মণিপুরে দুই মহিলার যৌন নিপীড়নের অভিযোগে দায়ের করা অভিযোগ এবং ঘটনার একটি ভিডিও প্রকাশের মধ্যে ৬২ দিনের ব্যবধান। এই ৬২ দিনে থানায় এফআইআর দুটিতে ধুলো পড়ার শামিল হয়েছিল। এমনকি পাহাড়ি রাজ্যে দুই জনজাতির হিংসা নিয়ে বেশ কয়েকটি উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল। নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনাও হয়। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি।
মণিপুরে দুই মহিলাকে গণধর্ষণ ও বিবস্ত্র করে হাঁটানোর প্রতিবাদে নিন্দায় সরব হয় দেশ। ৭৮ দিনের নীরবতা ভাঙতে বাধ্য হয় প্রধানমন্ত্রী মোদী। এর মাঝেই মণিপুরে আরও একটি এফআইআর, ধর্ষণ, ২ যুবতীকে হত্যার মত মারাত্মক অভিযোগ সামনে এসেছে।পুলিশি তদন্ত নিয়ে এখনও অন্ধকারে রয়েছে তাদের পরিবার। পুলিশের একটি সূত্র দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছে যে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। পুলিশের ডিজি রাজীব সিং তদন্ত নিয়ে কোন মন্তব্য করেননি। ইম্ফল পূর্বের পুলিশ সুপার শিবকান্তও এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন।
মণিপুরে মহিলাদের নগ্ন করা ঘোরানো ও ধর্ষণের ভিডিও দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। ঠিক তার কিছুদিনের মাথায় ১৬ মে, ২১ এবং ২৪ বছর বয়সী দুই যুবতী কুকি-জোমি সম্প্রদায়ের দুই মহিলার মৃত্যুর বিষয়ে একটি জিরো FIR দায়ের করা হয়। কাংপোকপির এক থানায় দায়ের করা FIR-এ তরুণীর মায়ের অভিযোগ খুনের আগে ধর্ষণ করা হয় মেয়েকে। একই সঙ্গে পরিবারের তরফে অপহরণের অভিযোগও আনা হয়। অভিযোগে, তরুণী মা বলেছিলেন যে দুই তরুণী, যারা ইম্ফল পূর্বে একটি ভাড়া বাড়িতে ছিলেন, সেখানেই ৫ মে "কিছু অজানা ব্যক্তি তাদের ধর্ষণ করে এবং ভয়ঙ্কর নির্যাতনের পর" ২জনকে "নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল"।
এই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর প্রায় এক মাসেরও বেশি সময় পর এফআইআর টি ১৩ জুন ইম্ফল পূর্ব জেলার পোরোম্পট থানায় স্থানান্তরিত করা হয়। শুক্রবার দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা বলার সময়, ২১ বছর বয়সী তরুণীর ভাই জানিয়েছেন, ইম্ফল ইস্টে পুলিশের কাছে পরিবার ৫ই মে FIR দায়ের করে। তার পরে প্রায় দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলে, পুলিশ তাদের দুটি মৃতদেহের ছবি পাঠায়, তা দেখেই পরিবারের তরফে তরুণীকে শনাক্ত করা হয়। ভাইয়ের আরও অভিযোগ এখনও পরিবার মৃতদেহের ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পায়নি।
গত ৪ মে থৌবালের উপত্যকা জেলায় মহিলাদের ছিনতাই এবং নগ্ন করে প্যারেড করানো হয়েছিল, এবং ১৮ মে একজন নির্যাতিতার স্বামীর দ্বারা একটি পুলিশ অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল৷ তবুও, বুধবার ভিডিওটি প্রকাশের পরেই পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে, ভিডিওতে দেখা পুরুষদের মধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করেছে৷
মুখ্যমন্ত্রী, ডিজিপি রাজীব সিং এবং মণিপুর ইউনিফাইড কমান্ডের প্রধান কুলদীপ সিং রাজ্য-স্তরের নিরাপত্তা পর্যালোচনা সভায় এই বিশেষ কেসটি তাদের নজরে আনা হয়েছিল কিনা সেই প্রশ্নের উত্তর দেননি। যখন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিল যে কেন পুলিশের কাজ করতে দুই মাসেরও বেশি সময় লেগেছে, থাউবালের পুলিশ সুপার সচিদানন্দ বলেছেন যে “প্রমাণের অভাবের” কারণে পুলিশ এখন পর্যন্ত “কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি”।