কেরলের পাঠানমথিত্ত জেলার এলানথুর গ্রামে দুই মহিলাকে নরবলি দেওয়ার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হল। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, দুই মহিলাকে অপহরণ করে মুণ্ডচ্ছেদ করা হয়েছে। তারপর তাদের দেহ মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। তান্ত্রিক ক্রিয়াকলাপের অঙ্গি হিসেবে এই নরবলি বলেই প্রাথমিক তদন্তের পর জানতে পেরেছে পুলিশ। ঘটনায় এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি, আরও দু'জনকে হেফাজতে নিয়েছেন তদন্তকারীরা।
Advertisment
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত তান্ত্রিকের নাম ভগবাল সিং। অভিযুক্ত দীর্ঘদিন ধরে ওই গ্রামে ঝাড়ফুঁক করত। এমনকী, বাড়িতেও ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে রোগীদের সুস্থ করে তোলার দাবি করত অভিযুক্ত। অভিযুক্তের স্ত্রী লায়লাকে এলানথুর থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি, পেরুম্বাভুর থেকে রাশেদ ওরফে শফি নামে অপর এক ব্যক্তিকেও গ্রেফতার করেছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে, রোজলিন এবং পদ্মা নামে এরনাকুলাম জেলার দুই লটারি বিক্রেতা জুন এবং সেপ্টেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। ওই দুই মহিলার সন্ধান চলছিল। তার মধ্যে পদ্মার মামলার তদন্তের অংশ হিসেবেই পুলিশ এই ‘নরবলি’র ব্যাপারটা জানতে পারে।
এই ব্যাপারে কোচির পুলিশ কমিশনার সিএইচ নাগারাজু বলেন, 'অভিযুক্ত তান্ত্রিক মামলার প্রধান আসামি। তার স্ত্রী-ও ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল। তাই তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত শফি নামে তৃতীয়জনই দুই মহিলাকে ভুলিয়ে, তাদের থেকে অর্থ নিয়ে সমস্যা মেটানোর নাম করে ওই তান্ত্রিকের কাছে নিয়ে গিয়েছিল। অত্যন্ত নিষ্ঠুর পদ্ধতিতে দুই মহিলাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহত দুই মহিলার দেহ কবর থেকে উদ্ধার করা হবে।' নাগারাজু বলেন, 'আমরা প্রথম থেকেই সন্দেহ করেছিলাম যে এটা কোনও সাধারণ নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা নয়। এটা অত্যন্ত জটিল মামলা। এর অনেকগুলো স্তর আছে।'
পুলিশ কমিশনার নাগারাজু বলেন, 'তান্ত্রিক পদ্ধতিতে বলি দিলেও এই নরবলির মূল উদ্দেশ্য ছিল তান্ত্রিক দম্পতির আর্থিক সচ্ছলতা। আমরা ইতিমধ্যে অভিযুক্ত তান্ত্রিক দম্পতি ও তাদের এজেন্টের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পেয়েছি। অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে দুই মহিলাকে ওই দম্পতি হত্যা করেছে। সম্প্রতি এই দম্পতি একটি আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছিল। ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে এবং সংকট থেকে মুক্তি পেতেই তারা ওই মহিলাদের বলি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।' মৃতদেহগুলোকে টুকরো টুকরো করে ওই দম্পতি বাড়ি সংলগ্ন চাষের জমিতে কবর দিয়েছিল।