স্বাধীনতা দিবসের দিনই ক্লিনিকাল ট্রায়াল পর্ব মিটিয়ে ভারতের বাজারে আসবে 'কোভ্যাকসিন', ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর সেই বিবৃতিতে শোরগোল উঠেছিল বিজ্ঞানী মহলে। যে ওষুধের ক্লিনিকাল ট্রায়ালই শুরু হয়নি তা দেড় মাসের মধ্যে কার্যকারীতা প্রমাণ করবে কি করে? এরকম একাধিক প্রশ্নবাণে বিদ্ধ হতে হল আইসিএমআরকে। দেশজুড়ে চাপের মুখে নিজেদের অবস্থান এবং প্রকাশিত চিঠির ব্যাখায় তারা জানায়, লাল ফিতের জট এড়াতেই ওই পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল্। তবে দ্রুত কাজ করা হলেও মানুষের প্রাণের কোনও ঝুঁকি নিয়ে কাজ তারা করবেন না।
প্রসঙ্গত, ভারত বায়োটেক সংস্থার সঙ্গে একজোট হয়ে করোনা টিকা তৈরির ক্লিনিকাল ট্রায়াল শুরু করার পথে হেঁটেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ আইসিএমআর৷ কিন্তু আইসিএমআর-এর ডিরেক্টর জেনারেল বলরাম ভার্গবের পাঠানো ২ জুলাই-এর চিঠি এবং 'অবাস্তব সময়সীমা' নিয়ে কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছেন আধিকারিকরা। কোভ্যাকসিনেত ট্রায়ালের জন্য দেশের ১২টি হাসপাতালকে বেছে নেওয়া হয়েছে এবং তাদের সকলেই সেই চিঠি পাঠান হয়। দ্য সানডে এক্সপ্রেস জানতে পারে যে প্রাথমিকভাবে যারা এই ক্লিনিকাল ট্রায়াল নিয়ে তদন্তের নেতৃত্ব দেবেন হাসপাতালগুলিতে তাঁদের সঙ্গে শনিবার একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে বসার কথা ছিল আইসিএমআর এবং ভারত বায়োটেকের। কিন্তু সে বৈঠক স্থগিত হয়ে যায়।
আরও পড়ুন, ১৫ অগাস্ট থেকে ভারতে মিলবে ‘কোভ্যাক্সিন’, আইসিএমআরের তথ্য ‘অবাস্তব’ জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা
২ জুলাই বলরাম ভার্গবের পাঠান চিঠিতে হাসপাতালগুলির উদ্দেশে বলা হয়, "সমস্ত ক্লিনিকাল ট্রায়াল শেষ করে ১৫ অগাস্টের মধ্যে জনস্বাস্থ্যর দিক মাথায় রেখে ভ্যাকসিন চালু করার বিষয়ে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ক্লিনিকাল ট্রায়াল শুরু করার সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্ত অনুমোদনের প্রক্রিয়া শুরু করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। জুলাই মাসের ৭ তারিখের মধ্যে যেন বিষয়টিকে তালিকাভুক্ত করা যায় তা নিশ্চিত করুন।" কিন্তু এই চিঠি প্রকাশ্য আসার পর থেকেই দেশব্যাপী আলোড়ন শুরু হয়। এইমস-এর ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়া ১৫ অগাস্টের সময়সীমাকে "খুব চ্যালেঞ্জিং এবং কষ্টসাধ্য কাজ" আখ্যা দেন।
আরও পড়ুন,করোনা পরীক্ষায় নয়া দিশা দেখালেন ভারতীয় বিজ্ঞানী
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-এর প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন এটা নির্দিষ্ট করে দেন যে, "আইসিএমআর এবং ভারত বায়োটেক কিন্তু এখনও ফেজ ওয়ানের ট্রায়ালই শুরু করেনি"। দ্য ওয়ার পত্রিকার একটি সাক্ষাৎকারে হু-র বিজ্ঞানী বলেন, "১৫ অগাস্টে মানবশরীরে এই ভ্যাকসিন দেওয়া যাবেই না। অবশ্যই এই বিষয়ে যে বৈজ্ঞানিকসম্মত নির্দেশিকা আছে তা পালন করতেই হবে। মানতে হবে এথিক্স। কতখানি কঠোর প্রক্রিয়া অবলম্বন করে এই ভ্যাকসিন তৈরি করতে হয় তা মানুষের জানা প্রয়োজন। ফেজ থ্রি প্রক্রিয়া শেষ করতেই কয়েক বছর সময় লাগতে পারে।"
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন