প্রকৃতির রোষে উত্তরাখণ্ড। গত কয়েকদিনের অতিবৃষ্টির জেরে তছনছ 'দেবভূমি'। রবিবার রাত থেকে শুরু হওয়া প্রায় তিন দিন ধরে ভারী বৃষ্টির জেরে উত্তরাখণ্ডে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ভূমি-ধসে বিধ্বস্ত গোটা রাজ্য। বিশেষ করে কুমায়ুন অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আবহাওয়ার পরিস্থিতি অত্যন্ত প্রতিকূল থাকার জেরে ব্যাহত উদ্ধারকাজ। এখনও পর্যন্ত প্রবল প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে উত্তরাখণ্ডে ৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ১২ পর্বতারোহীর। হারসিল এবং লামখাগা পাসের কাছে দুটি ট্রেকিং গ্রুপের নিখোঁজ সদস্যদের খুঁজে বের করার জন্য উদ্ধারকাজ চলছে।
উত্তরাখণ্ডের ডিজিপি অশোক কুমার সংবাদসংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “সাত পর্বতারোহীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। হরসিল থেকে নিখোঁজ হওয়া ১১ জনের একটি গ্রুপ থেকে দু'জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। দু'জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। লামখাগা পাসের কাছে নিখোঁজ হওয়া ১১ পর্বতারোহীর অন্য আর একটি গ্রুপের আরও পাঁচ জনের মৃতদেহও উদ্ধার করা হয়েছে।”
রবিবার রাত থেকে লাগাতার তিন ধরে উত্তরাখণ্ডে ভারী-অতি ভারী বৃষ্টি চলেছে। একটানা বৃষ্টির জেরে উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ধস নেমে পরিস্থিতি আরও বেশি ভয়াবহ আকার নিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে যুদ্ধকালীন তৎপরতার সঙ্গে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে সেনা, বিপর্যয় মেকাবিলা দল। দুর্গত এলাকা থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সরানোর কাজ চলছে। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে বহু ত্রাণ শিবির তৈরি হয়েছে রাজ্যজুড়ে। দুর্যোগের জেরে উত্তরাখণ্ডে বেড়াতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন বহু পর্যটকও।
আরও পড়ুন- ‘গোয়ায় আনব নতুন ভোর, বিজেপিকে রুখতে একজোট হোন’, সফরের আগে বার্তা মমতার
উত্তরাখণ্ডের বাগেশ্বরের পিন্ডারি এবং কাফনি হিমবাহের কাছে ৬৫ পর্বতারোহীর কটি দলকে উদ্ধার করা হয়েছে। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী বাগেশ্বরের পিন্ডারি এবং কাফনি হিমবাহের কাছে আটকা পড়া ৬৫ জন পর্বতারোহীর দলকে উদ্ধার করেছে। সেই দলে ৬ বিদেশিও রয়েছেন। পিথোরাগড়ের দারমা উপত্যকা থেকে আরও ২৩ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। সংবাদসংস্থা পিটিআইকে বাগেশ্বরের জেলাশাসক বিনীত কুমার জানিয়েছেন, এসডিআরএফ-এর দলগুলি পিন্ডারি হিমবাহের কাছে দওয়ালি থেকে ৬ বিদেশি-সহ ৪২ পর্যটক এবং কাফনি হিমবাহের কাছ থেকে ২৩ জনকে উদ্ধার করেছে।
সংবাদসংস্থা পিটিআইকে বিভাগীয় আধিকারিক সুশীল কুমার জানিয়েছেন, ৩ দিনের রেকর্ড বৃষ্টির জেরে কুমায়ুন অঞ্চলে ২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে, প্রবল বৃষ্টির জেরে উত্তরাখণ্ডে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পুস্কর সিং ধামী।
Read full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন