ব্রিটেন শতাধিক কোম্পানি সপ্তাহে চার দিনের কাজের চুক্তিতে স্বাক্ষর করল। গোটা বিশ্বে যখন কাজের বাজার টালমাটাল, সেই সময় কোম্পানিগুলোর এই নতুন নীতি রীতিমতো 'পরিবর্তনমূলক' হিসেবে তারিফ পাচ্ছে। কারণ, ব্রিটেনের একশো কোম্পানি স্থায়ীভাবে সপ্তাহে চার দিনের কাজের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। সংস্থাগুলোর এই নতুন নীতিতে কর্মীদের বেতনের ওপর কোনও প্রভাব পড়বে না। আর, এই নীতির জেরে হাজার হাজার কর্মী উপকৃতও হবেন।
এই ব্যাপারে কর্মী ইউনিয়নগুলোর বক্তব্য ছিল, সপ্তাহে পাঁচ দিন কাজ পুরোনো অর্থনৈতিক আমল থেকেই রীতিমতো যন্ত্রণাদায়ক। ইউনিয়নগুলো যুক্তি দেয়, 'সপ্তাহে চার দিনের কাজের ফলে সংস্থাগুলোর উৎপাদনশীলতা উন্নত হবে। মানে, কোম্পানিগুলো অল্পসময়ে বেশি ও ভালো কাজ করাতে পারবে।' আর, কর্মী ইউনিয়নগুলোর এই বক্তব্যে সায় মেলান বিভিন্ন সংস্থার বেশ কয়েকজন কর্তাও। তাঁরা কর্মীদের সপ্তাহে চার দিনের কাজের নীতিতে রাজি হয়ে যান।
গ্লোবাল মার্কেটিং কোম্পানি অ্যাউইন এবং অ্যাটম ব্যাংকের মত বড় কোম্পানিগুলো সপ্তাহের চার দিনের কাজের নীতিতে স্বাক্ষর করে। তারা জানিয়ে দেয়, কর্মীদের বেশি দিন কাজ করতে বাধ্য করার পরিবর্তে কম ঘণ্টায় কাজ করাতে রাজি। আউইনের প্রধান কার্যনির্বাহী আধিকারিক অ্যাডাম রস জানিয়েছেন, সপ্তাহে চার দিন কাজের নীতি তাঁদের সংস্থার ইতিহাসে 'সবচেয়ে রূপান্তরমূলক উদ্যোগগুলির একটি।' অ্যাডাম রস বলেন, 'গত দেড় বছরে আমরা শুধু কর্মচারীদের সুস্থতা এবং সুস্থতার ক্ষেত্রে অসাধারণ বৃদ্ধিই দেখিনি। একইসঙ্গে আমাদের গ্রাহক সেবা এবং সম্পর্ক, সেইসাথে প্রতিভা এবং সম্পর্ক ধরে রাখার ক্ষেত্রও উপকৃত হয়েছে।'
আরও পড়ুন- ভারতে এসে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’কে তুলোধনা ইজরায়েলি জুরি প্রধানের, কী বলেছেন?
বেশ কিছুদিন ধরেই ব্রিটেনে সপ্তাহে চার দিন কাজের পক্ষে কর্মী সংগঠনগুলো প্রচার চালাচ্ছিল। এর পাইলট প্রকল্পে ৭০টি সংস্থা যুক্ত হয়েছিল। পাশাপাশি কেমব্রিজ, অক্সফোর্ড এবং বস্টন কলেজের মত বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক এবং থিংক ট্যাংকরাও এই প্রচারে যুক্ত হয়েছিলেন। তারা বিষয়টি নিয়ে সমীক্ষাও চালিয়েছেন।
পরীক্ষামূলকভাবে এই নীতি প্রয়োগের চেষ্টা চলাকালীন ৮৮ শতাংশ সংস্থাই জানিয়ে দেয়, চার দিন কাজের সপ্তাহ বেশ ভালো ব্যাপার। কাজ খুব ভালো হচ্ছে। উৎপাদনশীলতার গুণমানও বেড়েছে। আর, তাতেই অন্যান্য কোম্পানিগুলোর ভয় দূর হয়েছে। তারাও সপ্তাহে চার দিন কর্মদিবসের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।
Read full story in English