ছত্তিশগড়ের কোরিয়া জেলায় কুকুরের কামড়ে মৃত্যু হল এক সাড়ে পাঁচ বছর বয়সি শিশুকন্যার। শুক্রবার এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে বৈকুণ্ঠপুর শহরের পার্শ্ববর্তী তালওয়াপাড়া গ্রামে। ওই শিশুর নাম সুকান্তি মাঝি। ঘটনার সময় শিশুটি স্থানীয় দোকানে জলখাবার কিনতে গিয়েছিল। তখনই কুকুরটি তাকে আক্রমণ করে।
উপস্থিত লোকজন আক্রান্ত শিশুটিকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশুটির বাবা অজয় মাঝি গ্রামেরই ইটভাটায় কাজ করেন। বৈকুণ্ঠপুর জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. অভিষেক গাদওয়াল এই ব্যাপারে জানান, ময়নাতদন্তে দেখা গিয়েছে যে কুকুর বা কুকুরজাতীয় কিছুর কামড়ে ও আঁচড়েই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় হায়দরাবাদের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। যাতে দেখা গিয়েছে যে এক চার বছরের শিশুকে কুকুর আঁচড়ে ও কামড়ে মেরে ফেলছে। দেশে পশুপ্রেমীর সংখ্যা নেহাত কম নয়। তার মধ্যে অনেকে কুকুরপ্রেমীও রয়েছে। তাঁরাও প্রকাশিত এই ভিডিওয় মানসিকভাবে ধাক্কা খেয়েছেন। এর আগে উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ে একটি পিটবুল তার মালিককে হত্যা করেছিল। যে ঘটনায় শিউড়ে উঠেছিলেন দেশবাসী।
পরিসংখ্যান বলছে, ভারত-সহ সারা বিশ্বে কুকুরের কামড়ে মানুষের মৃত্যুর ঘটনা কিন্তু নেহাত কম নয়। ভারত সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক গত বছর সংসদে একটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় জানিয়েছিল যে দেশে, ২০১৯ সালে ৭২ লক্ষ ৭৭ হাজার ৫২৩টি কুকুরের আক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। ২০২০ সালে মোট ৪৬ লক্ষ ৩৩ হাজার ৪৯৩টি কুকুর কামড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। আর, ২০২১ সালে মোট ১৭,০১,১৩৩টি কুকুরের কামড়ের ঘটনা ঘটেছে। শুধুমাত্র ২০২২ সালের জুলাই পর্যন্তই সংখ্যাটা ছিল ১৪ লক্ষ ৫০ হাজার ৬৬৬।
আরও পড়ুন- অযোধ্যা সফরে শিণ্ডে, বালাসাহেবের উত্তরসূরি প্রমাণের জন্য বিজেপির চাল, অভিযোগ উদ্ধবদের
২০১৮ সালে মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেট একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে প্রতিবছর ২০ হাজার মানুষ জলাতঙ্ক রোগে মারা যান। ২০১৪ সালে, ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ প্লাস্টিক সার্জারি একটি প্রতিবেদন পেশ করেছিল। তাতে বলা হয়েছিল যে ২০১১-২০১২ সালে দেশে মোট ১ কোটি ৭৪ লক্ষ কুকুরের কামড়ের ঘটনা ঘটেছিল। আক্রান্তদের অধিকাংশই ছিল ছোট শিশু ও যুবক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) রিপোর্ট অনুযায়ী, জলাতঙ্ক রোগে সারা বিশ্বে প্রতি বছর ৫৫ হাজার মানুষ মারা যান। আর, সারা বিশ্বে জলাতঙ্ক রোগে মারা যাওয়া মানুষের ৯৫ শতাংশই আফ্রিকা ও এশিয়ার।