পুঞ্চ হামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সেনাদের হাতে আটক তিন জনের মৃত্যু তুলেছে একাধিক প্রশ্ন। ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামতে হয়েছে খোদ রাজনাথ সিংকে। স্বজনহারা পরিবারের এখন একটাই প্রশ্ন, “কেন ওরা এভাবে শাস্তি দিল?”, “আমার ছেলেকে এখন কে ফিরিয়ে দেবে”, “নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানদের কিভাবে বিশ্বাস করব?”
জম্মুতে ঘন জঙ্গলের মধ্যে অবস্থিত টোপা পীর গ্রামে বাস মাত্র ৩০টি পরিবারের। ২২ শে ডিসেম্বর জঙ্গি হামলায় চার সেনার মৃত্যুর পর গ্রামেরই ৯ জন আটক করে জেরা করে সেনা বাহিনীর সদস্যরা। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা তিনজনকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে সেনা কর্মীদের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে এই ঘটনার মাঝেই সামনে এসেছে চমকে দেওয়ার মত এক কাহিনী । গ্রামের তরুণ প্রজন্মকে মাদক ও সন্ত্রাসের কালোছায়া থেকে দূরে রাখতে জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চের কালাই গ্রামের ২হাজার বাসিন্দা ব্যক্তিগত মালিকানাধীন কৃষি জমিকে ক্রীড়া ক্ষেত্রে পরিণত করার জন্য প্রাণপাত করছেন। যে কাজ সরকারের করা উচিত ছিল তা নিজেরা করে দেখাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। তাদের আশা গ্রামে একটি স্পোর্টস কমপ্লেস্ক থাকলে এলাকার যুবকরা খেলাধুলায় মনোনিবেশ করবে। তারা মাদক থেকে দূরে রাখবে এবং সন্ত্রাসবাদো কার্যকলাপে কোনভাবেই জড়িয়ে পড়বেন না।
বছরের পর বছর ধরে বাসিন্দাদের একাধিক অনুরোধ সত্ত্বেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনও সাহায্য না আসায়, গ্রামের মানুষই বিষয়টি নিজের হাতে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। যাদের সামর্থ্য ছিল তারা আর্থিকভাবে অনুদান দিয়েছেন, অন্যরা তাদের শ্রম দিয়ে পাহাড়ি অসম কৃষি জমিকে খেলার মাঠে পরিণত করেছেন। গ্রামের কেউ কেউ শ্রমিকদের চা ও খাবার দিয়ে সাহায্য করেছেন।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত জমিটি মহম্মদ শাবির নামে একজনের, তিনি সেখানে ভুট্টা চাষ করতেন এবং শ্রমিক হিসাবেও কাজ করতেন। কালাই গ্রামের পঞ্চায়ের প্রধান ফারোজ উন নিসা বলেন, “তাকে বছরে ১ লাখ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রামবাসীরা। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি স্কুল শিক্ষক ফারোজ তাদের মধ্যে রয়েছেন যারা মাঠের উন্নয়নের প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দিয়েছেন।
বাসিন্দারা স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরিতে ২৫ লক্ষ টাকা খরচ করেছে, যেখানে কালাই এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামের লোকেরা ইতিমধ্যেই এই বছর একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছে।
স্পোর্টস কমপ্লেক্সটি এমন এক সময়ে সামনে এসেছে যখন পুঞ্চ এবং পার্শ্ববর্তী জেলা রাজৌরিতে জঙ্গি কার্যকপাল বৃদ্ধি পেয়েছে এই বছরের শুরু থেকে, J&K পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনী ২৭ জঙ্গিকে হত্যা করেছে। একই সঙ্গে ১৬ জন সেনা কর্মীও এনকাউন্টারে নিহত হয়েছে। এই সময়ে জঙ্গিরা এই দুই জেলায় সাতজন নিরীহ নাগরিককে হত্যা করেছে।
অধিকন্তু, এই বছরের শুরুর দিকে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের একটি তদন্তে দেখা গেছে যে J&K-তে মাদকদ্রব্যের ব্যবহার গুরুতর বৃদ্ধি পেয়েছে। যা নিরাপত্তা সংস্থাগুলির কাছে অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।