পাকিস্তানি ফাইটার জেটকে তাড়া করে প্রতিবেশী দেশের বায়ুসীমায় ঢুকে পড়েছিলেন ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। গুলি করে নামান পাক যুদ্ধবিমানকে। এরপর পাল্টা পাক সেনার গুলিতে তাঁর মিগ-২১ ফাইটার জেটকে নামানো হয়েছিল। কোনওরকমে প্রাণে বাঁচলেও পাক সেনার হেফাজতে তিন দিন ছিলেন অভিনন্দন। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সেই দুর্ধর্ষ কাণ্ড আজও সবার স্মৃতিতে টাটকা।
সেদিন তাঁর সাহসিকতা দেখে গর্বে মাথা উঁচু হয়ে যায় ভারতবর্ষের। শুধু ভারতবাসীই নন, গোটা বিশ্ব তাঁর সাহসিকতাকে কুর্নিশ জানায়। সেই অভিনন্দন বর্তমান সেদিনের বাহাদুরির পুরস্কার স্বরূপ দুবছর পর পদোন্নতি পাচ্ছেন। উইং কম্যান্ডার থেকে এবার ক্যাপ্টেন করা হচ্ছে তাঁকে। সব কিছু ঠিক থাকলে কিছু দিনের মধ্যেই তিনি ক্যাপ্টেন হচ্ছেন। তার আগে ক্যাপ্টেন পদ খালি হতে হবে, তবেই তিনি নতুন ব়্যাঙ্ক পাবেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পর ফেব্রুয়ারি মাসে বালাকোটে জঙ্গি লঞ্চপ্যাডে এয়ারস্ট্রাইক করে ভারতীয় বায়ুসেনা। প্রত্যাঘাত করতে পাকিস্তানি এফ-১৬ ফাইটার জেট ভারতীয় ভূখণ্ডে হামলা চালাতে আসে। সেই সময় উইং কম্যান্ডার অভিনন্দর তাঁর মিগ-২১ যুদ্ধবিমান নিয়ে পাক জেটগুলিকে তাড়া করেন। একটি জেটকে গুলি করে নীচে নামান তিনি। কিন্তু কোনওভাবে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ঢুকে পড়েন বর্তমান।
এরপর তাঁর মিগ গুলি করে নামায় পাক সেনা। কোনওভাবে বেঁচে যান অভিনন্দন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে ধরে ফেলে মারধর করে পাক সেনার হাতে তুলে দেয়। এরপর পাক হেফাজতে তিন দিন ছিলেন তিনি। সেইসময় ইন্দো-পাক যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয় অভিনন্দনকে আটকে রাখার জন্য। আন্তর্জাতিক চাপ আসতে শুরু করে পাকিস্তানের উপর। যুদ্ধ এড়াতে ইমরান খান সরকার অভিনন্দনকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
আরও পড়ুন সেনা দেশের ‘সুরক্ষা-কবচ’, জওয়ানদের দীপাবলির শুভেচ্ছা জানিয়ে বললেন প্রধানমন্ত্রী
১ মার্চ রাতে অভিনন্দনকে ছেড়ে দেয় পাকিস্তান। ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত পার করে গটগট করে হেঁটে ভারতীয় ভূখণ্ডে পা রাখেন তিনি। পাক সেনার অত্যাচার, লাগাতার জেরা সত্ত্বেও মাথা নত করেননি অভিনন্দন। কোনও কথা তাঁর মুখ থেকে বের করতে পারেনি পাক সেনা। তাঁর অকুতোভয় মেজাজে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ভিডিও ভাইরাল হয়। সেই বছরই পরে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান বীর চক্র দিয়ে ভূষিত করা হয় অভিনন্দনকে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন