মধ্যপ্রদেশের গড়হা গ্রামের কাছে একটি ফুটওভার ব্রিজের নীচে রেলপথে প্রতিদিন বিকেলে ঘড়ির কাঁটা ধরে জটলা আর হুড়োহুড়ি। রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স (আরপিএফ) কনস্টেবল আরএস ফৌজদার এবং তাঁর পাঁচজন সহকর্মী ততক্ষণে পজিশন নিয়ে ফেলেছেন। গোরক্ষপুরের দিকে রওনা হওয়া একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের জন্য তাঁরা অপেক্ষা করছেন। কাগজে কলমে, এই ট্রেনটির কয়েক মিটার দূরে দুরিয়াগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন। খাতায়-কলমে সেখানে ট্রেনটি থামে না। তবে, বাস্তবে যেটা হয়- ট্রেনটি সেতুর কাছে আসার সঙ্গে সঙ্গেই এর গতি কমে যায়। ট্রেনটি ট্র্যাকের ওপর হুইসেল বাজিয়ে থেমে হঠাৎ যায়।
প্রতিদিনের দৃশ্য
বিকেলের গরম বাতাস 'জয় শ্রী রাম' স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে। পুরুষ ও মহিলারা তাঁদের শিশুকোলে ছোট হনুমান গাথা নিয়ে ট্রেনের বগি থেকে নেমে সেতুর দিকে ছুটে যান। কনস্টেবল ফৌজদার বললেন, 'এই সব লোকজন আমাদের কথা শোনেন না। কমপক্ষে ছয় মাস ধরে দেখছি যে যাত্রীরা সেতুর কাছে এসেই এমারজেন্সি ব্রেক টানছেন। আমি এই ভক্তদের আটক করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু, তাঁরা উলটে আমাদের দিকে পাথর ছুড়েছে।' এই ভক্তরা 'বাবা বাগেশ্বর' ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীর দিব্য দরবারে যোগ দিতে মধ্যপ্রদেশের ছতারপুর জেলার গড়হা গ্রামে বাগেশ্বর ধামে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন- রাশিয়ায় বিপুল বিনিয়োগ, বিপাকে ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলো, লভ্যাংশ আটকে মস্কোয়
লাইন দিচ্ছেন রাজনীতিবিদরাও
নিচু পাহাড় দ্বারা ঘেরা বাগেশ্বর ধাম। এর শিব এবং হনুমান মন্দিরগুলো, বুন্দেলখণ্ডের তীর্থযাত্রা সার্কিটের অন্যতম এলাকা। কিন্তু, এটি এখন একটি রাজনৈতিক হটস্পট হিসেবে দ্রুত চিহ্নিত হয়ে উঠেছে। মধ্যপ্রদেশ আগামী কয়েক মাসের মধ্যে নির্বাচনের মুখোমুখি হবে। সেই জন্য, রাজনৈতিক দলের নেতারা শাস্ত্রী বা ২৬ বছর বয়সি বাগেশ্বর ধামের 'পীঠধীশ' বা বাগেশ্বর ধামের প্রধান পুরোহিতের সঙ্গে দেখা করার জন্য লাইন দিচ্ছেন। কারণ, ধীরেন্দ্র শাস্ত্রী দাবি করেছেন যে তিনি মানুষের মন পড়তে পারেন। তাঁর শরীর ছেড়ে আত্মা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতে পারে। একইসঙ্গে, হিন্দু রাষ্ট্রের প্রতি নিজের নিঃশব্দ সমর্থনের কথাও তিনি জানিয়েছেন।