নতুন করে উত্তপ্ত মণিপুর। দুই পড়ুয়ার মৃত্যুর খবর ভাইরাল হতেই হিংসাত্মক প্রতিবাদে মুখর উত্তরপূর্বের এই রাজ্যে। বিপর্যস্ত জনজীবন। ব্যাহত ইন্টারনেট পরিষবা। এই অবস্থায় মণিপুর সরকার জানিয়েছে, ওই দুই পড়ুয়ার মৃত্যুর তদন্ত করবে রাজ্য পুলিশ ও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু, নিখোঁজ হওয়ার এতদিন পর কেন দুই পড়ুয়ার সন্ধান দিতে পারেনি রাজ্য প্রশাসন? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অহরহ ঘটে চলেছে হিংসার ঘটনা। তাই মণিপুরকে শান্ত করতে এবার পদক্ষেপ করল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
কী সিদ্ধান্ত অমিত শাহর মন্ত্রকের?
মণিপুরে শান্তি ফেরাতে জম্মু-কাশ্মীরের দোর্দদণ্ডপ্রতাপ পুলিশকর্তা রাকেশ বালওয়ালকে সে রাজ্যে রাজ্যে পাঠাচ্ছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যে জারি হয়েছে নির্দেশিকা।
কেন বালওয়ালকেই বেছে নিল কেন্দ্র?
প্রচণ্ড খারাপ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে ২০১২ সালের ব্যাচের আইপিএস রাকেশ বালওয়ালের।রাকেশ আবার মণিপুর ক্যাডারেরই অফিসার। বর্তমানে জম্মু-কাশ্মীরের অন্যতম শীর্ষ পুলিশ আধিকারিক সে।
বালওয়াল ২০২১ সালে শ্রীনগরের এসএসপি হয়েছেন। এর আগে সাড়ে তিন বছর কাজ করেছেন এনআইএ-র এসপি হিসেবে। ২০১৯ সালের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয়েছিল ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ানের। ওই হামলার তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন আইপিএস রাকেশ বালওয়াল। কেন্দ্র মনে করছে, ক্রমশ খারপ হতে চলা মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এই কড়া ও দক্ষ অফিসারকেই প্রয়োজন।
মণিপুরে এখন কী অবস্থা?
মণিপুরে ইন্টারনেট পরিষেবা ফিরতেই ভাইরাল হয় লুওয়াংবি লিনথোইনগাম্বি( ১৭) এবং ফিজাম হেমনজিৎ সিং (২০) নামে দুই মেইতেই পড়ুয়ার দেহ উদ্ধারের ছবি। গত জুলাই মাস থেকে নিখোঁজ ছিল তারা। দু'মাস পরে প্রকাশ্যে এসেছে তাদের মৃতদেহের ছবি। ইতিমধ্যেই মণিপুর সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, দুই পড়ুয়ার মৃত্যুর তদন্ত করবে রাজ্য পুলিশ ও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু কেন এতদিন প্রশাসন এদের সন্ধান দিতে ব্যর্থ? এই প্রশ্ন তুলে শুরু হয়েছে হিংসাত্মক প্রতিবাদ। ফের বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট। এসব দেখেই, সশস্ত্র বাহিনীর (বিশেষ ক্ষমতা) আইন বা আফস্পা-র মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন। এই আইন পার্বত্য রাজ্যের উঁচু পার্বত্য জেলাগুলোয় বলবৎ থাকবে। বাদ থাকছে কেবল উপত্যকার জেলাগুলির ১৯টি থানা এলাকা। স্থিতাবস্থা রাখা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থতির অগ্রগতির কথা মাথায় রেখে এই ব্যবস্থা নেওয়া হল। বুধবারই এই নির্দেশ জারি করেছে অমিত শাহর দফতর। তবে, বিজ্ঞপ্তি বুধবার জারি হলেও ১ অক্টোবর থেকে বিজ্ঞপ্তিটি কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ছয় মাস পর পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক (এমএইচএ) আইনটি প্রত্যাহার করা হবে কি না, সিদ্ধান্ত নেবে। মণিপুর সরকারের স্বরাষ্ট্র বিভাগ জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীগুলো হাতে হাতে মিলিয়ে কাজ করবে। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে আর, আলাদাভাবে আইন-শৃঙ্খলার মূল্যায়ন করা হচ্ছে না।