Advertisment

এয়ার ইন্ডিয়া প্রস্রাব কাণ্ড: কীভাবে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ, জানুন

তিনি যে মার্কিন সংস্থায় কাজ করতেন, ওয়েলস ফার্গো ইতিমধ্যেই তাকে ভাইস প্রেসিডেন্টের পদ থেকে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত নেয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
sankar misra, delhi police, air india

শঙ্কর মিশ্র

নিউ ইয়র্ক-দিল্লি বিমানে বৃদ্ধার গায়ে প্রস্রাবের অভিযোগে অভিযুক্ত শঙ্কর মিশ্রকে বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। শঙ্কর মিশ্রের খোঁজে একাধিক জায়গায় তলাশি চালায় দিল্লি পুলিশ। বার বার অভিযুক্ত তার অবস্থান বদল করে দিল্লি পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। দিল্লি পুলিশের একটি সূত্র দাবি করে বেঙ্গালুরুতে পৌঁছানোর পর শঙ্কর মিশ্র তার মোবাইল ফোনটি সুইচ অফ করে দেন। শেষ দেখা টাওয়ার লোকেশান ধরে বেঙ্গালুরু থেকেই তাকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ।

Advertisment

ডিসিপি (আইজিআই) রবি কুমার সিং জানিয়েছেন অভিযুক্ত শঙ্কর মিশ্রকে দিল্লিতে নিয়ে আসা হবে। এর আগে তাকে সেখানকার স্থানীয় একটি আদালতে হাজির করা হবে। তিনি জানান, দিল্লি পুলিশ শঙ্কর মিশ্রকে গ্রেফতার করতে সিট গঠন করে। দিল্লি পুলিশের অপর এক সিনিয়র আধিকারিক জানিয়েছেন যে শঙ্কর মিশ্রের সন্ধানে বেশ কয়েকটি দল মুম্বইয়ের কমলা নগরে গিয়েছিল কিন্তু সেখানে তাকে পাওয়া যায়নি। শঙ্কর মিশ্রের পরিবার তদন্তে কোনরমক সহযোগিতা করেনি। সংবাদ সংস্থা পিটিআই একটি প্রতিবেদনে দাবি করেছে যে অভিযুক্ত শঙ্কর বেশ কয়েকদিন তার বোনের বাড়িতে লুকিয়ে ছিল। এয়ার ইন্ডিয়া অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই ৩০ দিনের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

নিউ ইয়র্ক-দিল্লি বিমানে মূত্রত্যাগের ঘটনায় বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়াকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিল অসামরিক বিমান পরিবহণ সংস্থা বা ডিজিসিএ। বৃহস্পতিবার ওই নোটিসে বলা হয়েছে, বিমান সংস্থাটির আচরণ ‘অপেশাদার’। যাকে পদ্ধতিগত ব্যর্থতা বলেও মনে করছে ডিজিসিএ। গত ২৬ নভেম্বর, এয়ার ইন্ডিয়ার নিউ ইয়র্ক-দিল্লি (এআই ১০২) নম্বর বিমানে এক তথাকথিত মদ্যপ যাত্রী এক বয়স্ক মহিলার গায়ে মূত্রত্যাগ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ৪ জানুয়ারি ডিজিসিএর নজরে আসে।

এয়ার ইন্ডিয়া এই ব্যাপারে উত্তরে যা জানিয়েছে, তাতে ডিজিসিএর ধারণা হয়েছে বিমান সংস্থাটি অবাধ্য যাত্রীর ক্ষেত্রে যে বিধি রয়েছে, সেই বিধি অনুসরণ করেনি। তার ফলেই গোটা ঘটনাটি ঘটেছে। আর, তারই প্রেক্ষিতে এয়ার ইন্ডিয়ার কড়া সমালোচনা করে ডিজিসিএ বলেছে, ‘সংশ্লিষ্ট বিমান সংস্থার আচরণ অপেশাদার বলেই মনে হচ্ছে। গোটা ঘটনাটি পদ্ধতিগত ব্যর্থতার জন্যই ঘটেছে।’ বিমানে বিধি মানা নিয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার অবহেলার ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছে ডিজিসিএ। একইসঙ্গে প্রশ্ন তুলেছে, দায়িত্বে অবহেলার জন্য কেন এয়ার ইন্ডিয়ার আধিকারিক এবং বিমানসেবক বা সেবিকাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?

আরও পড়ুন: < কনকনে ঠান্ডায় জেলে কাবু আফতাব, গরম পোশাক কিনতে ডেবিট কার্ডের ‘আবদার’! >

ডিজিসিএ আরও বলেছে, ‘এয়ার ইন্ডিয়ার জবাবদিহি ব্যবস্থাপক, এয়ার ইন্ডিয়ার ইন-ফ্লাইট পরিষেবার পরিচালক, সেই ফ্লাইটের সমস্ত পাইলট এবং কেবিন ক্রু সদস্যদের কাছে কারণ দর্শানোর নোটিস জারি করা হয়েছে। কেন নিয়ন্ত্রক বিধি অবহেলার জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত নয়, সেই কারণ তাঁদের জানাতে হবে।’

এয়ার ইন্ডিয়ার এই ঘটনার তদন্তের পর দিল্লি পুলিশের মতে, যারা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছেন, সেই অভিযোগে লোকটি মাতাল হয়ে মূত্রত্যাগ করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু, বিমান সংস্থাটি তারপরও কোনও ব্যবস্থা না-নিয়েই লোকটিকে যেতে দিয়েছে। বছর ৭০-এর ওই মহিলা এরপর এয়ার ইন্ডিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরনকে চিঠি লিখে তাঁর অভিযোগ জানিয়েছেন।

সেই চিঠিতে ওই মহিলা জানিয়েছেন, এক মাতাল সহযাত্রী শরীর উন্মুক্ত করে তাঁর গায়ে মূত্রত্যাগ করে দিয়েছিলেন। তাতে তাঁর জামাকাপড়, জুতো এবং ব্যাগ ভিজে যায়। এরপর বিমানসেবিকা এসে যাচাই করে ওই আসনে মূত্রের গন্ধ পান। তিনি ওই মহিলার ব্যাগ, জুতোয় জীবাণুনাশক স্প্রে করে দেন।

শঙ্কর মিশ্র নামে ৩৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি ফ্লাইটের বিজনেস ক্লাসে মদ্যপ অবস্থায় এক মহিলা সহ-যাত্রীকে ‘প্রস্রাব’ করেন। ঘটনার প্রায় এক মাস পর এই তথ্য সামনে আসতেই তোলপাড় শুরু হয়। নির্যাতিতা মহিলার অভিযোগ, ক্রু সদস্যরা দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করেছে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরে, শঙ্কর মিশ্রকে ৩০ দিনের জন্য নো ফ্লাই লিস্টে রাখা হয় এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে একটি এফআইআরও দায়ের করা হয়। এই ঘটনার পর তিনি যে মার্কিন সংস্থায় কাজ করতেন, ওয়েলস ফার্গো ইতিমধ্যেই তাকে ভাইস প্রেসিডেন্টের পদ থেকে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। একই সময়ে তার এই কাজকে অত্যন্ত লজ্জাজনক বলে বর্ণনা করেছে সংস্থা।

bengaluru Delhi Police air india pee incident
Advertisment