'হিজাব'-কাণ্ডে জলঘোলা বাড়ছে কর্নাটকে। উত্তেজনা ছড়ানো বন্ধ রাখতে বিভিন্ন কলেজ সোমবার বন্ধ থাকল। সম্প্রতি উদুপির কুন্দপুর সরকারি পিইউ কলেজে হিজাব পরে এসেছিল কয়েকজন ছাত্রী। সেজন্য ২৫ জনকে কলেজে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। তা নিয়ে শোরগোল ছড়াতেই দেখা যায়, কিছু পড়ুয়া আবার গেরুয়া পোশাক পরে কলেজে এসেছে। এনিয়ে রাজনৈতিক মহলে কটাক্ষ এবং সমালোচনা-পালটা সমালোচনা শুরু হয়। শুধু তাই না, বিষয়টি গড়ায় আদালতেও। তবে, তাতেও উত্তেজনা কমেনি।
উদুপির ঘটনার পর দেখা যায় যে বিজয়পুর, চিক্কাবল্লপুর, চিক্কামাগালুরু এবং হাভেরি এলাকার বিভিন্ন কলেজে পড়ুয়ারা কেউ বোরখা পরে এসেছেন। কেউ আবার এসেছেন পালটা গেরুয়া পোশাক পরে। এমনিতেই করোনা আবহে দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ছিল। তারমধ্যেই সাম্প্রদায়িকতার বাষ্পে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো তার স্বাভাবিক চেহারা হারিয়ে ফেলছে বলে স্পষ্টই বুঝতে পারেন অধ্যাপক-সহ কলেজগুলোর কর্তারা। এরপরই তাঁরা পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে সোমবার কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন।
উদুপির যে কলেজে ঘটনার সূত্রপাত, সেখানে আবার হিজাব পরেই পড়ুয়াদের বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে দেখা গিয়েছে। হিজাব পরা পড়ুয়ারা তাঁদের জন্য আলাদা ক্লাসরুমের দাবিতে কলেজের বাইরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি সামলাতে ওই পড়ুয়াদের আলাদা ক্লাসরুম দেওয়া হয়। কর্নাটকের শিক্ষামন্ত্রী বিসি নাগেশ এই প্রসঙ্গে বলেন, 'পড়ুয়াদের রাস্তায় বসিয়ে রাখা আমাদের সংস্কৃতি না।'
আরও পড়ুন- হিজাব বিতর্ক: আপাতত পড়ুয়াদের সরকারের নির্দেশিকাই মানতে হবে, সাফ দাবি মুখ্যমন্ত্রীর
চিক্কামাগালুরুর আইডিএসজি সরকারি কলেজে আবার অনুমোদিত দলিত সংগঠনের ছাত্ররা নীল শাল গায়ে দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসেছিল। কলেজে হিজাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে তাদের এই নীল শাল গায়ে কলেজে আসা বলেই পড়ুয়ারা জানিয়েছে। কলেজ প্রাঙ্গণে ওই দলিত সংগঠনের ছাত্ররা 'জয় ভীম' স্লোগানও দেন। পরিস্থিতি দেখে অধ্যাপকরা স্পষ্টই জানিয়েছেন, অবস্থা আয়ত্তের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে। অধ্যাপকদের বক্তব্য, তাঁদের সরকারি নিয়ম মেনে চলতে হয়। কিছু বলতে গেলেই পড়ুয়ারা পালটা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছেন।
এসএফআই সমর্থিত ছাত্র সংগঠন আবার হাভেরির সরকারি কলেজে জাতীয় পতাকা নিয়ে এসেছিল। কর্নাটকের এসএফআই প্রেসিডেন্ট অমরেশ কাদাগড়া আবার বলেন, 'গত একমাস ধরে যা চলছে, আমরা তার ওপর নজর রাখছি। পোশাক নিয়ে এই বিতর্ক সমাজের কাঠামো নষ্ট করছে। কিছু দল নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে পড়ুয়াদের ব্যবহার করছে।' এই পরিস্থিতিতে ফের কবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্বাভাবিক হবে, এখন সেই প্রশ্নেরই উত্তর খুজছেন কর্নাটকের সরকারি কলেজগুলোর ছাত্রছাত্রীরা।
Read in English