Advertisment

বিজেপির বিদ্বেষমূলক পোস্টের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, সংসদীয় কমিটির প্রশ্নের মুখে ফেসবুক

'আমি অবশ্যই বিষয়টি খতিয়ে দেখব। এ বিষয়ে ফেসবুকের মতামত জানতে চাওয়া হবে।'

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে ‘বিদ্বেষ রোধ আইন’ প্রয়োগে বাধা দিয়েছিলেন এ দেশে ফেসবুকের পাবলিক পলিসি এক্সিকিউটিভ আঁখি দাস। বাণিজ্যিক কারণ বিবেচনা করেই এই বাধা দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তারপর থেকেই যুযুধান বিজেপি ও কংগ্রেসের বাকযুদ্ধ তুঙ্গে। মার্কিন সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের উপর নজর রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংসদের তথ্য-প্রযুক্তি সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান শশী থারুর। তিনি বলেছেন, 'আমি অবশ্যই বিষয়টি খতিয়ে দেখব। এ বিষয়ে ফেসবুকের মতামত জানতে চাওয়া হবে।' সূত্রের খবর যে, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে উঠে আসা বিষয়ের ব্যাখ্যা জানতে চেয়ে ফেসবুককে আজই সমন পাঠাবে।

Advertisment

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদন দাবি করা হয়, ভারতে বাণিজ্যিক ধাক্কার 'আশঙ্কা'-য় বিজেপি নেতা-নেত্রীদের বিদ্বেষ ও উস্কানিমূলক পোস্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে ‘বিদ্বেষ রোধ আইন’ প্রয়োগে বাধা দিয়েছিলেন এ দেশে ফেসবুকের পাবলিক পলিসি এক্সিকিউটিভ আঁখি দাস। প্রতিবেদনে উল্লেখ, আঁখি দাস সংস্থার কর্মীদের বলেছিলেন, বিজেপি নেতাদের লংঘনকারী হিসেবে শাস্তি দিলে ভারতে ফেসবুকের বাণিজ্যিক ক্ষতি হতে পারে।

অভিযোগ, সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হিংসায় মদত দিতে ফেসবুকে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেছিলেন তেলেঙ্গানার বিজেপি বিধায়ক টি রাজা। কিন্তু সংস্থার বর্তমান ও প্রাক্তন কর্মীদের বক্তব্য অনুযায়ী ফেসবুক ইন্ডিয়ার পাবলিক পলিসি ডিরেক্টর আঁখি দাসের হস্তক্ষেপেই ওই বিধায়কের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই বিষয়টিকে শাসক দলের প্রতি সংস্থার ‘পক্ষপাতিত্বমূলক পদক্ষেপ’ বলেই ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনকে হাতিয়ার করে কংগ্রেস। রবিবার একটি টুইটবার্তায় রাহুল বলেন, 'ভারতে ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপ নিয়ন্ত্রণ করে বিজেপি এবং আরএসএস। তাঁরা এর মাধ্যমে ভুয়ো খবর এবং বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। এমনকী এই সব করে ভোটারদের প্রভাবিত করছে। অবশেষে আমেরিকার মিডিয়া এগিয়ে এসেছে এই সত্য জানিয়েছে এবং ফেসবুকের বিষয়টিও সকলের সামনে এনেছে।'

এ সংক্রান্ত বিষয়ে সত্য উদঘাটনে যৌথ সংসদীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছে হাত শিবির। কংগ্রেস মুখপাত্র অজয় মাকেন বলেছেন, 'এবিভিপি-র জেএনিউ ইউনিটের প্রাক্তন সভানেত্রী রেশমি দাসের সঙ্গে ফেসবুর ইন্ডিয়ার পাবলিক পলিসি এক্সিকিউটিভ আঁখি দাসের কী সম্পর্ক? এটাই বিজেপির কাছে আমাদের জিজ্ঞাস্য।' এছাড়াও তিনি জানতে চান, 'ফেসবুকের কী এমন বাণিজ্যিক স্বার্থ রয়েছে যার জন্য বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে ‘বিদ্বেষ রোধ আইন’ প্রয়োগ করা যায়নি? বিজেপি-আরএসএস এর এজেন্ডা জাতি-সম্প্রদায় দ্বারা সমাজকে মেরুকৃত করা হচ্ছে। তার বদলে ফেসবুক ব্যবসায়িক লাভ পাবে। এমন কোনও চুক্তি রয়েছে কি যার জন্য এ দেশের পরিবেষ দূষিত করা হচ্ছে?' হোয়াটঅ্যাপ পে লাইসেন্সের আবেদন ও চুক্তি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মাকেন।

তবে কংগ্রেসের তোলা প্রশ্নের জবাবের জন্য এবিভিপি-র জেএনিউ ইউনিটের প্রাক্তন সভানেত্রী রেশমি দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

কংগ্রেসের তোলা অভিযোগরে জবাব দিতে গিয়ে রাহুল গান্ধীকে নিশানা করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ জানিয়েছেন, 'যে হেরো কংগ্রেস নিজেদের দলের লোকেদেরও প্রভাবিত করতে পারে না, তারাই এক জিনিস বারবার বলতে থাকে যে সারা বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ করে বিজেপি এবং আরএসএস। ভোটের আগে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা এবং ফেসবুকের সঙ্গে তথ্য ব্যবহারের জন্য প্রকাশ্যে ধরা পড়েছিলেন আপনি। আর এখন আমাদের প্রশ্ন করার হঠকারিতা আসছে?'

ফেসবুকের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ নতুন নয়। এর আগেও মার্কিং কংগ্রেস ও ভারতীয় সংসদে সংস্থাকে তলব করা হয়েছে।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে সম্পর্কে ফেসবুকের মুখপাত্র বলেন, ‘সংস্থা হিংসায় উস্কানিমূলক মন্তব্য বা বিদ্বেষ ছাড়ালে তা নিষিদ্ধ বলে গণ্য করে। কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তি বা দল নিরপেক্ষ হয়েই ফেসবুক গোটা বিশ্বজুড়ে এই কাজ করে থাকে। যদিও এ ক্ষেত্রে আরও উন্নতির জায়গা রয়েছে। নিরপেক্ষতা বজায় রেখে এই কাজ করতে প্রতিদিনের অডিট বা নজরদারি আরও তীক্ষ্ণ করতে হবে। এতে আমরা ইতিমধ্যেই জোর দিয়েছি।’

যদিও সংসদীয় এই ইস্যুতে যৌথসংসদীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি নিয়ে কংগ্রেসের অভ্যন্তরেই মতপার্থক্য রয়েছে। এক কংগ্রেস নেতার কথায়, 'যখন বিষয়টি তদন্ত করার জন্য আইটি কমিটির হাতে দায়িত্ব ও অধিকার রয়েছে তখন কেন এই মুহূর্তে জেপিসি-র দাবি করা হচ্ছে?' জেপিসি হলে তার চেয়ারম্যান শাসক দল নির্ধারাণ করবে ও রিপোর্টে তার প্রভাব থাকবে বলেই মনে করছে কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশ।

Read in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Facebook Parliament Shashi Tharoor bjp
Advertisment