিকিৎসায় খামতি না-রাখার আশ্বাস মোদীর, রেলমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি অভিষেক-বাঘেলদের
কেন্দ্রের তরফে আদালতে এই মামলায় প্রতিনিধিত্ব করেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি অভিযোগ করেন যে হাইকোর্টের নির্দেশটি যথেষ্ট বিরক্তিকর। আর, সেই কারণে এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশ স্থগিতের জন্য বেঞ্চের কাছে আবেদন জানান মেহতা। তিনি আদালতকে বলেন, 'জ্যোতিষ একটি বিজ্ঞান। মাঙ্গলিকের ওপর ভিত্তি করে বিয়ে করা উচিত কি না, সেই প্রশ্ন কেউ করছে না। প্রশ্ন হল, বিচার বিভাগের মঞ্চে বিষয়টি কি গ্রহণযোগ্য?'