মুম্বইয়ে এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক কর্তাকে খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেল পুলিশ। এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট সিদ্ধার্থ সংভিকে খুনের অভিযোগে ধৃত ২০ বছর বয়সী সরফরাজ শেখকে জেরা করে বিস্ফোরক তথ্য হাতে পেলেন তদন্তকারীরা। সিদ্ধার্থের উপর হামলা চালানোর দু’দিন আগে কমলা মিলস কম্পাউন্ডের পার্কিং লটে আরও এক ব্যক্তিকে নিশানা বানিয়েছিল সরফরাজ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কমলা মিলস কম্পাউন্ডে সিদ্ধার্থকে খুন করার দু’দিন আগে রড নিয়ে আরেক ব্যক্তির উপর হামলা চালানোর চেষ্টা করে ওই যুবক। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ওই ব্যক্তির এক বন্ধু এসে যাওয়ায় পালিয়ে যায় সরফরাজ।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, সরফরাজ সম্প্রতি একটি বাইক কেনে, যার ফলে ৩৫,০০০ টাকার ঋণের বোঝা ছিল তার কাঁধে। এবং সেই কারণেই টাকার জন্যই সে হামলা চালিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। টাকা না দেওয়াতেই সিদ্ধার্থ সংভির উপর প্রাণঘাতী আক্রমণ চালায় সরফরাজ। এ প্রসঙ্গে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সিদ্ধার্থের উপর হামলা চালানোর আগে ওই পার্কিং লটে রড নিয়ে আরেক ব্যক্তির কাছে টাকা চেয়ে হুমকি দেয় সে। কিন্ত শেষ মুহূর্তে ওই ব্যক্তির এক বন্ধু এসে যাওয়ায় পালিয়ে যায় সরফরাজ। এরপর সিদ্ধার্থের উপর একই কায়দায় হামলা চালায় সে। টাকা না দেওয়াতেই সিদ্ধার্থকে খুন করা হয়। গত ৫ সেপ্টেম্বর কমলা মিলস কম্পাউন্ডের পার্কিং লট থেকে নিখোঁজ হন এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট। পরে গত সোমবার তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন, পেশাগত শত্রুতার জেরেই খুন এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক কর্তা
অন্যদিক, এ ঘটনায় এক তদন্তকারী দল সরফরাজের উত্তর প্রদেশের বাড়িতে যাবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। সরফরাজের বাবার সঙ্গে কথা বলতেই ওই দল উত্তর প্রদেশে যাবে। খুনের দিন সরফরাজ তার বাবার সঙ্গে বেশ কয়েকবার ফোনে কথা বলেছে বলে তার মোবাইল কল রেকর্ডস দেখে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। এমনিতে সরফরাজ তার বাবার সঙ্গে যতবার ফোনে কথা বলে থাকে, তার চেয়ে সেদিন বেশি কথা বলেছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
সিদ্ধার্থ সংভিকে খুনের ঘটনায় আরও তথ্য হাতে পেয়েছে পুলিশ। চলতি মাসের ৮ তারিখ সিদ্ধার্থের ফোনে নিজের সিমকার্ড ঢোকায় সরফরাজ। এরপর সিদ্ধার্থের বাবাকে সে ফোন করে জানায়, সিদ্ধার্থ তার সঙ্গে নিরাপদেই রয়েছে। একথা বলেই সরফরাজ ফোন কেটে দেয় বলে জানা গিয়েছে। খুনের পর সরফরাজ অনুতপ্ত হয় বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। মুম্বইয়ের কোপেরখারাইন এলাকায় থাকত সরফরাজ। তবে সেখানে তাকে সবাই রইস শেখ নামেই চিনত। এ ঘটনা সামনে আসার পর সে এলাকার বাসিন্দারা বিশ্বাসই করতে পারছেন না, যে তাঁদের রইস এ কাজ করতে পারে।