ফর্টিস হাসপাতালে হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপনের খবর শিরোনামে আসার পর বিষয়টি নিয়ে আগ্রহী হয়েছেন বহু মানুষ। তাঁদের অনেকের কাছেই প্রাথমিক যে প্রশ্নটা সামনে আসছে, তা হল খরচ। ফর্টিসের মতন হাসপাতালে যে পরিমাণ খরচ, তা বহন করতে পারবেন না অনেকই। তাঁদের জন্য সুখবর। খুব বেশি দেরি নেই, এবার এই রাজ্য়ে সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্য়ে হার্ট প্রতিস্থাপন শুরু হয়ে যাবে। এখন শুধু প্রয়োজন রাজ্য় স্বাস্থ্য় দফতরের অনুমতি। পরিকাঠামোসহ সমস্ত রকমের প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষা করছে কলকাতা মেডিক্য়াল কলেজ হাসপাতাল। এখন বেসরকারি হাসপাতালে এই প্রতিস্থাপনে খরচ পড়ে ১৮ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা।
সোমবার কলকাতার ফর্টিস হাসপাতালে হার্ট প্রতিস্থাপন যথেষ্ট সাড়া জাগিয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতে। বেঙ্গালুরু থেকে সরসরি হার্ট কলকাতায় নিয়ে এসে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। কলকাতায় ফর্টিস ছাড়াও হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন করার অনুমতি রয়েছে আর এন টেগোর ও বি এম বিড়লা হাসপাতালে। বেসরকারি হাসপাতালে এই প্রতিস্থাপনের অনুমতি থাকলেও রাজ্য়ে কোনও সরকারি হাসপাতালের সেই লাইসেন্স নেই। চলতি বছরের শুরুতে রাজ্য় স্বাস্থ্য় দফতরে হার্ট প্রতিস্থাপনের লাইসেন্সের জন্য় আবেদন করেছে কলকাতা মেডিক্য়াল কলেজ। লাইসেন্স সংক্রান্ত সমস্ত নথিপত্রও জমা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের কার্ডিওলজি ও কার্ডিওথেরাসিক বিভাগ যৌথ ভাবে এই উদ্য়োগে সামিল হয়েছে। স্বাস্থ্য় দফতর সূত্রে খবর, সরকারি মেডিক্য়াল কলেজ হিসাবে এই দুই হাসপাতালই প্রথম এই আবেদন করেছে। মেডিক্য়াল কলেজ হাসপাতালে প্রস্তুত রয়েছে অপারেশন থিয়েটর, আইসোলেশন ওয়ার্ড। বাকি রয়েছে শুধু টুকুটাকি যন্ত্রপাতি কেনা। মেডিক্য়াল কলেজের আবেদন দেখে উদ্য়োগী হয়েছে এসএসকেএমও।
মেডিক্য়াল কলেজের সিটিভিএস বিভাগের প্রধান প্লাবন মুখোপাধ্য়ায় জানিয়েছেন, ‘‘আমরা হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের কাজ শুরুর জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। এখানে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো রয়েছে। এখন দরকার শুধু অনুমতি, আর সামান্য় প্রশিক্ষণ। স্বাস্থ্য় ভবনের অনুমোদন পেলেই হার্ট প্রতিস্থাপনের কাজ শুরু করে দেব।’’ তাঁর বক্তব্য়, ‘‘সরকারি হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিনাখরচে এই সুযোগ পাওয়া যাবে। বেসরকারি হাসপাতালে সেই খরচ হবে ১৮ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা।’’ কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান শান্তনু গুহ বলেন, ‘’আমাদের এখানে এমন অনেক মরণাপন্ন রোগী আসেন যাঁদের বাঁচানোর একমাত্র রাস্তা হার্ট প্রতিস্থাপন।’’
অতিরিক্ত স্বাস্থ্য় অধিকর্তা প্রশাসন অদিতিকিশোর সরকার জানিয়েছেন, ‘‘মেডিক্য়াল কলেজের আবেদন জমা পড়েছে। আলোচনা করে যথাসময়ে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় অনুমতি দেওয়া হবে।’’