আমূল পরিবর্তিত হয়েছে ভারতীয়দের জীবনযাপন পদ্ধতি। শহরের থেকে চাঙ্গা হয়েছে গ্রামীণ অর্থনীতি! গ্রামের মানুষরা শহরের লোকেদের চেয়ে অনেকটাই বেশি ব্যয় করেন। সাম্প্রতিক সমীক্ষায় উঠে এসেছে এমনই তথ্য। কোন কোন খাতে গ্রামীণ আয় ছাপিয়ে গিয়েছে শহরের অর্থনীতিকে?
গত ১০ বছরে ভারতীয়রা প্রতি মাসে কতটা এবং কোন কোন জিনিসে বেশি ব্যয় করেছেন তার সমীক্ষা সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট সামনে এসেছে। সমীক্ষায় গ্রামীণ ভারতের মাসিক খরচ সম্পর্কে চমকপ্রদ তথ্য প্রকাশ্যে। দেশের NITI আয়োগ ভারতীয়দের মাসিক মাথাপিছু ব্যয় (MPCE) এর উপর পরিচালিত সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
আগস্ট ২০২২ এবং জুলাই ২০২৩ এর মধ্যে ব্যয়ের তথ্যের উপর ভিত্তি করে একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছিল, যার ভিত্তিতে গৃহস্থালি খরচ ব্যয়ের উপর একটি সমীক্ষা (HCES) রিপোর্ট তৈরি সামনে আনা হয়েছে। রিপোর্টে দেখা গিয়েছে গ্রামীণ ভারতে লোকেরা শহুরে মানুষের তুলনায় গৃহস্থালি খাতে ব্যয়ে বেশি ব্যয় করছে। ২০১১-২০১২ সালের তুলনায় ২০২২-২০২৩ সালে ১০ বছরে ব্যয় দ্বিগুণ হয়েছে।
এনএসএসও রিপোর্টের ডেটা দেখায় যে গ্রামীণ ভারতে গড় মাসিক মাথাপিছু খরচে (এমপিসিই) শস্য-ডাল বাবদ যা খরচ করেছে তার পরিমাণ ২০২২-২০২৩ সালে ২০১১ সালের থেকে ৫২.৯শতাংশ থেকে কমে ৪৬.৪শতাংশ হয়েছে। যা ২০০৪-২০০৫ সালে ছিল ৫৩.১শতাংশ এবং ১৯৯৯-২০০০ সালে ৫৯.৪ শতাংশ ছিল। শস্য ও ডাল ছাড়া অন্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসে ব্যয়ের পরিমাণ ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫৩.৬ শতাংশ হয়েছে। ডিম, মাংস ও মাছ ক্রয়ে এই ব্যয় করা হচ্ছে।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, শহুরে ভারতে গৃহস্থালির খরচে শস্য এবং ডালের মতো খাদ্য সামগ্রীর অংশ হ্রাস পেয়েছে, তবে এই হ্রাস খুব বেশি নয়। এর পরিমাণ ছিল ২০০০ সালে ৪৮.১শতাংশ ২০০৪-২০০৫ সালে ৪০.৫ শতাংশ, ২০১১-২০১২ সালে ৪২.৬ শতাংশ। নতুন রিপোর্ট অনুসারে ২০২২-২০২৩ সালে এই পরিমাণ ৩৯.২ শতাংশ। একই সময়ে, খাদ্য সামগ্রী ব্যতীত অন্যান্য জিনিসে ব্যয় ৫৭.৪শতাংশ থেকে বেড়ে ৬০.৮শতাংশ হয়েছে। জামাকাপড়, টেলিভিশন, ফ্রিজ ও বিনোদন সামগ্রীতেও ব্যয় বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।
গ্রামে ও শহরে উভয় ক্ষেত্রেই খাদ্যের মোট খরচে শস্য ও ডালের পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে। দুধ, মাংস ও মাছে ব্যয় বেড়েছে। ফলমূল ও শাকসবজি এবং পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবারে (ভিটামিন ও খনিজ) বেশি অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। রিপোর্ট অনুসারে ২০২২-২০২৩ সালে প্রথমবারের মতো খাদ্যশস্য এবং ডালের চেয়ে ফল এবং শাকসবজিতে বেশি ব্যয় করেছে। গ্রামবাসীরা ডিম, মাছ ও মাংস কিনতে বেশি খরচ করেছে বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে শহরের মানুষরা খাবার, পানীয় এবং রান্না করা খাবারের জন্য বেশি ব্যয় করছে।