করোনার জেরে বেসামাল হয়ে পড়েছিল বিশ্বের অর্থনীতি। এই পরিস্থিতি থেকে এখনও গোটা বিশ্ব উঠে আসতে পারেনি। তার পরও ভারতের দরিদ্র মানুষকে চরম পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়নি। তার কারণ, খাদ্য নিরাপত্তা। যা কার্যত হতদরিদ্র মানুষের কাছে বিমার মতোই কাজ করেছে। এক নথিতে একথা মেনে নিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভাণ্ডার (আইএমএফ)।
আইএমএফের হয়ে নথিটি তৈরি করেছেন কার্যনির্বাহী অধিকর্তা সুরজিত ভাল্লা। তিনি ভারত, ভুটান, বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কা- এই চার দেশে আইএমএফের হয়ে দায়িত্বে আছেন। অতীতে প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের আংশিক সময়ের সদস্যও ছিলেন। তাঁর সঙ্গে এই নথি তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন নিউ ইয়র্কের বাসিন্দা ভারতীয় অর্থনীতিবিদ করণ ভাসিন ও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রাক্তন মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ বীরমণি।
তাঁরা এই নথিতে জানিয়েছেন, প্রাক মহামারীর বছরে ২০১৯ সালে ভারতে চরম দারিদ্র্য ০.৮ শতাংশের মতো কম ছিল। আর, ২০২০ সালে মহামারীর বছরেও খাদ্য নিরাপত্তার জন্যই ভারতে হতদরিদ্রের সংখ্যা বাড়েনি। বিশ্ব ব্যাংকের সংজ্ঞা অনুযায়ী, দৈনিক ১.৯ ডলারের কম রোজগারকারী মানুষ হলেন গরিব। ২০১১ সালের ক্রয়ক্ষমতার হিসেব অনুযায়ী, দরিদ্রের এই সংজ্ঞা বিশ্বব্যাংক নির্ধারণ করেছে। ২০১৯ সালে দেশে হতদরিদ্রের শতাংশ ছিল ০.৭৬। ২০২০ সালে সেটা বেড় হয়েছে ০.৮৬। অর্থাত্, মানুষের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। তা পৌঁছে গিয়েছে দৈনিক ৩.২ ডলারে।
২০২০ সালে চালু হয়েছে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা। গত মাসে এই যোজনার সময়সীমা চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনায় কেন্দ্রীয় সরকার বিনামূল্যে প্রতিমাসে ৫ কেজি খাদ্যশস্য সরবরাহ করে। অতিরিক্ত বিনামূল্যের শস্য, জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী প্রতি কিলোগ্রামে ২ থেকে ৩ টাকা ভর্তুকিযুক্ত হারে দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভাণ্ডার মনে করছে, খাদ্যে ভর্তুকি পাওয়ায়, আর্থিক বৈষম্য কিছুটা হলেও কমেছে। গত তিন বছর ধরে হতদরিদ্রের শতাংশ ১ অথবা তার চেয়ে কম রয়েছে খাদ্য নিরাপত্তার সৌজন্যেই।