গত ১৮ ফেব্রুয়ারি উত্তর প্রদেশে ৭ দফার বিধানসভা নির্বাচনের মাঝামাঝি সময়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ মৈনপুরিতে বলেছিলেন, ''মেরামতের জন্য বুলডোজার পাঠিয়েছি। ১০ মার্চের পরে তারা আবার কাজ শুরু করলে যারা এখন আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে তাদের সবাইকে চুপ করানো হবে।'' উত্তর প্রদেশের নির্বাচনে ফের একবার বিপুল জয় পেয়েছে বিজেপি। ফের লখনউয়ের তখতে আসীন যোগী আদিত্যনাথ। ফের যোগী-রাজ্যে ফিরেছে বুলডোজার।
মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রথমবার উত্তর প্রদেশের দায়িত্ব নিয়েই গুন্ডারাজ খতমের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যোগী আদিত্যনাথ। রাজ্যের দাগী অপরাধীদের একটি তালিকা তৈরি করে তাঁর প্রশাসন। আত্মসমর্পণ না করায় পুলিশ রেকর্ডে নাম থাকা একাধিক দাগী অপরাধীর বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে আদিত্যনাথের পুলিশের বিরুদ্ধে। এবারের উত্তর প্রদেশের নির্বাচনে যোগীকে "বুলডোজার বাবা" বলেও তোপ দাগতে শুরু করে বিরোধীরা।
তবে বিরোধীদের সেই টিপ্পনি-সমালোচনায় আমল দিতেই নারাজ যোগী। ফের একবার রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর চেনা মেজাজে যোগী সরকার। সম্প্রতি দুটি ধর্ষণের মামলায় দুই অভিযুক্তকে আত্মসমর্পণ করতে বলে পুলিশ। তবে পুলিশের সেই আবেদনে দুই অভিযুক্তই কান দেয়নি। শেষ সুযোগ দিতে দুই অভিযুক্তের বাড়ির দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে বুলডোজার। আত্মসমপর্পণ না করলে বুলডোজার দিয়ে অভিযুক্তদের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি পুলিশের।
বৃহস্পতিবার বিকেলে উত্তর প্রদেশের সাহারানপুরের পুলিশ দুই ভাই আমির (১৯) এবং আসিফ (২২)- এর বাড়িতে একটি বুলডোজার নিয়ে যায়। একটি নাবালিকা মেয়েকে গণধর্ষণ করার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। গত ২৫ মার্চ এই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দয়ের করেন নির্যাতিতার মা। ধর্ষণে অভিযুক্তদের বাবা শরাফত (৫৬)-এর বিরুদ্ধে অভিযোগকারীকে হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধেও পুলিশ মামলা রুজু করেছে।
আরও পড়ুন- রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্বে ভারতের মধ্যস্থতায় আপত্তি নেই, জানালেন রুশ বিদেশমন্ত্রী
ধর্ষণে অভিযুক্ত এই দুই ভাই গ্রামের প্রধানের পরিবারের সদস্য। পরিবারটি এলাকায় প্রভাবশালী বলেই পরিচিত। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষণে অভিযুক্তরা আত্মসমর্পণ না করলে তাদের বাড়ি ভেঙে ফেলা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ, উঠছে এমনই অভিযোগ। একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে একটি বুলডোজার অভিযুক্তদের বাড়ির বাইরের একটি সিঁড়ির তিনটি ধাপ ভেঙে ফেলছে। পুলিশকর্মীরা তা দেখছেন। অভিযুক্তদের সাহায্যে যাতে কেউ না আসেন সেব্যাপারেও নাকি প্রতিবেশীদেরও সতর্ক করেছিল পুলিশ।
স্থানীয় থানার অফিসার বলেছেন, ''প্রভাবশালী পরিবারের অভিযুক্তরা পলাতক থাকলেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘরের সিঁড়ি ভেঙে গেছে। আমাদের এই কাজের ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। ওই এলাকা ছাড়ার আগে আমরা স্পষ্ট করে জানিয়েছিলাম, অভিযুক্তকে কোনও ধরনের সাহায্য করার কেউ চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।''
Read story in English