অগ্নিগর্ভ মণিপুর। সেসব দেখে, সশস্ত্র বাহিনীর (বিশেষ ক্ষমতা) আইন বা আফস্পা-র মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়িয়ে দিল প্রশাসন। এই আইন পার্বত্য রাজ্যের উঁচু পার্বত্য জেলাগুলোয় বলবৎ থাকবে। বাদ থাকছে কেবল উপত্যকার জেলাগুলির ১৯টি থানা এলাকা। স্থিতাবস্থা রাখা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থতির অগ্রগতির কথা মাথায় রেখে এই ব্যবস্থা নেওয়া হল। বুধবার এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে। তবে, বিজ্ঞপ্তি বুধবার জারি হলেও ১ অক্টোবর থেকে বিজ্ঞপ্তিটি কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ছয় মাস পর পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক (এমএইচএ) আইনটি প্রত্যাহার করা হবে কি না, সিদ্ধান্ত নেবে। মণিপুর সরকারের স্বরাষ্ট্র বিভাগ জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীগুলো হাতে হাতে মিলিয়ে কাজ করবে। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে আর, আলাদাভাবে আইন-শৃঙ্খলার মূল্যায়ন করা হচ্ছে না।
পরিস্থিতি ক্রমশ শান্তই হয়ে আসছিল। কিন্তু, এর মধ্যেই সোশ্যাল সাইটে দুটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে। ওই ছবি দুটিতে দেখা গিয়েছে, দুটি ছেলে পাশাপাশি বসে আছে। ওই দুটি ছেলে বেশ কিছুদিন ধরে নিখোঁজ ছিল। ছেলেদুটির পিছনে দাঁড়িয়ে আছে সশস্ত্র ব্যক্তি। যেখানে ছেলেদুটি বসে আছে, তার চারপাশে সবুজ এলাকা। অন্য ছবিতে দেখা গিয়েছে, ছেলে দুটি পাশাপাশি মাটিতে পড়ে রয়েছে। তার মধ্যে একটি ছেলের মাথা নেই। এই ছবি ছড়িয়ে পড়ার পরই ফের নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে মণিপুরে। অবস্থা দেখে, তড়িঘড়ি ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় প্রশাসন। তারপরই সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইনের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।
আরও পড়ুন- কানাডা-ভারত টানাপোড়েন! মোদী সরকারের পাশে দাঁড়িয়ে ট্রুডোদের গালিগালাজ শ্রীলঙ্কার, কিন্তু কেন?
মণিপুরে সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন নতুন কিছু নয়। 'অশান্ত এলাকা' তকমা দিয়ে ১৯৮০ সাল থেকেই মণিপুরে সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন বলবৎ করা হয়েছিল। ২০০৪ সালে থাংজামা মনোরমা নামে ৩২ বছর বয়সি এক মহিলাকে হত্যার পর মণিপুরে সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ তীব্র আকার ধারণ করে। তারপরই ইম্ফলের কিছু অংশ থেকে এই বিশেষ ক্ষমতা আইন প্রত্যাহার করা হয়। ২০২২ সালে মণিপুরের আরও অন্যান্য অঞ্চল থেকে সামরিক বাহিনীর এই বিশেষ ক্ষমতা আইন প্রত্যাহার করা হয়। ২০২৩ সালের ১ এপ্রিল, ১৯টি থানা এলাকা থেকেও এই বিশেষ ক্ষমতা আইন তুলে নেওয়া হয়। এই থানা এলাকাগুলোয় মেইতেই সম্প্রদায়ের বাস।