Advertisment

চরম বিপর্যয়ের মুখে গাজার হাসপাতাল, যে কোন সময় মৃত্যু হতে পারে শ’য়ে শ’য়ে নবজাতকের

গাজার একাধিক হাসপাতাল তাদের সমস্যা সারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Hospitals collapsing

চরম বিপর্যয়ের মুখে গাজার হাসপাতাল

ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ দিনের পর দিন ভয়ঙ্কর আকার নিচ্ছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চ থেকে সন্ত্রাসবাদের কড়া সমালোচনা করে মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদের প্রতিটি কাজই বেআইনি ও অযৌক্তিক। এর পাশাপাশি তিনি ইরানকে  সতর্ক করে বলেন, ‘যুদ্ধে মার্কিন নাগরিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হলে আমেরিকা ছেড়ে কথা বলবে না’।

Advertisment

অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আরও বলেছেন যে সন্ত্রাসবাদের সমস্ত কাজই বেআইনি এবং  অন্যায্য। হামাস সহ অনান্য জঙ্গি গোষ্ঠীকে  মদত তাদের অস্ত্র, অর্থায়ন ও প্রশিক্ষণ প্রদানকারী দেশগুলোর নিন্দা করে তাদের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন তিনি। তিনি তাঁর ভাষণে বলেন, ‘আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে ৭ অক্টোবর হামাসের হাতে নিহত ১৪০০ জনেরও বেশি লোকের মধ্যে ৩০ জনেরও বেশি রাষ্ট্রসংঘের সদস্য দেশগুলির নাগরিক ছিল। নিহতদের মধ্যে অন্তত ৩৩ জন মার্কিন নাগরিক রয়েছেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন এই সঙ্কটের শুরু থেকেই তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করেছেন, ইজরায়েলের আত্মরক্ষা অধিকার রয়েছে। সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে ইজরায়েলের পাশে  থেকে সব ধরণের সাহায্যের বার্তা দিয়েছে আমেরিকা।   

এদিকে হামাস-ইজরায়েলের যুদ্ধে রাষ্ট্রসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে বলেছেন যে হামাস 'কারণ ছাড়া' ইসরায়েল আক্রমণ করেনি। তার মন্তব্যে ক্ষুব্ধ ইজরায়েল। অবিলম্বে রাষ্ট্রসংঘ প্রধানের পদত্যাগ ও তার এই মন্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছে।  

যুদ্ধবিরতির জন্য রাষ্ট্র সংঘের প্রধানের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে, ইজরাইল হামাসকে ধ্বংস করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে এবং ঘোষণা করেছে যে গাজার যুদ্ধ কেবল নিজের জন্য নয় বরং 'মুক্ত বিশ্বের জন্য একটি যুদ্ধ'। আইডিএফ প্রধান হার্জি হালেভি একটি মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বলেছেন যে তার বাহিনী "আক্রমণের জন্য প্রস্তুত।" ভয়ঙ্কর এই যুদ্ধের মাঝে বাইডেন প্রশাসন মধ্যপ্রাচ্য থেকে কয়েক হাজার আমেরিকান নাগরিককে সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ইজরায়েলের বিদেশমন্ত্রী এলি কোহেন রাষ্ট্রসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ইজরায়েল-গাজা সংঘাত নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছেন, ৭ই অক্টোবর সমগ্র মুক্ত বিশ্বের জন্য একটি সতর্কবার্তা। তিনি বলেন, 'উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সতর্কবার্তা। সেদিন, হামাস এবং ইসলামিক জিহাদের ১৫০০ এরও বেশি জঙ্গি দক্ষিণ দিক থেকে  ইজরায়েলে অনুপ্রবেশ করেছিল। ১৪০০-এর বেশি নিরীহ নাগরিককে হত্যা করেছে। এই হামলায় ৪০০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।  তিনি বলেন, “এই হত্যাকাণ্ড ISIS এর চেয়েও নিষ্ঠুর-বর্বর।  

আমেরিকা মধ্যপ্রাচ্য থেকে তার কয়েক হাজার নাগরিককে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে

ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইকরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান সংঘাত বাড়তে থাকলে মধ্যপ্রাচ্য থেকে কয়েক হাজার মার্কিন নাগরিককে সরিয়ে আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে জো বাইডেন প্রশাসন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় স্থল হামলার জন্য প্রস্তুত: আইডিএফ প্রধান

দ্য জেরুজালেম পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইজরায়েলি সেনাবাহিনী মঙ্গলবার বলেছে যে দক্ষিণ সীমান্তে জড়ো হওয়া তাদের সৈন্যরা গাজায় 'স্থল হামলা চালাতে প্রস্তুত'। দক্ষিণ সীমান্তের পরিস্থিতি সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে আইডিএফ চিফ অফ স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল হার্জি হালেভি বলেছেন, 'আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা আক্রমণ করতে প্রস্তুত।' আইডিএফ প্রধান বলেন, 'প্রতিটি মিনিট কেটে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের বাহিনী শত্রুকে আরও বেশি আক্রমণ করতে প্রস্তুত হচ্ছে।'

বিদ্যুত চলে গেলে আমরা যে কোনও সময় বাচ্চাদের হারাতে পারি’ গাজা হাসপাতাল ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের মধ্যে বিশ্বের কাছে সাহায্য চেয়েছে।

ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ দিন দিন বেড়েই চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে গাজা উপত্যকায় বসবাসকারী মানুষের সমস্যা দিন দিন বাড়ছে। এরই মধ্যে গাজার একাধিক  হাসপাতাল তাদের সমস্যা সারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছে। গাজা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হাসপাতালের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে তাদের জন্য বড় সমস্যা হতে পারে। গাজা হাসপাতাল বলেছে জ্বালানি সংকটের কারণে হাসপাতালে ভর্তি শ’য়ে শ’য়ে সদ্যজাআত কয়েক মিনিটের মধ্যে মারা যেতে পারে। গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালের চিকিৎসক নাসের বুলবুল বলেছেন, "আমরা জরুরি বিভাগে অত্যাবশ্যকীয় চিকিৎসা সামগ্রী পাঠানোর জন্য সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি অন্যথায় আমরা একটি বিশাল বিপর্যয়ের মুখোমুখি হব।"

বাস্তুচ্যুত ১৪ লাখ মানুষ

এদিকে, সোমবার তৃতীয়বারের মত ত্রাণসামগ্রী নিয়ে ট্রাকের একটি কনভয় গাজায় প্রবেশ করেছে।   গাজার কর্মকর্তারা বলছেন যে বিমান হামলায় কমপক্ষে ৫ হাজারের বেশি প্যালেস্তাইনি নাগরিক নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ২০৫৫ শিশু রয়েছে এবং ১৫০০০এরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। ওসিএইচএ বলেছে যে গাজার ২৩ লক্ষ মানুষের মধ্যে ১৪ লক্ষ মানুষ  যুদ্ধে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

Israel-Palestine clash
Advertisment