একে করোনা হানায় বিপর্যস্ত ভারত, এর উপর আন্দামানে খোঁজ মিলল এক মারণ প্রাণীর। বিজ্ঞানীরা এর নামের সঙ্গে পরিচিত হলেও পরিবেশে এর বাড়বাড়ন্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে এবার। যা মোটেও সুখকর নয়। ক্যানডিডা অরিস (Candida Auris) বা C.auris নামের মাল্টিড্রাগ রেজিস্টেন্স প্যাথোজেন যে মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক তা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে বিজ্ঞানীরা।
এই C.auris প্যাথোজেনটিকে একাধিক ওষুধ প্রয়োগেও বিনষ্ট করা যায় না। দক্ষিণ আন্দামানে এর খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। পুদুচেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওশান স্টাডিজ এবং মেরিন বায়োলজির সঙ্গে যৌথভাবে দিল্লির বল্লভভাই প্যাটেল চেস্ট ইনস্টিটিউট এই স্টাডিটি করে। এই C.auris কীট কতটা প্রাণঘাতী হতে পারে সে বিষয়েও সতর্কবার্তা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন।
২০০৯ সালে প্রথম জাপানে এক ব্যক্তির দেহে এই প্যাথোজেন পাওয়া গিয়েছিল। বর্তমানে ৪০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে গত এক দশকের মধ্যে। কিন্তু এর বিষয়ে তেমন গবেষণাও হয়নি তাই বিশেষ কিছু জানতেও পারা যায়নি। তবে দিল্লির এই ইনস্টিটিউট জানতে পারে যে হাসপাতালের বাইরেও সামুদ্রিক পরিবেশে এই প্যাথোজেনটি বাড়তে পারে৷ আন্দামানের বিভিন্ন এলাকায় সন্ধান চালান হয়েছিল। বিচ, সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা, পাথর, সমুদ্রের জল মোট ৪৮টি স্থান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে প্যাথোজেন বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
সেই পরীক্ষা থেকেই পাওয়া গিয়েছে এই মারাত্মক তথ্য। নোনা মাটিতে ২টি কলোনি দেখা গিয়েছে এবং সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় ২২টি এই C.auris প্যাথোজেন কলোনি পাওয়া গিয়েছে৷ গবেষণার প্রধান ড. অনুরাধা চৌধুরী বলেন, "দু রকমের ড্রাগ রেজিস্টেন্স C.auris পাওয়া গিয়েছে। এর থেকে প্রমাণিত হয় যে কঠিন আবহাওয়াতেও এই প্যাথোজেন বৃদ্ধি পেতে পারে৷ এই প্যাথোজেন থাকলে অর্গানিক প্রাণ বাড়তে পারবে না কখনই।"
ড. অনুরাধা চৌধুরী বলেন, এই কীট পরিবেশ থেকেই হাসপাতালেই ছড়িয়ে পড়ছে। সেখান থেকে রোগীদের দেহে ঢুকছে। এই প্যাথোজেনটি নিজেরাই ইমিউনিটি তৈরি করে নেয়। ফলে এদের একাধিক ড্রাগ দিয়েও নিরাময় করা যায় না। ভারতে সংক্রমণ কম হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনে এর প্রাদুর্ভাব রয়েছে। করোনা আবহে আন্দামানে এর খোঁজ চিন্তায় ফেলেছে গবেষক মহলকে। নতুন করে আবার কোনও অতিমারী হবে না তো?
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন