রাম নবমীর মিছিলে পাথর ছোড়া, অশান্তি, ভাঙচুরের অপরাধ। তার শাস্তি হিসাবে মধ্যপ্রদেশের খারগোনে শিবরাজ সিং চৌহানের প্রশাসন বিক্ষোভকারীদের বাড়ি-দোকান বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের দোকান ভেঙেছে প্রশাসন। সোমবারের এই উচ্ছেদ অভিযানে জানা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়িও ভেঙে দিয়েছে প্রশাসন।
খারগোনের খাসখাসওয়াড়ি এলাকায় রাম নবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র পরিস্থিতি তৈরি হয় রবিবার। তার পরেরদিনই জেলা প্রশাসন বিনা নোটিসে বুলডোজার নিয়ে হাজির হয়। শুরু ভাঙাভাঙির কাজ। এক পরিবার অভিযোগ করেছে, প্রশাসন অবৈধ বাড়ির দাবি করে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় তৈরি বাড়ি ভেঙে দিয়েছে। বিড়লা মার্গে অবস্থিত সেই বাড়ি হাসিনা ফাখরু নাম এক মহিলার। তিনি দাবি করেছেন, তাঁর স্বামী মারা যাওয়ার আগে ওই বাড়ি প্রশাসন থেকে পেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ আনা ঠিকাদারের রহস্যমৃত্যু
দাবির স্বপক্ষে বাড়ির নথিও দেখিয়েছেন তিনি। এরকম মোট ১২টি বাড়ি ভাঙা পড়েছে সোমবার। মোট ১৬টি বাড়ি এবং ২৯টি দোকানঘর অবৈধ সম্পত্তি বলে ভেঙে দিয়েছে প্রশাসন। হাসিনা ফাখরু এত বড় ক্ষতিতে ভেঙে পড়েছেন। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেছেন, "সোমবার সকালে পুরসভার কর্মীদের একটা দল বুলডোজার নিয়ে আসে। আমাকে বাড়ি থেকে ধাক্কা মেরে বের করে দেয়, তার পর দেওয়াল ভাঙতে শুরু করে। দেওয়ালেই পিএম আবাস যোজনার ফলক লাগানো ছিল। কয়েক মিনিটের মধ্যে গুঁড়িয়ে দেয় বাড়ি।"
সাত সন্তানকে নিয়ে বাড়িতে থাকতেন হাসিনা। তিন দশক ধরে এই জমিতে রয়েছেন। শ্রমিকের কাজ করেন তাঁর ছেলে আমজাদ খান। তিনি বলেছেন, "২০২০ সাল পর্যন্ত আমাদের বাড়ি কাচা ছিল। ওই বছর আমাদের আবেদন মঞ্জুর করে কেন্দ্র। আবাস যোজনার টাকায় পাকা বাড়ি তৈরি হয়। সরকার থেকে আড়াই লক্ষ টাকা পাই। বাকি জমানো এক লক্ষ টাকা দিয়ে বাড়িটা তৈরি হয়।"
আরও পড়ুন রাম নবমীর মিছিলে অশান্তি, বিক্ষোভকারীদের বাড়ি-দোকানে বুলডোজার চালাল শিবরাজের পুলিশ
প্রমাণ হিসাবে বাড়ির সম্পত্তি করের রসিদ, তেহসিলদারের আবেদন পত্র, যোগ্যতার হলফনামা এবং মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের দেওয়া চিঠি দেখিয়েছেন। মঙ্গলবার ধ্বংসস্তূপ থেকে কিছু যদি পাওয়া যায় তা নিতে এসেছিলেন আমজাদ। এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জেলা আধিকারিক পি অনুগ্রহ দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, "গ্রহীতাকে টাকা দেওয়া হয়েছিল বাড়ি তৈরি করার জন্য। কিন্তু যে জমিতে বাড়ি তৈরি করার কথা সেখানে না করে অন্য সরকারি জমিতে তিনি বাড়ি তৈরি করেন। ওই জমির দাম ২ কোটি টাকা। আমরা শুধু দখল করা জমি খালি করেছি।"