স্বপ্নের সওদাগর ছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। ভোটের আগেই শুধু নয়, নির্বাচনী সাফল্যের পরেও নরেন্দ্র মোদী বুলেট ট্রেনের পিছনে বিস্তর শব্দ খরচ করেছেন। তাঁর নির্দেশে জাপান পর্যন্ত ঘুরে এসেছেন বিশেষজ্ঞ দল। ভারতে এসে মউ স্বাক্ষর করে গিয়েছেন চিন, স্পেনের মতো দেশের প্রতিনিধিরা। মোদীর সেই স্বপ্নের প্রকল্পই এবার জোর ধাক্কা খেল। ২০২৩ সালে প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষের কথা থাকলেও আপাতত তা পাঁচ বছর পিছিয়ে গিয়েছে। লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২৮ সাল। মূলত বুলেট ট্রেনের ক্ষেত্রে দরপত্রে জাপানি সংস্থারগুলোর অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য হারে কম, তারা আগ্রহও সেইভাবে দেখাচ্ছে না ও জমি অধিগ্রহণের সমস্যার জেরেই এই দুরাবস্থা।
রেলের এক আধিকারিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন যে, 'সমস্ত বকেয়া সমস্যাগুলি দ্রুত সমাধান করা হলে নির্ধারিত সময় কিছুটা এগিয়ে আনা সম্ভব। কিন্তু,।এই জাতীয় জটিল প্রযুক্তি নির্ভর প্রকল্পে নির্ধারিত সময় অনেকটা পিছিয়ে দেওয়া যায় না।'
মুম্বই থেকে আমেদাবাদ ৫০৮ কিমি বুলেট ট্রেন ট্র্যাক নির্মাণের ৮০ শতাংশ খরচই জাপানের থেকে মাত্র ০.১ শতাংশ হারে ঋণে গড়ে ওঠার কথা। ঋণ শোদ করতে ১৫ বছর সময় পাবে ভারত। মূলত জাপানি প্রযুক্তিতেই ভারতে বুলেট ট্রেন গড়ে উঠবে। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বুলেট ট্রেন মুম্বই থেকে আমেদাবদ পর্যন্ত চালানোর কথা হয়েছিল।।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানতে পেরেছে, দরপত্রে কাজ করোনার জেরে থমকে গিয়েছে। এটাই এই প্রকল্প বাস্তবায়ণের ক্ষেত্রে অন্যতম জটিল জায়গা। মুম্বই থেকে আমেদাবাদ পর্যন্ত বুলেট ট্রেন করিডরে ২১ কিমি পথ ভূগর্ভস্থ, ৭ কিমি পথ সমুদ্রের নীচ দিয়ে যাবে। এই পথ নির্মাণে চলতি বছরের গোড়াতে তেমন কোনও জাপানি সংস্থা আগ্রহ প্রকাশ করেনি।
এছাড়া, জাপানি ইয়েনের তুলনায় টাকার দামও বেশ কিছুটা বেড়েছে। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়ণে আনুমানিক খরচের পরিমানও অনেকটাই বেড়েছে। বর্ধিত ব্যয় বহনে ভারত রাজি নয় বলে জানা গিয়েছে। দেশীয় সংস্থাগুলোকে সুড়ঙ্গে ট্রেন পথ নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য দরপত্র জমার ছাড়পত্র ঘোষণা করতে পারে ভারত সরকার।
বুলেট ট্রেন নির্মাতা কাওয়াসাকি ও হিতাচি যৌথভাবে ট্রেনভাবে সরবরাহে দরপত্র দিয়েছে। ফলে তুল্যমূল্য দরদামের কোনও বিকল্প মিলছে না। আগামীতে ভারত-জাপান যৌথ কমিটির বৈঠকে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে বলে সূত্রের খবর। জাপানের প্রধানমন্ত্রী
পদ থেকে শিনজো আবের ইস্তফা কাজের সমাস্যা সমাধানে অন্তরায় হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
মুম্বই থেকে আমেদাবাদ পর্যন্ত ৫০৮ কিমি বুলেট ট্রেন ট্র্যাক নির্মাণে ৭৭ শতাংশ জমি দেবে গুজরাট ও ২২ শতাংশ মহারাষ্ট্র। জানা গিয়েছে মহারাষ্ট্রের পালঘর ও গুজরাটের নবসারির জমি অধিগ্রহণে সমস্যা দেখা দিয়েছে।
ন্যাশনাল হাই স্পিড রেল কর্পোরেশনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ' ৫০৮ কিমি বুলেট ট্রেন ট্র্যাক নির্মাণের জন্য ৬৩ শতাংশ জমমি অধিহগ্রহণের কাজ সম্পন্ন। ৬টি স্টেশন হবে। ৩৪৫ কিমি পথ তৈরির টেন্ডার ডাকার কাজও শেষ।'
Read in English