অগ্নিগর্ভ দিল্লি। ব্রহ্মপুরী, ভজনপুরা চক, গোকুলপুরী, মৌজপুর-সহ বিভিন্ন এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়েছে পরিস্থিতি। রাজধানীতে হিংসার ঘটনায় ক্রমেই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। এহেন পরিস্থিতিতে দিল্লির শাহদরায় আটকে বাংলার ১১ জন শ্রমিক। পেটের টানে, রুটি-রোজগারের আশায় বাংলা ছেড়ে দিল্লি গিয়েছিলেন কালাম শেখরা। অশান্ত দিল্লিতে আটকা পড়ে এখন উদ্ধারের আশাতে দিন গুনছেন তাঁরা।
এদিকে এই খবর লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা তথা বহরমপুরের পাঁচবারের সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরীর কাছে পৌঁছতেই তৎক্ষণাৎ তাঁদের মুর্শিদাবাদ ফেরার ব্যবস্থা করেন কংগ্রেস সাংসদ। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে ফোনে অধীর চৌধুরী বলেন, "ওদের বাড়ির লোকেরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ওনারাই আমাকে জানান। যেই মুহুর্তে ফোন পেয়েছি তখনই আমি আমার অফিসে জানিয়ে খোঁজ পাঠিয়ে উদ্ধার করেছি। আমি একটা হেল্পলাইনও খুলে দিয়েছিলাম। আমি এখন বহরমপুরে আছি। তবে আমার দিল্লির অফিসে জানানোর পর সেখান থেকেই ব্যবস্থা করে কালকা মেলে তুলে দেওয়া হয়েছে।" এই মুহুর্তে কালকা মেলেই সওয়ার হয়েছেন ওই এগারো জন শ্রমিক। শুক্রবার সকালে হাওড়া নামবেন তাঁরা, এমনটাই খবর।
আরও পড়ুন: ‘অসমর্থ দিল্লি পুলিশ’, রণক্ষেত্র রাজধানীতে সুরক্ষার আশ্বাস অজিত দোভালের
কালাম বলেন, "সোমবার রাত থেকেই আমরা শাহদারের একটি ঘরে আটক অবস্থায় আছি। হিংসার ঘটনা শুরু হওয়ার পর থেকেই আমরা আর বাইরে বেরতে পারিনি। এদিকে আমাদের কাছে খাবারও নেই। এখন তো ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে শুনলাম। কোনওভাবেই আর বাইরে বেরতে পারব না।" জানা গিয়েছে এই ১১ জন শ্রমিক প্রত্যেকেই মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। এদের মধ্যে প্রায় সকলেই দিল্লিতে থাকছেন পাঁচ-ছয় মাস ধরে। কালামের বাবা আলি হোসেইন শেখ জানিয়েছেন যে দিল্লির ঘটনাটির পর থেকে দু চোখের পাতা এক করতে পারেননি। কালামের বাবা বলেন, "আমরা চাইছি আমার ছেলে ও অন্যান্যদের সেখান থেকে উদ্ধার করুক পুলিশ এবং দিল্লি সরকার"।
এদিকে ব্যাটারি মেরামত কারখানার কর্মী হালিম শেখ জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দিল্লিতে পৌঁছে এখন এই পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন। তিনি বলেন, "আমাদের হঠাৎই একটি ছোট্ট ঘরে আটকে রাখা হল। এখন নিজেদের জীবন বাঁচানো এবং প্রার্থনা করে যাওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই আমাদের। আমরা জানি আমাদের আক্রমণ করা হতে পারে। এমনকী আমরা খাবার কেনার জন্য বাইরেও পা রাখতে পারিনি এখনও। আমরা এখানে থাকতে চাই না। মুর্শিদাবাদে ফিরে যেতে চাই"। হালিম শেখের বাবা পাঁচু শেখও ছেলের সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, "আমার ছেলে বেঁচে আছে জেনে স্বস্তি পেয়েছি। আমরা চাই সে সুস্থ শরীরে এখানে ফিরে আসুক"। দিল্লিতে শ্রমিকের কাজে কর্মরত ইমারুল শেখ বলেন, "...এমনও হয়েছে যে অনেকে আমাদের দরজায় অনেকবার ধাক্কা দিয়েছে! আমরা কোনও শব্দ করিনি। আমরা এখান থেকে পুলিশকে উদ্ধার করার জন্য আবেদন করছি”।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন