রেডিও কলার থেকে সংকেত মিলছিল না। চিন্তায় ছিলেন মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যানের বনকর্তা ও কর্মীরা। অবশেষে মুক্ত চিতা নিরভার খোঁজ মেলায় তাঁর স্বস্তির শ্বাস ফেলেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার এই মেয়ে চিতাটিকে শেষবার দেখা গিয়েছে রবিবার সকাল ১০টায় কুনোর ধরিত রেঞ্জে। তারপরই হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন বন দফতরের লোকজন। জুলাইয়ে দুটো চিতা রেডিও কলারের কারণে গলার কাছে ঘা হয়ে মারা গিয়েছে। এরপর ওই চিতাদের ধরে তাদের রেডিও কলার খুলে ঘেরাটোপের অঞ্চলে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। কিন্তু, বাঁচানো যায়নি।
কুনোর মুখ্য বনপাল অসীম শ্রীবাস্তব বলেছেন, 'জাতীয় উদ্যানের ১৫টি চিতার (৭টি পুরুষ, ৭টি মহিলা এবং ১টি মহিলা শাবক) এখন বোমাস (ঘের)-এর মধ্যে রয়েছে। তাদের স্বাস্থ্য এখন রীতিমতো ভালো। কুনোর বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা এখন তাদের স্বাস্থ্যের ওপর লাগাতার নজরদারি চালাচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার ১১ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটিকে দায়িত্ব দিয়েছে, যারা বর্তমানে চিতাদের স্বাস্থ্যের পর্যবেক্ষণ নিয়মিত করেন। এই সব চিতারা বর্ষার গোটা মরশুমে আপাতত ঘেরাটোপেই থাকবে।'
চিতাদের নিয়ে উদ্বেগে বন্যপ্রাণী আধিকারিকদের কপালের ভাঁজ গত কয়েক মাসে কয়েকগুণ চওড়া হয়েছে। তার মধ্যেই ২ আগস্ট মহিলা চিতা ধাত্রী (তিবলিসি)-কে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। এই ব্যাপারে বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ বাড়িয়ে নিরভার রেডিও কলার কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। পরে জানা যায়, সেটা হয়েছে প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে। এরপর, বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা শেষ ফ্রি-রেঞ্জিং চিতা নিরভাকে খুঁজে বের করার জন্য ঐতিহ্যগত পদ্ধতির আশ্রয় নেন।
আরও পড়ুন- আরতির সময় ভেঙে পড়ল শিবমন্দির, অন্ততপক্ষে ২৯ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা
শ্রীবাস্তব বলেন, 'গত ২২ দিন ধরে নিরভার খোঁজ চলছিল। ২১ জুলাই তার কলার কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এরপরই নিরভার খোঁজে ব্যাপক তল্লাশি শুরু হয়।' বন্যপ্রাণী আধিকারিকরা শতাধিক বনকর্মীকে একত্রিত করেন। যাঁদের মধ্যে ছিলেন নামিবিয়ার বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে চিতা ট্র্যাকার-সহ অনেকেই। এই দল প্রতিদিন কুনোর ২০ বর্গকিলোমিটার পর্যন্ত এলাকা চষে ফেলতে শুরু করে। যাকে এককথায় চিরুনি তল্লাশি বলে। বনকর্মীদের এই দুটি দলে ছিল দুটি ড্রোন, কুকুরের দল এবং হাতিও। যারা এই চিরুনি তল্লাশিতে সাহায্য করেছে। নিরভার খোঁজ মেলায় এই দলটিও হাঁফ ছেড়ে বাঁচল।