নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে তোলপাড় দেশ। এমতাবস্থায় সেই আইনকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হয়েছে পিনারাই বিজয়নের কেরালা সরকার। পিনারাই বিজয়নের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই এবার ক্ষোভ উগরে দিলেন সে রাজ্যের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান। তাঁর অনুমোদন না নিয়েই নাগরিকত্ব সংশোধন আইন বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে সরব হওয়ায় কেরালা সরকারের তীব্র নিন্দা করেন আরিফ মহম্মদ খান।
গোটা ঘটনাটিকে “রীতি ও সৌজন্যে লঙ্ঘন” বলে অভিহিত করেছেন কেরালার রাজ্যপাল। এমনকী এই ঘটনাটি “সংবাদপত্রের মাধ্যমে” জানতে পেরে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন তিনি। আরিফ মহম্মদ খানকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা এএনআই জানায়, "সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার বিষয়ে আমার কোনও সমস্যা নেই। তবে আগে আমাকে জানিয়ে দেওয়া উচিত ছিল। আমি সাংবিধানিক প্রধান। অথচ সংবাদপত্রের মাধ্যমে আমাকে এই ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হতে হল। স্পষ্টতই বলে রাখছি, আমি কোনও রবার স্ট্যাম্প নই।"
আরও পড়ুন: জেএনইউ-এর পর বিশ্বভারতী! রাতের অন্ধকারে ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ুয়াদের মারধর, অভিযুক্ত সেই এবিভিপি
প্রসঙ্গত, নয়া নাগরিকত্ব আইন বাতিল করার দাবিতে কেরালাই প্রথম রাজ্য হিসাবে ধর্মনিরপেক্ষতার সপক্ষে থেকে রাজ্যে এনআরসি কার্যকর করতে অস্বীকার করে দেশের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। সেই প্রসঙ্গেই রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান বলেন, "রাজ্যপালের অনুমোদন ছাড়াই রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে কি না তা আমি খতিয়ে দেখব। অনুমোদন না নিলেও একবার অন্তত আমাকে জানাতে পারত।" যদিও নয়া নাগরিকত্ব আইন প্রসঙ্গে একাধিকবার নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন তিনি। এরপর গত মাসেই কন্নৌরে ভারতীয় ইতিহাস কংগ্রেসের উদ্বোধনে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন কেরালার রাজ্যপাল। সেদিনের সেই ঘটনায় রাজ্যপালের মন্তব্যের বিরোধিতা করেন ভারতীয় ইতিহাস কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি ইরফান হাবিব। পরবর্তীতে তা নিয়ে সরবও হন রাজ্যপাল। টুইটে তিনি লেখেন, "মঞ্চে উঠে মৌলানা আব্দুল কালাম আজাদকে উদ্ধৃত করে রাজ্যপালের অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলে অনুষ্ঠানে বিঘ্ন ঘটান ইরফান হাবিব। এমনকী রাজ্যপালের সুরক্ষাবাহিনীর সঙ্গেও বিরূপ আচরণ করেছেন তিনি।"
আরও পড়ুন: মোদীকে কটাক্ষ করে দেওয়াল লিখন, দুদিনের জন্য বন্ধ কলেজ
এদিকে আদালতে সংবিধানের ১৩১ নং অনুচ্ছেদের অধীনে একটি আবেদন দাখিল করে কেরালা সরকার দাবি করেছে, এই আইন অসাংবিধানিক ঘোষিত হোক, কারণ এটি সংবিধানের ১৪ (আইনের চোখে সমতা), ২১ (জীবন এবং ব্যক্তিস্বাধীনতার সুরক্ষা) এবং ২৫ (বিবেকের স্বাধীনতা এবং ধর্মের অবাধ অনুসরণ ও প্রচার) নং অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। কেরালার পাশাপাশি এবার ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টার (এনপিআর)-এর বিষয়েও 'সরকারিভাবে' অসম্মতি জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গও। কেরালা এবং বাংলা এই দুই রাজ্যের আঞ্চলিক আদমসুমারি অফিসের থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে আরজিআই-কে।
Read the story in English