সম্পত্তি নিজামেরই, পাকিস্তানের নয়, দেশভাগের ৭০ বছর পর রায় ব্রিটিশ আদালতের

দেশভাগের ঠিক পরেই, ১৯৪৮ সালে হায়দরাবাদের তৎকালীন নিজাম ওসমান আলি খান ব্রিটেনে মোতায়েন পাকিস্তানের হাই কমিশনারের কাছে গচ্ছিত রাখেন ১ কোটি ৭ হাজার ৯৪০ পাউন্ড এবং ৯ শিলিং।

দেশভাগের ঠিক পরেই, ১৯৪৮ সালে হায়দরাবাদের তৎকালীন নিজাম ওসমান আলি খান ব্রিটেনে মোতায়েন পাকিস্তানের হাই কমিশনারের কাছে গচ্ছিত রাখেন ১ কোটি ৭ হাজার ৯৪০ পাউন্ড এবং ৯ শিলিং।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
nizam hyderabad pakistan india case

হায়দরাবাদের সপ্তম নিজাম, মির ওসমান আলি খান

অবশেষে মিটল ৭০ বছর ধরে চলা আইনি বিবাদ, যার কেন্দ্রে রয়েছে ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় হায়দরাবাদের নিজামের নিজস্ব ৩৫ মিলিয়ন পাউন্ডের সম্পত্তি। বুধবার ব্রিটেনের হাইকোর্ট রায় দিয়েছে, পাকিস্তানের এই সম্পত্তির ওপর কোনোরকম অধিকার নেই, এটির সম্পূর্ণ মালিকানা ওসমান আলি খানের বংশধরদের।

Advertisment

কোথায় এই বিবাদের উৎপত্তি? দেশভাগের ঠিক পরেই, ১৯৪৮ সালে হায়দরাবাদের তৎকালীন নিজাম ওসমান আলি খান ব্রিটেনে মোতায়েন পাকিস্তানের হাই কমিশনারের কাছে গচ্ছিত রাখেন ১ কোটি ৭ হাজার ৯৪০ পাউন্ড এবং ৯ শিলিং। সেই অর্থ এতদিনে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ মিলিয়ন পাউন্ডে, এবং নিজামের দুই উত্তরসূরি - যুবরাজ মুকররম জাহ, যিনি নামে হায়দরাবাদের অষ্টম নিজাম, এবং তাঁর ছোট ভাই মুফাখম জাহ - যাঁরা ভারতের সঙ্গে হাত মেলান, দাবি করেন যে এই সম্পত্তি তাঁদের। পাল্টা দাবি জানিয়ে পাকিস্তান বলে, ন্যায়ত এই সম্পত্তি তাদের হওয়া উচিত। বর্তমানে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ রক্ষিত আছে লন্ডনের ন্যাশনাল ওয়েস্টমিনস্টার ব্যাঙ্কে।

লন্ডনের রয়্যাল কোর্টস অফ জাস্টিসে তাঁর রায়দান পর্বে বিচারপতি মার্কাস স্মিথ বলেন, "এই ফান্ডের ন্যায্য অধিকারি সপ্তম নিজাম, এবং তাঁর তরফে যাঁরা দাবি জানাচ্ছেন - দুই যুবরাজ এবং ভারত - তাঁদের অধিকার রয়েছে এই ফান্ড গ্রহণ করার।"

Advertisment

এর আগে ১৯৫০-এর দশকেও বিতর্ক তৈরি হয় এই সম্পত্তি ঘিরে। সেসময় পাকিস্তান রাষ্ট্রীয় অনাক্রম্যতা (immunity) প্রয়োগ করায় সম্পত্তির ওপর সপ্তম নিজামের দাবির বিষয়টি মুলতুবি রাখে ব্রিটেনের হাউস অফ লর্ডস। কিন্তু ২০১৩ সালে সার্বভৌম অনাক্রম্যতা বাতিল করে এই অর্থের ওপর দাবি জানিয়ে নিজেরাই ফের বর্তমান মামলাটি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার রাস্তা সাফ করে দেয় পাকিস্তান।

অষ্টম নিজামের তরফে মামলা লড়ছে যে সংস্থা, সেই উইদার্সের অংশীদার পল হেউইট সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে জানিয়েছেন, "বিচারপতি স্মিথের রায়ে জটিল কিছু ঐতিহাসিক এবং আইনি বিষয় জড়িত রয়েছে, কারণ ৭০ বছরের পুরোনো তথ্য এবং ঘটনার ভিত্তিতে প্রমাণ করা হয়েছে যে এই অর্থ আমাদের মক্কেলের পিতামহ অর্থাৎ সপ্তম নিজামের তরফে একটি ট্রাস্ট হিসেবে গচ্ছিত ছিল। এই রায়ে আদালত কর্তৃক বলবৎযোগ্য বিষয় নিয়েও কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিশা পাওয়া গিয়েছে...এবং কোনও দেশের পক্ষে ট্রাস্টি হওয়া সম্ভব কিনা, সেই বিষয়েও।"

বুধবারের রায় নিয়ে পাকিস্তানের বিদেশ দফতর জানিয়েছে, রায়ের বিশদ বিবরণ জানার পর পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে তারা। তবে দফতরের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে "হায়দরাবাদকে ভারত অবৈধভাবে অধিকার করার" বিষয়টি স্থান পায় নি এই রায়ে।

Read the full story in English