Advertisment

অসদাচারণের অভিযোগ, অধ্যাপককে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল গুয়াহাটি আইআইটি

ব্রিজেশ রাই এখন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নেই। তিনি জানিয়েছেন, আত্মপক্ষ সমর্থনের যথাযথ সুযোগ তাঁকে কখনওই দেওয়া হয়নি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
guwahati iit

অধ্যাপক ব্রিজেশ রাই

বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হলো গুয়াহাটি আইআইটি-র এক অধ্যাপককে। ওই অধ্যাপক কিছুদিন আগে প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন। প্রতিষ্ঠান তাঁর বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ এনেছে। ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহ-অধ্যাপক ব্রিজেশ রাই গত ১ জানুয়ারি এই আদেশ পেয়েছেন। তার পরদিন তাঁকে পাঠানো এক নোটিসে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ক্যাম্পাস কোয়ার্টার ছাড়তে বলা হয়েছে।

Advertisment

আইআইটি গুয়াহাটির ডিরেক্টর অধ্যাপক সীতারাম বলেন, "বোর্ড অফ গভর্নর্স এবং তদন্ত কমিটি ডক্টর রাইকে আত্মপক্ষ সমর্থনের প্রচুর সুযোগ দিয়েছিল এবং ডক্টর রাইয়ের সমস্ত বক্তব্য সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিবেচনা করে দেখেছে।" ব্রিজেশ রাই এখন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নেই। তিনি জানিয়েছেন, আত্মপক্ষ সমর্থনের যথাযথ সুযোগ তাঁকে কখনওই দেওয়া হয়নি। রাই আরও জানিয়েছেন, তিনি এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আদালতে যাবেন। তিনি বলেন, "এখন কেউ স্বচ্ছতার কথা বললেই তাকে দেশদ্রোহী ও কম্যুনিস্ট বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে।"

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে পাঠানো এক ই-মেলে অধ্যাপক সীতারাম বলেছেন, "বোর্ড অফ গভর্নর্স ডক্টর রাইয়ের বাধ্যতামূলক অবসরের শাস্তি ধার্য করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ ছিল, সেসব সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে।"

উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা ৪১ বছরের রাই গুয়াহাটি আইআইটি-তে যোগ দেন ২০১১ সালে। ২০১৭ সাল থেকে তিনি তিনটি শো কজ নোটিস পান এবং তাঁর বিরুদ্ধে তিনটি শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগের তদন্ত করা হচ্ছিল। প্রত্যেকবার তাঁর নামে ভিন্ন ভিন্ন অভিযোগ আনা হয়।

রাইয়ের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের সংঘাতের শুরু ২০১৫ সালে। এক আরটিআইয়ের মাধ্যমে তিনি দেখান, এক ছাত্র এক বছর পর প্রতিষ্ঠান ছেড়ে দেওয়া সত্ত্বেও তার ডিগ্রি পাওয়ার ব্যাপারে এক অধ্যাপক তাকে সাহায্য করেছেন। রাই জানান, "সে বিহারে কর্মরত ছিল। আমার অভিযোগের ভিত্তিতে সে ডিগ্রি পায়নি, ফলে যে অধ্যাপক এর পিছনে ছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।"

২০১৭ সালে আরেকটি অভিযোগে রাই বলেন, ইসরোর সঙ্গে গুয়াহাটি আইআইটি-র একযোগে যে প্রকল্প, সেখানে নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। এর জেরে তিনি প্রথম শো কজ নোটিস পান। তাঁর কথায়, "ওরা আমার বিরুদ্ধে একের পর এক ভিত্তিহীন অভিযোগ আনছিল, এক ছিল অধ্যাপকের সঙ্গে সংঘাত, আরেকটা ছিল কর্তব্য পালন না করা।"

তিনটি অভিযোগের ভিত্তিতে রাইকে অবসরে পাঠানো হয়েছে। এগুলি হলো, "ইসরোকে অভিযোগের চিঠি পাঠানোর সময়ে অফিসিয়াল চ্যানেল অবলম্বন না করা, ডক্টর বি আনন্দের সঙ্গে হাতাহাতি, এবং অ্যাকাডেমিক দায়িত্ব পালন না করা, যার মধ্যে রয়েছে যথাসময়ে পরীক্ষার গ্রেড জমা না দেওয়া, যার ফলে পরীক্ষার ফল প্রকাশে দেরি হয়েছে।"

রাই বলেন, "অভিযোগ করা হয়েছে, আমি ইসরো প্রকল্প নিয়ে প্রকাশ্যে তথ্য দিয়েছি। ইসরোকে ই-মেল করা, যা কিনা প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত, কীভাবে প্রকাশ্য হতে পারে! ২০১৭ সালে একজন অধ্যাপকের সঙ্গে আমার কথা কাটাকাটি হয়। কিন্ত ওঁরা বলছেন, আমি নাকি ওঁকে মারধর করেছিলাম। ২০১৭ সালে আমি একজন ছাত্রের টিউটোরিয়াল নিইনি কারণ ওরা আমার উপর ইচ্ছা করে প্রচণ্ড কাজের চাপ বাড়াচ্ছিল। এগুলো সব আমাকে তাড়ানোর অজুহাত।"

২০১৯ সালে রাই আইআইটি গুয়াহাটির মধ্যে একটি শিবমন্দির বানানোর বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা করেন। তিনি বলেন, "এর ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র নষ্ট হচ্ছে।"

সীতারাম তাঁর ই-মেলে বলেছেন, “ডক্টর রাইয়ের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ প্রমাণিত। বেআইনি ব্যাপারের কোনও প্রশ্নই নেই।”

IIT
Advertisment