আজ, ১৪ অগাস্ট, পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস। দিনটির উদযাপন করতে গিয়ে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জানিয়েছেন, জম্মু কাশ্মীরের বাসিন্দাদের বর্তমান অবস্থায় তিনি "দুঃখিত", কারণ তাঁরা "ভারতীয় দমন পীড়নের শিকার"। এক বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, "কাশ্মীরি ভাইদের" পাশে রয়েছে পাকিস্তান।
"স্বাধীনতা দিবস অত্যন্ত আনন্দের দিন, কিন্তু আজ অধিকৃত জম্মু কাশ্মীরে ভারতের দমন পীড়নের শিকার কাশ্মীরি ভাইদের অবস্থার কথা ভেবে আমাদের হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়ে রয়েছে," ইমরানকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। ইমারান আরও বলেছেন, "আমি আমার কাশ্মীরী ভাইদের আশ্বস্ত করতে চাই যে আমরা তাঁদের পাশে আছি।"
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ভারতের স্বাধীনতা দিবসকে 'কালো দিবস' হিসেবে পালন করতে চলেছে পাকিস্তান। সমস্ত সরকারি ভবনে অর্ধনমিত থাকবে পাকিস্তানের পতাকা। জম্মু কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা প্রদানকারী ভারতের সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করার বিরুদ্ধেই এই প্রতিবাদ জানাচ্ছে পাকিস্তান।
আরও পড়ুন: ৩৭০ ধারা অবলুপ্তি রাষ্ট্রসংঘের সিদ্ধান্ত বিরোধী: পাকিস্তান
অন্যদিকে, সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে যে বুধবার পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে এক অনুষ্ঠানে দেশের রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভি বলেন "কাশ্মীরি এবং পাকিস্তানিরা এক", এবং পাকিস্তান চায় আলচনার মাধ্যমে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করতে। "আমরা কখনোই তাঁদের একা ছেড়ে দেব না। কাশ্মীরী এবং পাকিস্তানিরা এক। আমাদের দুঃখও এক, কারণ তাঁদের চোখের জলে আমাদের হৃদয় ভারী হয়। আমরা ওঁদের সঙ্গে ছিলাম, এখনও ওঁদের পাশেই দাঁড়িয়ে আছি এবং থাকব।" রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, "পাকিস্তান শান্তিপ্রিয় দেশ, এবং আমরা চাই আলাপ আলোচনার মাধ্যমে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হোক। কিন্তু আমাদের শান্তিপূর্ণ নীতিকে যেন দুর্বলতা না মনে করে ভারত।"
গত সপ্তাহে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটানোর সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান। একই সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যও বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করে। সংসদে জম্মু কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হওয়া এবং সে রাজ্যকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করার প্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত।
এ বিষয়ে গত সপ্তাহে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদেরও দ্বারস্থ হয় পাকিস্তান, কিন্তু তাতে কোনও সুরাহা হয় নি। নিরাপত্তা পরিষদের বর্তমান সভাপতি রাষ্ট্র পোল্যান্ড জানায়, যেহেতু জম্মু কাশ্মীর একটি দ্বিপাক্ষিক বিষয়, সেহেতু ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই এমন কোনও সমাধান বের করতে হবে, যাতে উভয় দেশেরই মঙ্গল হয়।
এদিকে ভারত গোড়া থেকেই বলে আসছে যে সংবিধানের সাম্প্রতিক সংশোধনী কোনোরকম আন্তর্জাতিক প্রভাব ফেলবে না। এর একমাত্র উদ্দেশ্য হলো জম্মু কাশ্মীর অঞ্চলে প্রশাসনিক ভাবে স্থায়ী কিছু ব্যবস্থা চালু করা, এবং সমৃদ্ধি ও উন্নতির সুযোগ করে দেওয়া।