হিমাচল প্রদেশের সিমলার সামার হিল এলাকায় মন্দির ধসের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১২টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে উদ্ধারকারি দলের সদস্যরা। এসডিআরএফ এবং সেনাবাহিনীর উদ্ধারকারী দল নাগাড়ে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে।
Advertisment
সামার হিল এলাকায় বিরাট তিনতলা বাড়িতে বাস শর্মা পরিবারের। পরিবারের একাধিক সদস্যের মৃত্যু, নিখোঁজের পর তিনতলা বাড়িতে এখন শশ্মানের নীরবতা। তিন শিশু সহ পরিবারের সাতজন সদস্য দুর্ঘটনার সময় মন্দিরের ভিতরেই ছিলেন। ইতিমধ্যেই উদ্ধার করা হয়েছে পরিবারের চার সদস্য’র মৃতদেহ। তিন সদস্য পবন শর্মা, অর্চনা শর্মা এবং বছর পাঁচেককের খুদে সদস্য এখনও নিখোঁজ। উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে পরিবার। যদিও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী জানিয়েছে তাদের তিনজনের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্রমশ কমে আসছে। তাও মন যেন মানতেই চাইছে না। সকাল থেকেই নিখোঁজ প্রিয়জনদের খোঁজ করছিলেন করণদীপ শর্মা।
করণদীপ বলেন, ‘আমার কাকা পবন শর্মা (৬০), তাঁর পুরো পরিবার— স্ত্রী সন্তোষ শর্মা (৫৭), ছেলে আমন শর্মা (৩২), পুত্রবধূ অর্চনা শর্মা (২৭) এবং দেড় থেকে ১২ বছরের মধ্যে বয়সি তিন নাতনি এই ভয়াবহ দুঘর্টনার সময় মন্দিরে ছিল। বছর ৩৩-এর করণদীপ আইটি পেশাদার। কাজ করে চণ্ডীগড়ে। তিনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত, আমার কাকিমা সন্তোষ শর্মা, খুড়তুতো ভাই আমন শর্মা ও তাঁর এক নাতনি শেষ্যার মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে। পবন শর্মা, অর্চনা শর্মা এবং আমার দুই ভাইঝিও এখনও নিখোঁজ। আমি আশা করি, তাঁরা কোথাও নিরাপদেই আছে।’
মঙ্গলবার উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন পবন শর্মার ভাড়াটেদের মৃতদেহ। মানসী হরিশ, যিনি সিমলার হিমাচল প্রদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিতের শিক্ষক ছিলেন এবং তার স্বামী হরিশ কুমার যিনি পেশায় একজন আইনজীবী।
পবন শর্মার বড় বোন সুদেশ শর্মা বলেন, "পবন শিব মন্দিরে নিয়মিত যেতেন। তিনি ভগবানে শিবের এক বড় ভক্ত ছিলেন। তিনি প্রায় প্রতিদিনই সেখানে যেতেন, বিশেষ করে শ্রাবন মাসে। গতকাল তিনি মন্দিরে তার পুরো পরিবারকে নিয়ে যান। সেখানে আমাদের ভাড়াটেরাও সঙ্গে যান। তখনই ঘটে যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা”। এসডিআরএফের এসপি (সিমলা), ইলমা আফরোজ বলেছেন, “সকলের সন্ধান না পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান কাজ চলবে”।
এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিমলার লালপানি এলাকায় নতুন করে ভূমিধসের খবর পাওয়া গেছে। চারটি বাড়ি ভুমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং একটি বাড়িতে দুজন আটকে পড়েছেন বলে জানা গিয়েছে। গত দুই দিনে হিমাচল প্রদেশে ভারী বৃষ্টি ও ভুমধসে ৫০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। মঙ্গলবার কুল্লু, মান্ডি, সোলান, সিমলায় হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।