মাত্র ১০ মাসে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ২৫টি এফআইআর! মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদে একনাথ শিন্ডে কুর্সিতে বসার পর থেকে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলায় জড়ানোর অভিযোগ। ২রা এপ্রিল, শিবসেনা (উদ্ধব বালাসাহেব ঠাকরে) -এর রোশনি শিন্ডেকে একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন সেনার মহিলারা চড় মেরেছিলেন বলে অভিযোগ।
মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করে একটি সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টের জেরেই তাকে হেনস্থা করা হয়েছিল বলে জানা গেছে। ঘটনার পর সাংসদ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী মামলা নথিভুক্ত করতে কাসারভাদাবলী থানায় পৌঁছালেও পুলিশ মামলা দায়ের করতে চায়নি। রোশনীর সঙ্গে হাসপাতালে দেখা করার পরে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে উদ্ধব ঠাকতে মুখ্যমন্ত্রী শিন্ডে এবং উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশের সমালোচনা করেন। উদ্ধব বলেন, সরকারই যখন ঠুঁটো জগন্নাথ, তখন তার কাছ থেকে কী করে কিছু আশা করা যায়?
মারধরের ঘটনায় রোশনীর তরফে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। শিবসেনা নেতা বিনয় রাউত অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে তিনি থানে পুলিশ কমিশনার জয়জিৎ সিংয়ের সঙ্গে দেখা করতে পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে গেলেও সেখানে তাঁর দেখা মেলেনি। রোশনীর মামলায় পুলিশের একতরফা পদক্ষেপের অভিযোগ করে, শিবসেনা (ইউবিটি) বিধায়ক আদিত্য ঠাকরে সহ এনসিপি এবং কংগ্রেস।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে শিন্ডে সরকার ৩০ জুন, ২০২২- এ ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ২৫টি এফআইআর দায়ের করা হয়। এর মধ্যে ২১ টি মামলা দায়ের করা হয় সোশ্যাল মিডিয়ায় সংক্রান্ত পোস্টের ওপর যা শিন্ডেকে "টার্গেট" করে করা হয়েছে বলে অভিযোগ। গত জানুয়ারিতেই উদ্ধবপন্থী শিবসেনা এক নেতা দাবি করেন থানের কিছু পুলিশ আধিকারিক শিন্ডের "বেসরকারী সেনাবাহিনী" হিসাবে কাজ করছেন।
এমনকী প্রাক্তন সাংসদ আনন্দ পরাঞ্জপের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে ১১টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আনন্দ পরাঞ্জপে বলেন, “থানে পুলিশ, বিশেষ করে কিছু পুলিশ আধিকারিক শিন্ডে সরকারের নির্দেশে কাজ করছে"। এবিষয়ে এক ঊর্ধ্বতন পুলিস কর্মকর্তা বলেছেন, “একতরফা ভাবে পুলিশের বিরুদ্ধে যে কাজের অভিযোগ সামনে আনা হচ্ছে তা ভিত্তিহীন। শিন্ডে শিবিরের নেতাদের বিরুদ্ধে যদি কোন অভিযোগ ওঠে সে ক্ষেত্রেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুলিশ কমিশনার জয়জিৎ সিং দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, “প্রাথমিক তদন্তের পরেই সমস্ত এফআইআর দায়ের করা হয়েছে । আমরা নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করি এবং রেকর্ডে যথেষ্ট প্রমাণ আছে তা নিশ্চিত করার পরেই চার্জশিট দাখিল করা হয়"। শিন্ডে সেনার মুখপাত্র কিরণ পাওস্কর বলেছেন, “আইনশৃঙ্খলা ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করেন না। বিরোধীরা ফালতু বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা করছে। মুখ্যমন্ত্রীকে সব কিছুর জন্য 'দোষারোপ' একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে - সেটা 'পুলিশি অ্যাকশন' হোক বা 'হিটওয়েভ'।”