Advertisment

এনআইএ-র পুলওয়ামা চার্জশিটে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট-মাসুদের আত্মীয়ের কণ্ঠস্বরের প্রমাণ

পুলওয়ামাকাণ্ড নিয়ে মঙ্গলবারই চার্জশিট পেশ করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

পুলওয়ামাকাণ্ড নিয়ে মঙ্গলবারই চার্জশিট পেশ করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা।

পুলওয়ামাকাণ্ড নিয়ে মঙ্গলবারই চার্জশিট পেশ করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। পুলওয়ামা হামলাকে ওই চার্জশিটে 'পাকিস্তান স্থিত জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের নেতাদের দ্বারা সুপরিকল্পিত অপরাধমূলক যড়যন্ত্র' বলে বর্ণনা করা হয়েছে। সেখানে পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণও পেশ করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। চার্জশিটে মাসুদ আজহারের ভাই রউফ আসগর হামলার পরিকল্পনার সময়ের কণ্ঠস্বর, আজহারের ভাগ্নে- প্রধান ষড়যন্ত্রকারী মহম্মদ উমর ফারুককে দেওয়া পাকিস্তান সরকারের পরিচয়পত্রের কথা বলা হয়েছে।

Advertisment

এছাড়াও প্রমাণ হিসাবে ১০ মাস ধরে পুলওয়ামা হামলার যড়যন্ত্র থেকে তা রূপায়ণের প্রতিটি পদক্ষেপের ছবি চার্জশিটে তুলে ধরা হয়েছে। এখানে, পাকিস্তানের কোথায় হোয়াট্যাপ কল করা হয়েছিল, উমর ফারুকের পাকিস্তানি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে কয়েক লক্ষ টাকা কোথা থেকে এসেছিল- তারও বিবরণ দেওয়া হয়েছে।

গত বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপি কনভয়ে হামলা হয়। প্রায় ২০০ কেজি বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি নিয়ে হামলা চালায় আত্মঘাতী জঙ্গি আদিল আহমেদ দার। নিহত হন ৪০ জওয়ান। দার স্থানীয় জঙ্গি ছিল বলে প্রমাণ মেলে।

১৩,৮০০ পাতার চার্জশিটে মাসুদকে পুলওয়ামা জঙ্গি হামলার মূল ষড়যন্ত্রকারী বলা হয়েছে। এ ছাড়াও মাসুদের দুই ভাই রউফ আসগর, আম্মার আলভি এবং উমর ফারুক-সহ মোট ১৯ জনের নাম রয়েছে। এই ১৯ জনের মধ্যে ৬ জন মৃত ও ৭ জন ধৃত। জীবীতদের মধ্যে মাসুদ আজহার, রউফ আসগর ও আম্মার আলভি পাকিস্তানে রয়েছে। বাকি ৩ জন স্থানীয় বলে জানিয়েছে এনআইএ।

মাসুদ আজহারের ভাই ইব্রাহিম আতারের ছেলে উমর ফারুক ১৯৯৯ সালে কন্দহর বিমান ছিনতাইয়ের মূল অভিযুক্ত। কাশ্মীরে সেনা বাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে নিহত হয় উমর ফারুক। বিবৃতিতে এনআইএ জানিয়েছে, 'মূল অভিযুক্ত ভিজ। ২০১৬-১৭ সালে উমর ফারুক বিস্ফোরণ প্রশিক্ষণের জন্য আফগানিস্থানে গিয়েছিল।'

এনআইএ সূত্র মারফত জানা গিয়েছে যে, ফারুক সহ জঙ্গি সংগঠন জইশ-এর পাঁচ শীর্ষ নেতা ২০১৮ সালে জম্মুর সাম্বা সেক্টরের সুড়ঙ্গ দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিল। পুলওয়ামা হামলার প্রস্তুতির জন্যই তা জঙ্গিদের এই পদক্ষেপ ছিল। এনআইএ চার্জশিটে তার উল্লেখ রয়েছে।

চার্জশিটে সায়েন্টিফিক ও ফরেনসিক প্রমাণ পেশ করা হয়েছে বলে এনআইএ সূত্রে খবর। এনআইএ-এর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, 'ফারুক ও তার চার সঙ্গী এনকাউন্টারে নিহত হওয়ার পর তাদের থেকে উদ্ধার ফোন স্ক্যান করে হামলার ষড়যন্ত্রের পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য ও ছবি মিলেছে। সীমান্তে সুড়ঙ্গ কেমন দেখতে তারও ছবি সেখানে রয়েছে। হামলাকারীদের থবি সহ তারা যে গাড়ি ব্যবহার করেছিল তার ছবি, আইডি-র ভিডিও, এমনকী তার মড়হার ছবি পর্যন্ত পাওয়া গিয়েছে। ফিদাঁয়ে হামলার আগে আদিল দারকে পাকিস্তানে পাঠানো হয়েছিল।'

অন্য এক এনআইএ- আধিকারিক বলেন, 'উমর ফারুকের ফোন থেকে পাওয়া জঙ্গিদের হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা চালাচালি, কল রেকর্ডিং, বিস্ফোরকের ছবি, কী ভাবে তা আনা হয়েছিল— সবই জানা গিয়েছে। পুলওয়ামায় ব্যবহৃত বোমাটি বানাচ্ছে তিন জঙ্গি, মিলেছে এমন ছবিও। হামলার পরে তার প্রশংসা করে মাসুদের অডিও এবং ভিডিও বার্তারও উল্লেখ রয়েছে চার্জশিটে।'

হামলার অর্থ কোথা থেকে এল? তার তদন্ত এখনও অব্যাহত। তবে জানা গিয়েছে, গাড়িতে বিস্ফোরণের সময় ফারুকের নামে পাকিস্তানের অ্যালায়েড ব্যাংক ও মিজান ব্যাংকে কয়েক লাখ টাকা ট্রান্সফার হয়। সেই টাকা কীভাবে কাশ্মীরে এল? আপাতত তাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে এনআইএ সূত্রে খবর। এ ছাড়া পাক সরকারি পরিচয়পত্রটিও উল্লেখযোগ্য নথি হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।

এনআইএ তদন্তে উঠে এসেছে যে, পুলওয়ামার পর আরও একবার আত্মঘাতী হামলার ষড়যন্ত্র করেছিল জইশ-ই-মহম্দ। কিন্তু বালাকোট এয়াস্ট্রাইকে মূল ষড়যন্ত্রকারী ফারুক নিহত হওয়ায় তা আর করা হয়নি। আন্তর্জাতিক চাপের কাছে পাকিস্তানও কিছুটা নরম হয়।

শাকির বাসির, ইনশা জান, পীর তারিক আহমেদ শা, আহমেদ কুচে- জঙ্গিদের সহায়তা ও আশ্রয় দানের জন্য এনআইএ চার্জশিটে এই চার স্থানীয়েরও নাম রয়েছে। বিশেষ বিতারপতি সুনীত গুপ্তা ১লা সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন স্থির করেছেন।

Read in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

NIA Masood Azhar Pulwama Attack
Advertisment