পূর্ব লাদাখে ফের চিনা আগ্রাসন? ফের ভারতীয় ভূখণ্ডের মধ্যে চিনা তাঁবুর হদিশ মিললো। পূর্ব লাদাখের ডেমচকে চারদিং নালার পাশে চিনারা তাঁবু গেরে রয়েছে বলে নজরে এসেছে ভারতীয় সেনার। এক সরকারি আধিকারিকের কথায়, তাঁবু দখলকারীরা 'তথাকথিত নাগরিক'। ভারতের তরফে এদের ফিরে যেতে বলা হলেও ডেমচকে 'তাঁদের উপস্থিতি রয়ে গিয়েছে' বলে দাবি করেছেন ওই সরকারি আধিকারিক।
এর আগেও দুই দেশের সেনাদের ডেমচকে মুখোমুখি হতে দেখা গিয়েছিল। ৯০-এর দশকে ভারত-চিন যৌথ কার্যকরী গোষ্ঠীর বৈঠকেদুই দেশই মেনে নেয় য়ে ডেমচক এবং ট্রাই হাইটসের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি) বিতর্কিত অংশ। পরে, মানচিত্রের আদান-প্রদানের মাধ্যমে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার বিভিন্ন ধারণার ভিত্তিতেটি অঞ্চল দু'টি স্বীকৃত হয়েছিল।
তবে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার বিভিন্ন জায়গা নিয়ে দুই দেশের মতবিরোধী এখনও রয়েছে। গত বছর গালওয়ান সংঘর্ষের পর ভারত-চিন সেনা ও কূটনীতিক পর্যায়ে বৈঠক চলছে। সেখানেই পূর্ব লাদাখের আরও পাঁচাটি আঞ্চল দুই দেশের বিরোধের ক্ষেত্র হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। এগুলো হল, গালওয়ান উপত্যকার কেএম১২০, শায়োক সুলা অঞ্চলের পিপি১৫, পিপি১৭এ, রিচিন লা এবং রেজ্যাং লা।
গত বছর গালওয়ান সংঘর্ষের পর সীমান্ত বিরোধ নিরসনে ভারত-চিন সেনা বৈঠক শুরু হয়। কয়েক রাউন্ড তা চলে। একাদশতম বৈঠকটি হয় চলতি বছর এপ্রিলে।তারপর থেকেই অবস্য কয়েক মাস ধরে স্তব্ধ রয়েছে সেই বৈঠক। যদিও সোমবার দ্বাদশ দফার কর্পস কমান্ডার-পর্যায়ের আলোচনার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিল লাল-ফৌজ। কিন্তু ভারত সেই আলোচনা কয়েক দিনের জন্য স্থগিত রাখার আ্জি জানায়। কারণ ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিজয় স্মরণে ২৬ জুলাই কারগিল দিবস হিসাবে পালন করা হয়। ভারতীয় সেনার কাছে ওই দিন অত্যন্ত স্মরণীয়। ফলে বৈঠক পিছনোর কথা বলা হয়।
এক সরকারি আধিকারিকের কথায়, আনুষ্ঠানিকভাবে দুই দেশের সেনা বৈঠক না হলেও ভারতৃচিন সেনার হটলাইনে যোগাযোগ রয়েছে। বৈঠক ঘিরে স্থবিরতা শুরুর পর থেকে দৌলত বেগ ওল্ডি ও চুশুলে হটলাইনে দু'তরফে প্রায় ১,৫০০ বার হটলাইনে মতবিনিময় করেছে।
এর আগহে বৈঠকগুলো থেকে কোনও নির্যাস বেরোয়নি। কারণ, ভারতে দুই দেশের বিরোধের জায়গাগুলো থেকে সেনা প্রত্যাহারে প্রথমে জোর দিয়েছে। বদলে চিন চেয়েছে অতিরিক্ত সেনা বিরোধের অঞ্চল ছেড়ে বেস পয়েন্টে ফিরে যাক। এক শীর্ষ সরকারি আধিকারিকের কথায়, 'বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিতি স্থিতিশীল।' এচাড়াও তাঁর দাবি, 'এবছর ফেব্রুয়ারির পর থেকে চfন কর্তৃক কোনও সীমান্ত লংঘন হয়নি বা দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে মুখোমুখি কোনও সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেনি।' তাঁর কথায়, 'আপোস রফার মাধ্যমে চিনা সেনা সরে যেতে চায়। তাই বলা যায় সেনা প্রত্যার হবেই কিন্তু বিষয়টি সময়সাপেক্ষ।'
বর্তমানে সীমান্তে মুখোমুখি দুই দেশের সেনা কোথাউ অবস্থান করছে না বলেই জানিয়েছেন সরকারি আধিকারিক। তাঁর মতে, আস্থাহীনতাই এখন সমাধানের পথে প্রধান অন্তরায়। ফলে ভারত-চিন উভয়ই পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা অঞ্চলে প্রায় ৫০ হাজার সেনা মোতায়েন করে রেখেছে।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন