মণিপুর হিংসা বন্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া, ভিডিওতে দেখতে পাওয়া লোকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া এবং মহিলাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি চাওয়া হয়েছে এই চিঠিতে।
মণিপুর হিংসা বন্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া, ভিডিওতে দেখতে পাওয়া লোকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া এবং মহিলাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি চাওয়া হয়েছে এই চিঠিতে।
ভিডিও কাণ্ডে গ্রেফতার এক, ‘অসম্মানজনক-অমানবিক’ ঘটনার নিন্দা মুখ্যমন্ত্রীর। এর মাঝেই স্বাতী মালিওয়াল চিঠি লিখে ঘটনায় দ্রুত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়াল তিনটি দাবি তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি তিনি মণিপুর সফরের অনুমতিও চেয়েছেন।
Advertisment
Writing letter today to PM & Manipur CM seeking- 1. Urgent steps to curb violence in Manipur 2. Strongest action against men in the video who perpetrated attack on the girls 3. Manipur CM to allow my visit to meet the survivors, their families and other girls and women. Want to…
দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে যৌন হয়রানির ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পরই নিন্দার ঝড়। ভিডিও প্রসঙ্গে ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে মোদীর প্রতিক্রিয়া। এর মাঝেই মণিপুরের এই ঘটনার একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং। সেই সঙ্গে তিনি আশ্বস্ত করে বলেছেন, দোষীদের যাতে কড়া শাস্তি নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। একই সঙ্গে এই ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে মণিপুর পুলিশ।
দু’মাসের বেশি সময় ধরে ধরে জাতিগত হিংসার আগুনে পুড়ছে মণিপুর। একের পর হত্যার ঘটনা সামনে এসেছে। এর মাঝেই একটি ভয়ঙ্কর ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় চাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একদল পুরুষ দুই মহিলেকে বিবস্ত্র করে প্রকাশ্যে যৌন হয়রানি করছে। ঘটনার ভিডিও সামনে আসাআর পর পার্বত্য রাজ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দুই মহিলাকে গণধর্ষণ করা হয় বলেও অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দেন নেটিজেনরা। এর পরইও পাশাপাশি মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে অরবিন্দ কেজরিওয়াল থেকে শুরু করে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর প্রতিক্রিয়াও সামনে এসেছে।
Advertisment
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি বলেছেন, “মণিপুরের দুই মহিলার যৌন হয়রানির ভয়ঙ্কর ভিডিও নিন্দনীয় এবং অমানবিক। মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাকে জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং আশ্বাস দিয়েছেন দোষীদের কোনভাবেই রেয়াত করা হবে না”।
মণিপুরের জঘন্য ঘটনার ভিডিও সামনে আসতেই তেড়েফুঁড়ে আসরে নেমে পড়েছে কংগ্রেস। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এই ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করে বলেছেন, 'মণিপুরে মহিলাদের ওপর যৌন নিপীড়নের যে ছবি ছড়িয়ে পড়েছে তা নিন্দনীয় ও বর্বরোচিত। নারী নির্যাতনের এই নৃশংস ঘটনার নিন্দারও কোন ভাষা নেই। হিংসার ঘটনার সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হতে হচ্ছে মহিলা ও শিশুদের। মণিপুরে শান্তির প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় আমাদের সকলকে এক কণ্ঠে হিংসার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে হবে। মণিপুরের পরিস্থিতি কেন চোখ বুঝে বসে আছে কেন্দ্রীয় সরকার, প্রধানমন্ত্রী? এ ধরনের ছবি ও হিংসার ঘটনা কী তাদের নাড়া দেয় না’?
আপ প্রধান তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, “মণিপুরের ঘটনা অত্যন্ত লজ্জাজনক এবং নিন্দনীয়। এই ধরনের জঘন্য কাজ ভারতীয় সমাজে মেনে নেওয়া যায় না। মণিপুরের পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। আমি প্রধানমন্ত্রীকে মণিপুরের পরিস্থিতির দিকে নজর দেওয়ার জন্য আবেদন করছি। এই ঘটনার ভিডিওতে যে দোষীদের দেখা যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। ভারতে এই ধরনের অপরাধীদের থাকার কোন জায়গা নেই”।
আপের তরফে আরও বলা হয়েছে, 'রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের নিষ্ক্রিয়তা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আমরা আবারও প্রধানমন্ত্রীকে মণিপুরের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে হস্তক্ষেপ করার জন্য অনুরোধ করছি’।
এর ঠিক পরেই সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু আগেই মোদী মণিপুর হিংসায় তাঁর প্রথম বিবৃতি পেশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘মণিপুরে মহিলাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা লজ্জাজনক’। মণিপুরে দুই মহিলাকে প্রকাশ্যে নগ্ন করে যৌন নির্যাতনের ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই মোদীকে আক্রমণে নাম কংগ্রেস সহ বিরোধী দলগুলি। এর মাঝেই মণিপুর নিয়ে মোদী তাঁর প্রথম প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মর্মান্তিক। ভিডিও প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘এই ঘটনা যে কোন সুশীল সমাজের জন্য লজ্জাজনক'!
প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রথম বারের জন্য মণিপুর নিয়ে তার প্রতিক্রিয়া পেশ করেছেন। তিনি বলেছেন, মণিপুরের হিংসা ‘যে কোন সুশীল সমাজের জন্য লজ্জাজনক’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো মণিপুর হিংসা নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। মণিপুরে দুই মহিলাকে নগ্ন যৌন হয়রানির ভিডিও প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "এমন ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। ঘটনাটি যে কোন সুশীল সমাজের জন্য লজ্জাজনক।" তিনি আরও বলেছেন, ‘কোন ধর্ষককে রেয়াত করা হবে না। নারীদের সুরক্ষায় আমাদের রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠতে হবে’।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়াল তিনটি দাবি তুলে ধরেছেন। তার মধ্যে রয়েছে মণিপুর হিংসা বন্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া, ভিডিওতে দেখতে পাওয়া লোকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া এবং মহিলাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি চাওয়া হয়েছে এই চিঠিতে।
চিঠিতে, স্বাতী মালিওয়াল আরও লিখেছেন, এনডিএ বৈঠকের জন্য ৩৮টি দল মিলিত হয়েছে কিন্তু আমি প্রশ্ন করতে চাই, মণিপুর কেন জ্বলছে তা নিয়ে কোন দলের কোন প্রতিনিধি কী প্রধানমন্ত্রীকে একটি প্রশ্নও করেছে? মণিপুরে ডবল ইঞ্জিন সরকার রয়েছে। বিজেপি কেন রাজ্যের নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে পারছে না। মণিপুর জ্বলছে এবং বিজেপি নেতা পাঁচতারা হোটেলে মিলিত হচ্ছেন”।