Advertisment

১ জুন থেকে ১০০ জোড়া ট্রেন, কী হবে মেট্রোর?

এগুলি সম্পূর্ণ সংরক্ষিত ট্রেন হিসেবে চলবে এবং এসি ও ননএসি দু ধরনের কামরাই থাকবে। সাধারণ কামরাতেও কেবল বসার জন্য সংরক্ষণ করা যাবে। এই ট্রেনগুলিতে কোনও অসংরক্ষিত কামরা থাকবে না।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Lockdown Train

কেরালা থেকে বিশেষ ট্রেনে লখনউয়ের চারবাগ স্টেশনে পৌছনো বিশেষ ট্রেন

৩১ মে শেষ হচ্ছে চতুর্থ দফার লকডাউন। ১ জুন থেকে চলতে শুরু করবে হাওড়া-মুম্বই মেল, হাওড়া-যশবন্তপুর এক্সপ্রেস, দিল্লি-আলিপুরদুয়ার, ইত্যাদি ট্রেন সহ মোট ১০০ জোড়া ট্রেন।

Advertisment

করোনা অতিমারীর জেরে দেশ জোড়া চতুর্থ পর্যায়ের লকডাউন ৩১ মে শেষ হচ্ছে। কেন্দ্রের দেওয়া রোডম্যাপ সামনে রেখে রেল আগামী ১ জুন থেকে ধাপে ধাপে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু করার পরিকল্পনা করেছে। অন্যদিকে মেট্রোরেল এখনও কেন্দ্রের সবুজ সংকেত পায়নি।

একবার দেখে নেওয়া যাক রেলওয়ে পরিষেবা শুরুর ব্যাপারে কী পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

১ জুন থেকে যে ১০০ জোড়া ট্রেন যাতায়াত করবে তার মধ্যে রয়েছে ১৭টি জনশতাব্দী, ৫টি দুরন্ত ও বেশ কয়েকটি ঐতিহ্যবাহী জনপ্রিয় মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেন। এর সঙ্গে ১ মে থেকে চালু হওয়া শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন তো রয়েইছে। যেভাবে ধাপে ধাপে অন্তর্দেশীয় বিমান চলাচল শুরু হয়েছে, সেই রাস্তাতেই হাঁটতে চলেছে রেলও।

কলকাতা বিমানবন্দরে শুরু হয়ে গেল বিমান ওঠা-নামা: উড়ানযাত্রায় কী করবেন, কী করবেন না?

সূত্রের বক্তব্য অনুসারে এই পরিকল্পনার দুটি লক্ষ্য রয়েছে। প্রথম হল, যে সব পরিযায়ী শ্রমিকরা নিজের বাড়ি ফিরে গিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ইচ্ছুকরা যাতে কাজের জায়গায় যোগ দিতে পারেন - কারণ আর্থিক কাজকর্ম শুরু করার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এর সঙ্গে যাঁরা আটকে রয়েছেন এবং যাঁরা ভ্রমণে ইচ্ছুক, তাঁদের কাছেও সুযোগ খুলে দেওয়া হচ্ছে।

এই ট্রেনগুলির বুকিং ২১ মে থেকে শুরু হবে এবং ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই কেবল টিকিট কাটা যাবে। এসব ট্রেনের বুকিং করা যাবে ৩০ দিন আগে। রেল স্টেশনগুলিতে কিছুটা স্বাভাবিকতা ফেরাতে স্টেশনের ক্যান্টিন ও খাবারের স্টলগুলি খোলার নির্দেশ দিয়েছে রেল।

১ জুন থেকে যেসব ট্রেন চলবে

স্বল্পদূরত্বের ১৭টি জনশতাব্দী ট্রেন, যেগুলিতে কেবলমাত্র বসার সুবিধা রয়েছে, সেগুলি ছাড়া হাওড়া-যশবন্তপুর, শিয়ালদা-পুরী, শালিমার-পাটনা, এর্নাকুলাম-নিজামুদ্দিন এবং সেকেন্দ্রাবাদ-নিজামুদ্দিন, এই পাঁচটি দুরন্ত চলবে। এই ট্রেনগুলি দেশের দুটি টায়ার টু শহর, এবং মেট্রো ও রাজধানী শহরের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষাকারী।

এ ছাড়া যেসব দূরপাল্লার নিয়মিত মেল এক্সপ্রেস ট্রেন চলবে, তার মধ্যে রয়েছে শিবগঙ্গা, শ্রমজীবী, গোয়া এক্সপ্রেস, অন্ধ্রপ্রদেশ এক্সপ্রেস, গোল্ডেন টেম্পল মেল, কর্নাটক সম্পর্ক ক্রান্তি, হাওড়া মুম্বই মেল, আশ্রম এক্সপ্রেস, কর্মভূমি এক্সপ্রেস ইত্যাদি।

Lockdown train ট্রেনে চড়ার অপেক্ষায় পরিযায়ী মানুষরা

এগুলি সম্পূর্ণ সংরক্ষিত ট্রেন হিসেবে চলবে এবং এসি ও ননএসি দু ধরনের কামরাই থাকবে। সাধারণ কামরাতেও কেবল বসার জন্য সংরক্ষণ করা যাবে। এই ট্রেনগুলিতে কোনও অসংরক্ষিত কামরা থাকবে না। রেল জানিয়েছে, “ট্রেনের ভাড়া স্বাভাবিক থাকবে এবং জেনারেল কোচ রিজার্ভ করা হলে সেক্ষেত্রে সেকেন্ড সিটিংয়ের ভাড়া নেওয়া হবে এবং সমস্ত যাত্রীদেরই বসার ব্যবস্থা থাকবে।”

স্ক্রিনিং এবং উপসর্গবিহীন যাত্রীদেরই কেবল ট্রেনে চড়তে দেওয়ার বিধি লাগু থাকবে, এ ছাড়াও এখনকার মতই স্টেশনে পৌঁছতে হবে অন্তত ৯০ মিনিট আগে। কিছু বুকিং কাউন্টার বিশেষ পাসের জন্য খোলা হবে তবে তা সাধারণের জন্য নয়।

এই বিশেষ ট্রেনগুলিতে কেবলমাত্র চার ধরনের দিব্যাঙ্গ ও ১১ ধরনের রোগীরা কনসেশনের সুবিধা পাবেন।

Lockdown Train

publive-image

 রেলের পরবর্তী পদক্ষেপ- আরও ট্রেন, বুকিং কাউন্টার খোলা

১ জুন থেকে ১০০ জোড়া ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা লাগু করার কিছুদিনের মধ্যেই সমসংখ্যক ট্রেন চালানো হবে। শ্রমিক স্পেশালের জন্য এখন বিশাল সংখ্যক নন এসি কামরা ব্যবহৃত হচ্ছে এবং ১০০ জোড়া ট্রেনেও বহু সংখ্যক কামরা লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে, পরের ধাপে যেসব ট্রেন চালু হবে সেগুলি এসি পরিষেবা যুক্ত হবে।

মোট ১২০০ জোড়া নিয়মিত মেল এক্সপ্রেস ট্রেন চালানো বাকি।

গত সপ্তাহে ঠিক করা হয়েছিল সারা দেশে ধাপে ধাপে টিকিট কাউন্টার খোলা হবে যাতে অফলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু করা যায়।

রেলমন্ত্রী পীযুষ গোয়েল বলেন, “আমাদের ভারতকে স্বাভাবিকত্বের পথে নিয়ে যেতে হবে। আমার একটা প্রটোকল তৈরি করছি যার মাধ্যমে কোন স্টেশনে টিকিট কাউন্টার খোলা যায় তা নির্ণীত হবে। আমাদের দেখতে হবে যাতে টিকিট কাউন্টারে অনেকে জমায়েত না হন, ফলে আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে প্রটোকল তৈরি করছি।”

বিজেপির মুখপাত্র সম্বিৎ পাত্রর সঙ্গে এক আলোচনায় তিনি বলেন, “আমরা শীঘ্রই আরও ট্রেন চালু করব।”

 মেট্রো রেল পরিষেবা চালুর কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে?

দেশের রাজধানীর কথা যদি ধরা হয়, দিল্লি মেট্রো কর্তৃপক্ষ কর্মীদের জানিয়ে দিয়েছে ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার নোটিসে পরিষেবা চালু হতে পারেষ সূত্র জানাচ্ছে পরিষেবা শুরুর জন্য সমস্ত কর্মিবর্গকে কাজে লাগানো হবে, তাতে স্টেশন কন্ট্রোলার থেকে হাউসকিপিং কর্মীরাও থাকবেন। মঙ্গলবার থেকে এই কাজ শুরু হওয়ার কথা।

দিল্লি মেট্রো জানিয়েছে, তারা স্টেশনের গেটে যাত্রীদের থার্মাল স্ক্যানিংয়ের ব্যবস্থা করবে। অতি প্রয়োজনীয় ক্ষেত্র ছাড়া নগদ লেনদেনে নিরুৎসাহ করার জন্য ক্যাশ ভেন্ডিং মেশিনগুলিও চালু করা হবে না। স্টেশন সাফাইয়ের কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে।

যদিও বর্তমানে মেট্রো পরিষেবা কেন্দ্রের নিষিদ্ধি তালিকায় রয়েছে, কেন্দ্র ইতিমধ্যেই সারা দেশের মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রটোকল শেয়ার করেছে এতে জানানো হয়েছে, প্রতিটি স্টেশনে ট্রেন ৩০ সেকেন্ড বেশি সময় ধরে দাঁড়াবে, যাতে যাত্রীদের ওঠা-নামার জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যায়। ‘এই সিটে বসবেন না’- স্টিকার লাগানোর মাধ্যমে ট্রেনের মধ্যেও একটি আসন অন্তর বসার ব্যবস্থা থাকবে। যাঁরা দাঁড়িয়ে যাতায়াত করবেন, তাঁরাও নিজেদের মধ্যে এক মিটারের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখবেন বলেই আশা করা হচ্ছে।

প্রটোকলে কেবলমাত্র উপসর্গবিহীনদের স্টেশনের ভিতরে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, এবং কিউআর কোড সমৃদ্ধ টিকিট আরোগ্য সেতু অ্যাপের সঙ্গে লিংক করা থাকবে, য়াতে কেবলমাত্র নিরাপদ যাত্রীরাই স্টেশনে প্রবেশ করতে পারেন। মেট্রো কর্তৃপক্ষকেও সব যাত্রীর আরোগ্য সেতু অ্যাপ বাধ্যতামূলক করার কথা বলা হয়েছে।

চেন্নাই মেট্রো কর্তৃপক্ষ ও কোচি মেট্রো কর্তৃপক্ষও কেন্দ্রের সম্মতি পেলেই ট্রেন চালাতে প্রস্তুত বলে জানিয়ে দিয়েছে।

বেঙ্গালোর মেট্রো রেল কর্পোরেশনও রাজ্য সরকারের অনুমতির অপেক্ষা করছে। এক আধিকারকের বক্তব্য অনুসারে, ৩৩ শতাংশ যাত্রী নিয়ে ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা চলছে। ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, যাত্রীদের সোশাল ডিসট্যান্সিং, মাস্ক পরা ও সামূহিক জীবাণুনাশকতার কাজ আমাদের এখনকার প্রাথমিক লক্ষ্য। তবে তারা এখনও মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের আহ্বানের অপেক্ষায়।

indian railway kolkata metro east-west metro Lockdown
Advertisment