এই গল্পের শুরুটা হয়েছিল ২০০৫ সালে। সেই সময় পুনের এক ২৫ বছর বয়সি ছাত্র ইন্টারনেটে আলাপ হওয়া পাকিস্তানের এক মেয়ের সঙ্গে চ্যাট করতে শুরু করে। মেয়েটির প্রেমে পড়ে যায়। দুই বছর ধরে ইন্টারনেট চ্যাট, শত শত ফোন কল, ছেলেটির দু'বার পাকিস্তান সফর এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রেমের গভীরতা বৃদ্ধি। এই সম্পর্কের শেষ হয়েছিল ওই ছাত্র বিরাট এক গুপ্তচরবৃত্তির মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর। বিচারে ওই ছাত্রের সাত বছরের কারাদণ্ড হয়েছে।
এই গুপ্তচরবৃত্তির সময়কালে ছেলেটির সঙ্গে ওই আইএসআই এজেন্ট ছাড়াও পাকিস্তান হাইকমিশনের দুই আধিকারিকেরও পরিচয় গড়ে উঠেছিল। এই মামলায় পুনে পুলিশ বিদেশ মন্ত্রকের সাহায্য চায়। তারপর ১৬ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। আজও ওই আইএসআই এজেন্ট সালাউদ্দিন শাহ ও তাঁর মেয়ে ফতিমা শাহ ২০০৭ সালের গুপ্তচরবৃত্তির মামলার রেকর্ডে 'ওয়ান্টেড' হিসেবে নথিভুক্ত।
যে ছেলেটি এই গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে, তার নাম বিশাল। ঝাড়খণ্ডের এক মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে। ২০০৪ সালে পুনেতে গিয়েছিল লেখাপড়া করতে। গ্রেফতারের সময় সে হদপসার কলেজে লেখাপড়া করত। ২০০৫ সালে, বিশাল ইয়াহু মেসেঞ্জারের মাধ্যমে একটি মেয়ের সংস্পর্শে এসেছিল। মেয়েটি নিজেকে পাকিস্তানের করাচির বাসিন্দা ফতিমা সাল্লাহুদ্দিন শাহ বলে পরিচয় দিয়েছিল।
বিশাল সেই সময় ফতিমার সঙ্গে চ্যাট করার জন্য ইন্টারনেট ক্যাফেতে যেত। তারা প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা চ্যাট করত বলেই পুলিশ জানিয়েছে। দু'জনেই তাদের পরিবারের বিবরণ পরস্পরের কাছে শেয়ার করেছিল বলেই তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ। গোয়েন্দাদের রেকর্ড অনুযায়ী, ফতিমা জানিয়েছিলেন যে তাঁর বাবা সালাহউদ্দিন একজন অবসরপ্রাপ্ত পাকিস্তানি সেনা আধিকারিক।
আরও পড়ুন- বনেটে ঝুলে ব্যক্তি! প্রাণ বাঁচাতে চিৎকার, ছুটে চলেছে বেপোরোয়া গাড়ি, হাড়হিম ঘটনা দিল্লিতে
পুলিশ জানিয়েছে, বিশাল ওই মেয়েটির প্রেমে পড়েন। তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। তাতে ফতিমা রাজি হয়েছিলেন বলেই পুলিশ জানতে পেরেছে। তদন্তকারীদের নথি অনুযায়ী, ফতিমা সেই সময় বিশালকে একটি পাকিস্তানি সেল ফোন নম্বর দিয়েছিলেন। বিশাল এক স্থানীয় এসটিডি বুথ থেকে এই নম্বরে ফতিমাকে ফোন করেছিলেন। যার বিল হয়েছিল ১.৫ লক্ষ টাকা। যে এসটিডি বুথ থেকে বিশাল ফোন করতেন, তিনি পুলিশকে এমনটাই জানিয়েছেন। ওই এসটিডি বুথের মালিক আরও জানিয়েছেন, প্রচুর পরিমাণ বিল হওয়ার পরও বিশাল তাঁকে মাত্র ৪০,০০০ টাকা দিয়েছিলেন।