ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরি থেকে অস্ত্র পাচারের অভিযোগে ৬ জনকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশের এসটিএফ। ধৃতদের মধ্যে ২ জন ওই রাইফেল ফ্যাক্টরিই কর্মী বলে জানা গেছে। এই চক্র কারখানা থেকে অস্ত্র নিয়ে তা বেআইনি ভাবে বিক্রি করতেন বলে অভিযোগ। ওই অস্ত্র বিহারে মাওবাদী ও দুষ্কৃতীদের কাছে বিক্রি করা হত বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। ডিসি, এসটিএফ মুরলীধর শর্মা জানিয়েছেন যে, ধৃত ৬ জনের মধ্যে ২ জন বিহারের বাসিন্দা। বাকিরা কলকাতার বাসিন্দা বলে জানিয়েছেন তিনি।
ধৃতদের মধ্যে ৫১ বছর বয়সী সুশান্ত বসু ও ৪৮ বছর বয়সী সুখদা মুর্মু ওরফে মুনমুন ওই কারখানার জুনিয়র কর্মচারী হিসেবে কাজ করত বলে জানা গেছে। সুশান্ত, সুখদার মতোই আরও ২ ধৃত উমেশ রায় ওরফে ভোলা রায় ও কার্তিক ইছাপুরের বাসিন্দা। অপর ২ ধৃত অজয় কুমার পাণ্ডে ওরফে গুড্ডু পণ্ডিত ও জয়শংকর পাণ্ডে বিহারের বাসিন্দা। সোমবার উমেশ, কার্তিক, অজয়, জয়শংকরকে বাবুঘাট থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে নিজেদের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে সুশান্ত ও সুখদাকে।
আরও পড়ুন, পচা মাংসকাণ্ডে জালে আরও ২, এন্টালি থেকে আটক করল কলকাতা পুলিশ
ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪১৩, ১২০ বি ধারা ও অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। ধৃতদের থেকে ৭টি রিভলভার, ১টি কার্বাইন ও ১০ রাউন্ড গুলি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কারখানার স্ক্র্যাপ ইউনিট থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করা হত। পরে তা বিহারে পাঠানো হত। সেখানে মাওবাদী ও দুষ্কৃতীদের কাছে ওই অস্ত্রশস্ত্র বিক্রি করা হত। কারখানা থেকে অস্ত্র পাচারের জন্য উমেশ ও কার্তিককে কারখানার দুই কর্মী সুখদা ও সুশান্ত কাজে লাগাত বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। কারখানার পাঁচিল টপকে স্ক্র্যাপ ইউনিটে ঢুকত উমেশ ও কার্তিক। কারখানার ওই দুই কর্মীর সাহায্যে নিরাপদে অস্ত্র নিয়ে পালাত ওই দু’জন। এজন্য উমেশ ও কার্তিকের থেকে কারখানার ২ কর্মী কমপক্ষে ৫ হাজার টাকা পেত। এসটিএফ সূত্র মারফত এমনটাই জানা গেছে। ২০০৮ সাল থেকে রাইফেল ফ্যাক্টরির অস্ত্র পাচার কান্ডে অজয় জড়িত বলে জানিয়েছেন এসটিএফের এক কর্মী।
আরও পড়ুন, ভাগাড়ে পচা মাংসকাণ্ডে গ্রেফতার আরও ১, ধৃত বেড়ে ১১
কারখানার স্ক্র্যাপ ইউনিটে নিরাপত্তা সেভাবে ছিল না বলে দাবি করেছে কলকাতা পুলিশ। নিরাপত্তা নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হবে বলে কলকাতা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
অন্যদিকে অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের পিআরও উদ্দীপন মুখোপাধ্যায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন যে, কলকাতা পুলিশর সঙ্গে তাঁদের নিরাপত্তা আধিকারিক যোগাযোগ করেছিলেন। এ ঘটনা সম্পর্কে তখনই জানা যায়। এসটিএফের ডেপুটি কমিশনারের সঙ্গে এ নিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত কথা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন পিআরও। তিনি জানান যে, ডিসি বলেছেন, এ ব্যাপারে অফিসিয়াল তথ্য তাঁদের পাঠানো হবে।
আরও পড়ুন, জালনোট চক্রে ধৃত ব্যক্তি তাঁদের দলের কেউ নন, দাবি সিপিআই(এমএল) রেডস্টারের
এ ঘটনায় কারখানার ২ কর্মী জড়িত থাকার প্রসঙ্গে উদ্দীপন মুখোপাধ্যায় বলেন যে, ওই দুজন কারখানার বেতুনভুক্ত কর্মচারী। তাঁরা জুনিয়র ওয়ার্কস ম্যানেজারের পদে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। পিআরও বলেন যে, তাঁদের কারখানায় নিরাপত্তা প্রোটোকল রয়েছে। কারখানার নিরাপত্তার জন্য ১ কোম্পানি সেনা রয়েছে বলে জানান তিনি। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।