একদিকে রোহতাক, আরেকদিকে কলকাতা। দুই শহরেই একই দিনে ঘটে গেল অনার কিলিংয়ের ঘটনা। দুবারই শিকার দুই তরুণী।
কলকাতার অদূরে হাওড়াতে পরিবারের সম্মানরক্ষার্থে বোনকে গুলি করে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠল দাদার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার গোলাবাড়ি থানার মাদারতলা লেন এলাকায়।
বোনের বিবাহবর্হিভূত সম্পর্ক কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি দাদা। সম্পর্ক থেকে বেরোনোর জন্য বহুবার বোনকে জোরাজুরিও করেছিলেন তিনি। কিন্তু দাদার কথায় আমল দেননি বোন। যা নিয়ে প্রায়শই ঝগড়াঝাটি চলত দাদা-বোনের মধ্যে। স্থানীয়দের কাছে জানা গিয়েছে, গত রাতে সেই ঝগড়ারই পরিণতি হিসেবে শেষমেশ বোনের দিকে বন্দুক তাক করেন দাদা।
পুলিশ সূত্রে খবর, নূরজাহান নামে বছর ছাব্বিশের ওই তরুণীর কয়েক বছর আগে বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পরই এক ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন ওই তরুণী। তরুণীর সঙ্গে ওই ব্যক্তির সম্পর্কের কথা প্রথমে জানতে পারেন শ্বশুরবাড়ির লোকেরা, যে কথা তরুণীর বাপের বাড়িতে জানান তাঁরা। নূরজাহানকে ওই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার কথা বলেন তাঁর বাপের বাড়ির লোকেরাও। কিন্তু কোনও আপত্তিতেই কর্ণপাত করেননি ওই তরুণী। কিছুদিন আগে ওই ব্যক্তির সঙ্গে কয়েকদিনের জন্য পালিয়েও যান তিনি।
আরও পড়ুন: শহরের এটিএম প্রতারণাকাণ্ডে এবার জালে মূল পাণ্ডা
স্থানীয়দের বক্তব্য, এই সম্পর্ক নিয়ে প্রায়শই বাড়িতে বচসা হত। গতকাল রাতেও ঝগড়াঝাটি হয়। গভীর রাতে আচমকাই টায়ার ফাটার মতো বিকট শব্দ শুনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে স্থানীয়দের একাংশ দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন ওই তরুণী। অভিযুক্ত তরুণীর দাদা সেলিমই গুলি চালান বলে দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, পরিবারের সম্মানরক্ষার জন্যই বোনকে খুনের চেষ্টা করেন দাদা।
এ ঘটনার পর থেকেই পলাতক সেলিম। জখম অবস্থায় ওই তরুণীকে হাওড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদিকে ওই তরুণীর আরেক ভাই মহম্মদ সাদ্দামকে আটক করেছে পুলিশ।
অন্যদিকে হরিয়ানার রোহতাক শহরে এক আঠারো বছরের যুবতী এবং তাঁর পুলিশ রক্ষীকে মোটরসাইকেল আরোহী দুই যুবক প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে পালায়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে দুজনকেই মৃত ঘোষণা করা হয়। রোহতাকের পুুুুলিশ সুপার জশনদীপ সিং রন্ধাওয়া বলেন, ঘটনাটি সম্ভবত অনার কিলিংয়ের মামলা, এবং সন্দেহের তীর যুবতীর পরিবারের দিকে।
আরও পড়ুন: শরীরে তিনটি লোহার রড, চিকিৎসকদের হাতযশে অক্ষত যুবক
পুলিশ আরও জানায়, ওই যুবতী জাট সম্প্রদায়ের হওয়া সত্ত্বেও গত বছর এক দলিত সম্প্রদায়ের যুবকের সঙ্গে পালিয়ে যান, যার ফলে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে অপহরণের অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয়, কারণ তিনি তখনো নাবালিকা। কিন্তু দুজন বিয়ে করে নিরাপত্তার আবেদন জানিয়ে কোর্টের দ্বারস্থ হন।
বুধবার ওই যুবতী এবং সাব ইন্সপেক্টর নরেন্দ্র কুমার, এক মহিলা কনস্টেবলের সঙ্গে রোহতাক আদালতে তাঁর জন্মতারিখ সংক্রান্ত শুনানির জন্য হাজির হন। দুপুরে ফেরার সময় মিনি সেক্রেটারিয়েটের সামনে ওই দুই যুবক তাঁদের দিকে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। কনস্টেবল অক্ষত অবস্থায় রক্ষা পান। যুবতী এবং কুমারকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে।