সার্জিকাল স্ট্রাইক করে পাকিস্তানের একাধিক জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করল ভারতীয় বায়ুসেনা। মঙ্গলবার ভোরে ভারতীয় বায়ুসেনার ১২টি ‘মিরাজ ২০০০’ বিমান পাক অধিকৃত কাশ্মীরের একাধিক জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করে। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে সেই খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসতে থাকে প্রতিক্রিয়া। কার্গিল যুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনা প্রধানের দায়িত্বে থাকা চিফ মার্শাল এওয়াই টিপনিস ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানালেন, "দারুণ খবর। খুব সুপরিকল্পিত অভিযান। ভারতের সহ্যের একটা সীমা রয়েছে। দ্ব্যর্থহীন ভাষায় উপযুক্ত জবাব দিতে পেরেছে দেশ। শোনা যাচ্ছে ১২টি যুদ্ধবিমান ৪টি আলাদা ঘাঁটিতে অভিযান চালিয়েছে। যদি সত্যি হয়, সেটা নিঃসন্দেহে অভাবনীয় একটা ঘটনা। এ থেকে স্পষ্ট, পাকিস্তান যা করেছে, আমরা তার ভিত্তিতে শুধু প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছি না, কিছু করেও দেখাচ্ছি।
টিপনিস জানালেন, "পাকিস্তান যদিও ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদকেই বরাবর হাতিয়ার করে তোলে, ভারত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন না করেই অভিযান চালিয়েছে"।
আরও পড়ুন, নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে পাকিস্তানে একাধিক জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করল ভারত
সংবাদসংস্থা এএনআই জানিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ১২ টি মিরেজ-২০০০ (যুদ্ধবিমান) ১০০০ কেজির বোমা ফেলেছে। নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকেছে ভারতীয় যুদ্ধ বিমান, এমন দাবিই করেন পাক সেনার মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গাফুর। পাক সেনার মুখপাত্রের দাবি, মুজফ্ফরাবাদ থেকে ভারতীয় যুদ্ধ বিমান নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে “অবৈধভাবে প্রবেশ করে” পাক অধিকৃত কাশ্মীরের আকাশে। ভারতীয় বিমানটি থেকে বালাকোটের কাছে বিস্ফোরক নিক্ষেপ করা হয়েছে বলেও দাবি করেছেন গাফুর। টুইট করে পাক সেনার মুখপাত্র আরও জানিয়েছেন “সঠিক সময়ে উপযুক্ত জবাব দিয়েছে পাক বায়ুসেনাও। কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয় নি।” পাক সেনার প্রত্যুত্তরের পরই ভারতীয় বিমানটি ফিরে যায় বলেও দাবি করা হয়।
পাক আকাশে ভারতীয় বায়ুসেনার সার্জিকাল স্ট্রাইকের কথা ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত। এদিন টুইট করে এ খবর নিশ্চিত করেছেন শেখাওয়াত।
ভারতের সার্জিকাল স্ট্রাইকের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের নানা রাজনৈতিক মহল থেকেই প্রতিক্রিয়া এসেছে।
টুইটারে ভারতীয় বায়ুসেনাকে ‘স্যালুট’ জানিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলটদের স্যালুট জানিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও। ভারতীয় বায়ুসেনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
উল্লেখ্য, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী গাড়িবোমা বিস্ফোরণ ঘটে। এর ফলে ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান নিহত হন। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে জইশ-ই-মহম্মদ। হামলার পর একটি ভিডিও বার্তায় জইশের তরফে দাবি করা হয়, আদিল আহমেদ দার নামে এক জইশ জঙ্গি এই হামলা চালায়।
Read the full story in English