নতুন করে হিংসা ছড়িয়ে পড়ার একদিন পর মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলের চেহারা থমথমে। নতুন করে হিংসার জেরে ইতিমধ্যে অন্তত একজন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। যার জেরে কর্তৃপক্ষ পূর্ব ও পশ্চিম ইম্ফল, উভয় জেলাতেই সম্পূর্ণ কারফিউ জারি করেছে। কার্ফুর জেরে বৃহস্পতিবার মণিপুরের রাজধানী কার্যত পরিত্যক্ত এলাকার চেহারা নেয়।
বুধবার নতুন করে হিংসার সূত্রপাত হয় বিষ্ণুপুর জেলার ত্রংলাওবি এলাকায়। এখানকার তিনটি বাড়িতে দুষ্কৃতীরা আগুন দেয়। পাশাপাশি, আশেপাশে এলাকাতেও আগুন ধরিয়ে দেয়। তার মধ্যেই গুলি চলে। যার জেরে হিংসার ঘটনা আরও বেড়ে যায়। গুলিচালনার জেরে একজন নিহত ও দু'জন আহত হয়েছেন।
এর পরেই ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিম, বিষ্ণুপুর-সহ মণিপুরের চার জেলা থেকে কার্ফু শিথিলকরণের নির্দেশ প্রত্যাহার করে প্রশাসন। কার্ফুর আওতা থেকে কেবল নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সরবরাহকে বাদ রাখা হয়েছে। এমন কঠোরভাবে কার্ফু বলবৎ করায় গোটা ইম্ফল শহরের পথঘাট বৃহস্পতিবার কার্যত ছিল জনশূন্য।
ইম্ফলের স্পর্শকাতর এলাকায় বিপুল পরিমাণ নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বিশেষ করে রাতের বেলায় তল্লাশি এবং চেকিং জোরদার করা হয়েছে। ইম্ফল পূর্বের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, পরিস্থিত দেখে লোকে ভয়ে ঘরের বাইরে বের হয়নি। বর্তমানে মণিপুরজুড়ে মোতায়েন রয়েছে ৭০ কোম্পানি সেনা।
মণিপুর সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিং জানিয়েছেন, 'বুধবারের হিংসার পরে, মণিপুরজুড়ে আরও ২০ কোম্পানি সেনা পাঠানোর আবেদন আমরা জানিয়েছিলাম। সেই আবেদনমত বৃহস্পতিবার আরও চার কোম্পানি সেনা মণিপুরে এসেছে।' কুলদীপ সিং জানিয়েছেন, বাড়তি বাহিনীকে বিষ্ণপুর জেলার সমস্ত স্পর্শকাতর এলাকায় টহল দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- মার্কিন মুলুকে ছ’দিনের সফরসূচি রাহুলের, কংগ্রেস নেতার উদ্বেগ বাড়াচ্ছে শুধু আদালত
মাত্র কিছুদিন আগেই মণিপুরে মেইতেইদের উপজাতি মর্যাদার দাবিকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছিল। যার জেরে বহু বাড়িতে অগ্নিসংযোগ হয়েছে। ৫০-এর বেশি মানুষের প্রাণ গিয়েছে। বহু লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছিল প্রশাসন। তারপরও বুধবার ফের সংঘর্ষ ছড়ায় এই পার্বত্য রাজ্যে।