কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়েই চলেছে। অভিনেতা রাহুল বোসের 'কলা কাণ্ডের' জেরে এবার চণ্ডীগড়ের জেডব্লিউ ম্যারিয়ট হোটেলকে শো-কজ নোটিশ পাঠাল এক্সাইস অ্যান্ড ট্যাক্সেশন বিভাগ। ওই হোটেলে থাকাকালীন দুটি কলার জন্য ৪৪২ টাকা ৫০ পয়সার বিল (জিএসটি সমেত) ধরিয়ে দেওয়া হয় রাহুলের হাতে। শো-কজ নোটিশের মূল বক্তব্য, কোন অধিকারে আইনত করমুক্ত কাঁচা ফলের ওপর জিএসটি বসাল ওই পাঁচতারা হোটেল।
অ্যাসিসটান্ট এক্সাইস অ্যান্ড ট্যাক্সেশন কমিশনার (এইটিসি) রাজীব চৌধুরি 'চণ্ডীগড় নিউজলাইন'-কে জানান, "আমরা শো-কজ নোটিশ দিয়ে এটাই জানতে চেয়েছি যে তাজা ফল, যা কিনা ট্যাক্স ফ্রি, তার ওপর কীভাবে ট্যাক্স বসানো হলো।" এখানে যে প্রশ্ন অনুচ্চারিত থাকছে, তা হলো এই - ওই হোটেলে কি তবে সমস্ত অতিথিকেই ফলের ওপর ট্যাক্স দিতে হয়? উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, তবে ওই ট্যাক্সের টাকা কোন খাতে জমা পড়ছে?
এই নোটিশ যে জারি হতে চলেছে, তা অবশ্য বোঝা গিয়েছিল বুধবারই। সোমবার টুইটারে একটি ভিডিও পোস্ট করে বিষয়টি জানিয়েছিলেন রাহুল। ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসেন চণ্ডীগড়ের ডেপুটি কমিশনার এবং এক্সাইস অ্যান্ড ট্য়াক্সেশন কমিশনার মণদীপ সিং ব্রার। বুধবার এই ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেন তিনি।
আরও পড়ুন: দু’টো কলার দাম দেখে চোখ কপালে উঠল রাহুল বোসের
এক্সাইস অ্যান্ড ট্য়াক্সেশন বিভাগের তিন-সদস্যের একটি দল বৃহস্পতিবারই হোটেল থেকে সংশ্লিষ্ট নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করে। এই নথিপত্র ঘেঁটে যা পাওয়া গেছে, তার ভিত্তিতেই জারি হয়েছে শো-কজ নোটিশ, যার উত্তর দেওয়ার জন্য আজ, শনিবার পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে হোটেলকে। এইটিসি রাজীব চৌধুরি জানিয়েছেন, "আমরা তাদের একটি ব্যক্তিগত শুনানির জন্যও ডেকে পাঠিয়েছি। শুনানি হবে একজন বিচার বিভাগীয় আধিকারিকের উপস্থিতিতে।"
এখন পর্যন্ত হোটেলের তরফে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয় নি, এবং যোগাযোগ করার একাধিক চেষ্টা সত্ত্বেও কোনোরকম প্রতিক্রিয়া দেন নি হোটেল কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, সরকারের কোষাগারে আদৌ হোটেলের তরফে কর জমা করা হচ্ছে কিনা, তারও তদন্ত শুরু হয়েছে। দোষ প্রমাণিত হলে হোটেলের শাস্তি হবে বলেও জানা গিয়েছে।
ওদিকে কনজিউমার প্রোটেকশন কাউন্সিল এবং জিএসটি বিশেষজ্ঞ অজয় জগগা কনজিউমার অ্যাফেয়ার্সের ডিরেক্টরকে লিখিতভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে অনুরোধ করেছেন। তাঁর চিঠিতে জগগা লিখেছেন, "বিলাসবহুল হোটেলে করমুক্ত তাজা ফলের (যা ফ্রুট প্ল্যাটার হিসেবে গণ্য) ওপর ১৮ শতাংশ জিএসটি বসানো নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্কে কনজিউমার প্রোটেকশন কাউন্সিলের নির্দেশাবলী জারি করার কথা বিবেচনা করে দেখা উচিত।"