মাদককাণ্ডে এনসিবি অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তীকে গত বছর গ্রেফতার করেছিল। আর এবার এনসিবি জালে খোদ শাহরুখ খানের ছেলে আরিয়ান খান। উভয় গ্রেফতারির ক্ষেত্রেই কিছু মিল রয়েছে। গ্রেফতারির সময় এই দু'জনের থেকেই কোনও মাদক উদ্ধার হয়নি। কিন্তু, এঁরা মাদক সেবন করেছিল কিনা তা নিশ্চিত হতেও তাঁদের রক্তের নমুনা পরীক্ষায় আগ্রহ দেখায়নি নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো। উভয় ক্ষেত্রেরই মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটকেই হাতিয়ার করেছে এনসিবি, এবং তার ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয় রিয়া চক্রবর্তী ও আরিয়ান খানকে।
গত বছর সুশান্ত সিং রাজপুত মৃত্যু মামলায় নাম উঠে আসে অভিনেতার প্রাক্তন বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীর। তাঁকে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করে। এরপর ইডি-র দেওয়া তাঁর হোয়াটসঅই্যাপ চ্যাটের তথ্যানুশারে রিয়াকে গ্রেফতার এনসিবি করেছিল।
এনসিবির তরফে যুক্তি ছিল যে, হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ও ফোনের কললিস্ট থেকে সাফ গয় যে সুশান্ত সিং রাজপুতের জন্য রিয়াই মাদক সংগ্রহ করতেন। পরে সংস্থা জানায় রিয়ার আর্থিক লেনদেনও মাদক কেনার প্রমাণ রয়েছে বলে দাবি করা হয়।
এনসিবি রিয়ার বিরুদ্ধে মাদক সেবন, মাদর হেতু অর্থ চালান ও অপরাধীকে আশ্রদ দানের অভিযোগ আনা হয়। সংস্থা কোর্টে জানায়, রিয়া চক্রবর্তী মাদক সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য। এজন্য সুশান্তের জন্য তিনি মাদক সংগ্রহ করতেন।
গত বছর অক্টোবরেই অবশ্য দিল্লি হাইকোর্ট রিয়ার জামিন মঞ্জুর করে। কোর্ট সাফ জানায়, অভইনেত্রীর বিরুদ্ধে আনা এনসিবির মাদক সরবরাহকারীর অভিযোগের কোনও প্রমাণ নেই। মাদক কেনা বা সংগ্রহেরও কোনও প্রমাণ মেলেনি।
অন্যদিকে, ক্রজ জাহাজে মুম্বই থেকে গোয়া যাওয়ার পথে গ্রেফতার করা হয় শাহরুখ পুত্র আরিয়ান খানকে। এনসিবি দাবি করে, আরিয়ানের সঙ্গে থাকা আরবাজ মার্চেন্টের কাছ থেকে ৫ গ্রাম চরস মিলেছে। আরিয়ানের হোয়াটঅ্যাপ চ্যাটেও মানদ সেবনের প্রমাণ রয়েছে। দাবি করা হয় আরিয়ান তাঁর বয়ানেও একথা কবুল করেছে।
আরবাজ মার্চেন্টের আইনজীবী কোর্টে জানান, হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে আলাদাভাবে কোনও প্রমাণ নয়, চ্যাটে আইনভঙ্গের মতো বার্তা বার্তা প্রেরণ ও বাস্তবে আইন লংঘন একই কাজ নয়। কিন্তু, পাল্টা অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেল অনিল সিংয়ের যুক্তি ছিল, চ্যাটে প্রচুর পরিমাণে কঠিন মাদকের কথা উল্লেখ রয়েছে। ব্যক্তিগত কারণে এত পরিমাণ মাদক কেই সংগ্রহ করতে পারে না বলে দাবি এনসিবির। কোর্টে সেই হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটও জমা করেছে এনসিবি কিন্তু তা প্রকাশ্যে আনা হয়নি।
মার্টেন্টের আইনজীবী কোর্টে জানান, আব্বাস ও আরিয়ানের মোবাইল ফোন দুটি নেওয়ার সময় তাবিকৃতও করা হয়ে থাকতে পারেষ পাল্টা এনসিবির যুক্তি, ফোনগুলি ধৃতরাই তাদের হস্তান্তর করেছিল।
হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট কী প্রামণের হাতিয়ার হতে পারে? এনিয়ে আগেও নানা বিতণ্ডা উঠে এসেছে। গত বছর হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের ভিত্তিতে মুম্বই পুলিশ অভিনেতা ধ্রুব তাহিলকে গ্রেফতার করেছিল। সে মাদক সরবরাহকারী বলে অভিযোগ করা হয়। তবে, কোর্ট জানায়, মাদক চোরাচালান বা এই সংক্রান্ত কোনও ষড়যন্ত্রের সঙ্গে অভিনেতার যুক্ত থাকার কোনও প্রামাণ পাওয়া যায়নি।
মাদক সংক্রান্ত অভিযোগ থাকলে অভইযুক্তদের রক্তের নমুনা পরীক্ষা হয়ে থাকে। কিন্তু রিয়া বা আরিয়ানের গ্রেফতারের সময় তা হয়নি। কেন হল না পরীক্ষা? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন