করোনা ভাইরাস মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মুখে পুড়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন এক শিবসেনা বিধায়ক। সোমবার সে রাজ্যের শাসক দলের বিধায়ক সঞ্জয় গায়কোয়ার বলেছেন, ‘যদি আমি করোনা ভাইরাসকে খুঁজে পাই সেটাই দেবেন্দ্র ফড়নবিসের মুখে পুড়বো।‘ অবৈধভাবে রেমডেসিভির সংরক্ষনের দায়ে বিজেপি নেতা দেবেন্দ্রর বিরুদ্ধে সরব মহারাষ্ট্রের বিরোধী দলগুলো।
সম্প্রতি রেমডেসিভিরের অবৈধ সংরক্ষণে মুম্বাই পুলিশ এক ওষুধের সংস্থার পরিচালককে গ্রেফতার করেছে। এভাবে সরকারি অনুমতি ছাড়া করোনা চিকিৎসার অন্যতম অব্যর্থ এই রেমডেসিভির সংরক্ষণ বেআইনি। স্বাস্থ্য মন্ত্রক সুত্রে এমনটাই খবর। কিন্তু মুম্বাই পুলিশ অভিযান চালিয়ে সেই সংস্থার গুদাম থেকে বাজেয়াপ্ত করে ভায়ালগুলো। এরপরেই প্রাথমিক তদন্তে এই সংরক্ষণের পিছনে ফোড়নবিসের হাত রয়েছে। এমন দাবি করেছে মুম্বাই পুলিশ। তারপর থেকেই মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরব শিবসেনা।
এদিকে শিবসেনার ওই বিধায়কের দাবি, ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থে ফড়নবিস-সহ অন্য বিজেপি নেতারা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের সঙ্গে অসহযোগিতা করছেন।
অপরদিকে, প্রথম পর্যায়ের করোনায় যখন বিশ্বের একাধিক দেশে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি, তখন ভারতের মত ১৪১ কোটির দেশ কিছুটা হলেও সামলে নিয়েছিল কোভিড-১৯। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রাবল্য অনেক অনেক বেশি। এতটা আশা করেনি ভারতও। আনলকের পর থেকে শিথিল হয়েছিল কোভিড বিধি। মাস্ক বিধি থেকে সামাজিক দূরত্ব সব নিয়ম উঠেছিল শিকেয়। অতএব এক অনাকাঙ্ক্ষিত আবহে এখন দেশ। যেখানে দৈনিক আক্রান্ত এদিন ২ লক্ষ ৭০ হাজারেরও বেশি। মৃত্যু ১৬০০।
কোভিড এখন আগের থেকে অনেক বেশি সংক্রামক। ব্রিটেন, ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকার কোভিড স্ট্রেনের মিলিত দাপটে ধরাশায়ী হতে হচ্ছে ভারতকে। বর্তমানে ভারতের যা পরিস্থিতি, কোনও দেশের তেমন অবস্থা নয়। আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতালে দেখা দিয়েছে বেডের হাহাকার, অক্সিজেন, জীবনদায়ী ওষুধ রেমডেসেভিরের আকাল। একাধিক বৈঠক হচ্ছে কেন্দ্রের রাজ্যে মধ্যে, প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীদের মধ্যে। সমাধান সূত্র অধরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে ভুল প্রত্যেকের। যখন থেকে নিম্মমুখী হয়েছিল করোনাভাইরাস তখন থেকেই নিয়মের তোয়াক্কা না করেই চলেছিল উৎসব, উদযাপন, খাওয়াদাওয়া, পার্টি। করোনা ম্যাজিক নয়। আজ নেই মানে কোনওদিন থাকবে না। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও একাধিকবার সাবধান করেছিল। তবু সতর্ক হয়নি জনসাধারণ। ফলস্বরূপ পূর্ণ তেজে ফের হাজির সারস-কোভ-২। টিকাকরণ চলছে। কিন্তু লাভের লাভ হচ্ছে কি?
এ প্রশ্নের উত্তর এখনও জানা যায়নি। তবে সেরোসার্ভের রিপোর্ট বলছে এখনও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুই হয়নি। যা হচ্ছে তা ওই ‘ট্রেলার’। এর অর্থ ‘পিকচার আভি বাকি হ্যায়’। ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বায়োটেকনোলজির প্রাক্তন ডিরেক্টর বীরেন্দ্র সিং চৌহান বলেন, “নভেম্বর থেকে জানুয়ারি ক্রমশ সুস্থ হচ্ছিল ভারত। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ফের সেই ঝড়ে পড়তে হল। সবাই ভেবেছে করোনা ভ্যানিশ হয়ে গিয়েছে। যা সংক্রামক ব্যধি তা আসলে এত সহজে শেষ হয়না। আমাদের মধ্যেই থেকে যায়। যা করেছি গত কয়েকমাসে তার খেসারত দিতে হবে।”