নিজ্জর হত্যা নিয়ে ফের বোমা ফাটালেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ভারতের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে আনলেন এই মারাত্মক অভিযোগ। খালিস্তানি সন্ত্রাসবাদী নিজ্জরকে খুন করেছে ভারতীয় এজেন্টরা। ট্রুডোর এই দাবিকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক একেবারে তলাইতে ঠেকে। এদিকে ট্রুডো এখনও তাঁর নিজের দাবিতেই অনড়। ফের ভারতের বিরুদ্ধে বোমা ফাটিয়ে নিজের অবস্থানেই অনড় থাকল কানাডা।
খালিস্তানি সন্ত্রাসী হরদীপ সিং নিজ্জার নিয়ে ভারত ও কানাডার মধ্যে বিরোধ চলছে। কানাডা নিজ্জার হত্যার জন্য ভারতকে অভিযুক্ত করেছে, যা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক বিরোধ চরমে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো আবারও খালিস্তানি সন্ত্রাসবাদী হরদীপ সিং নিজ্জার সম্পর্কে বিবৃতি দিয়েছেন।
হরদীপ সিং নিজ্জারকে হত্যার জন্য আবারও ভারতকে অভিযুক্ত করেছেন তিনি। ট্রুডো ভারত থেকে বহিষ্কৃত ৪০ কানাডিয়ান কূটনীতিকের প্রসঙ্গও তুলে ধরে ভারত ভিয়েনা কনভেনশনের চ্যুক্তি লঙ্ঘন করেছে বলে মারাত্মক অভিযোগ করেন। কানাডার নাগরিক এবং খালিস্তানি জঙ্গি নিজ্জারকে জুন মাসে ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশের একটি গুরুদ্বারের বাইরে খুন করা হয়েছিল। এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ভারতকে সরাসরি দায়ি করেন ট্রুডো।
জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, 'আমরা খুব স্পষ্ট বলেছি যে আমরা এই গুরুতর বিষয়ের তদন্তে ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে চাই। শুরু থেকেই আমরা অভিযোগগুলি ভারতের সঙ্গে শেয়ার করেছি। এই ধরণের ঘটনা নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, 'আমরা বিষয়টির গভীরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে আমরা ভারত সরকার এবং সারা বিশ্বের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।
ভারত নিজ্জারকে খুন করেছে: জাস্টিন ট্রুডো
কানাডার প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'ভারত ভিয়েনা কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে। নয়াদিল্লি নির্বিচারে ৪০ জনের বেশি কূটনীতিককে প্রত্যাহার করেছে। এ কারণে আমরা খুবই হতাশ। তিনি বলেছেন, 'আমাদের বিশ্বাস করার গুরুতর কারণ রয়েছে যে কানাডার মাটিতে একজন কানাডিয়ান নাগরিককে হত্যার সাথে ভারত সরকারের এজেন্ট জড়িত থাকতে পারে।' ট্রুডো বলেছেন যে ভারত ভিয়েনা কনভেনশন লঙ্ঘন করে কানাডিয়ান কূটনীতিকদের বহিষ্কার করেছে।
ভারতের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাবেন: ট্রুডো
কানাডিয়ান কূটনীতিকদের বহিষ্কারের বিষয়ে ট্রুডো বলেন, 'এই ঘটনা বিশ্বের সকল গণতান্ত্রিক দেশগুলির জন্য উদ্বেগের বিষয়, কারণ এই ধরণের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলবে। তিনি বলেন, 'তবে প্রতিটি পদক্ষেপে আমরা ভারতের সঙ্গে ইতিবাচকভাবে কাজ করার চেষ্টা করেছি। আমরা তা চালিয়ে যাব। ট্রুডো বলেছেন, 'এটা কোন কূটনৈতিক লড়াই নয় যা আমরা চালিয়ে যেতে চাই। তবে আমরা সবসময় আইনের শাসনের পক্ষে থাকব'।
আমেরিকার বক্তব্যে কী বললেন ট্রুডো?
সম্প্রতি, মার্কিন বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন যে আমেরিকা চায় কানাডা হরদীপ সিং নিজ্জরের বিষয়ে তদন্ত চালিয়ে যাক এবং তাতে ভারতের সাহায্য দরকার। ব্লিঙ্কেনের এই বক্তব্যে ট্রুডো বলেন, 'ভারতীয় এজেন্টদের মাধ্যমে কানাডিয়ান নাগরিককে হত্যার পর আমরা ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমরা তাদের এই বিষয়টির গভীরে যাওয়ার জন্য আমাদের সঙ্গে কাজ করতে বলেছি'।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'নিজ্জার হত্যা আন্তর্জাতিক আইন ও গণতন্ত্রের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে। এ বিষয়ে আমরা আমেরিকার মতো আমাদের মিত্রদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছি। এটি এমন এক বিষয় আমরা খুব গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছি। আইন প্রয়োগকারী এবং তদন্তকারী সংস্থাগুলি তাদের কাজ চালিয়ে যাওয়ায় আমরা সমস্ত অংশীদারদের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব'।