করোনা অতিমারীর আবহে বদলে যাচ্ছে লাল কেল্লায় চিরাচরিত স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠান। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা থেকে সংক্রমণ রুখতে বলবৎ নানান বিধি বজায় রাখতে স্বাধীনতা দিবসের সমারোহ অনেকটাই ছেঁটে ফেলতে হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। প্রত্যেকবারের মতো এবার আর স্কুলের পড়ুয়াদের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠান দেখতে পাওয়া যাবে না। অতিথি-অভ্যাগত থেকে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সংখ্যাও অন্যান্যবারের তুলনায় অনেকটাই কম হবে। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকে পিপিই কিট পরতে দেখা যাবে।
আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার এক আধিকারিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, 'প্রতিবার লাল কেল্লায় স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতের সংখ্যা থাকে ৯০০-১০০০ জন। এবার অতিমারীর কারণে সেই সংখ্যা কমে হবে আড়াইশ।' তবে অভ্যাগতদের চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করবে প্রতিরক্ষামন্ত্রক।
মন্ত্রী, কূটনীতিক ও অন্যান্য গণ্যমান্যরা ছাড়াও স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে অন্যান্যবার যোগ দেয় প্রায় হাজারেরও বেশি স্কুল পড়ুয়া। তাদের পোশাকে প্রতিফলিত হয় ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা। তবে, এবার আর সেই দৃশ্য দেখা যাবে না। দিল্লি পুলিশের (উত্তর) অতিরিক্ত কমিশনার মণিকা ভরদ্বাজ বলেছেন, 'এনসিসি-র সদস্যরা ছাড়া এবার অনুষ্ঠানে পড়ুয়ারা অংশ নিচ্ছে না। সামাজিক দূরত্ব বিধিতে জোর দেওয়া হচ্ছে ও আধিকারিকরা পিপিই কিট পরবেন। এছাড়া, ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি জীবাণুমুক্তকরণ পয়েন্ট থাকবে।'
তবে স্বাধীনতা উদযাপনের সবকিছু এখনও চূড়ান্ত নয়। সূত্র জানাচ্ছে, 'আমন্ত্রিতের তালিকা, জমায়েতের বহর, চা পানের আয়োজন কোথায় করা হবে তা চূড়ান্ত করা হবে। সম্পূর্ণটাই নির্ভর করছে মধ্য অগাস্টে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির উপর।'
করোনার সঙ্গে লড়াই করে যাঁরা ফিরে এসেছেন এবং যাঁরা প্রতিনিয়ত সংক্রমণ ঠেকাতে লড়াই করছেন, এ বারের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে তাঁদের ‘করোনা বিজয়ী’ হিসেবে সামনে নিয়ে আসা হতে পারে। প্রতিবার এই তালিকায় মন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতা, সরকারি আধিকারিক, বিচারপতি, অসামরিক পদক প্রাপক ও বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গকে দেখা যায়। 'অভ্যাগতদের তালিকা কাটছাঁট করা হবে। জমায়েতে ৬০ থেকে ৯০ জন থাকবেন। বৃষ্টির কারণে মুঘল গার্ডেনে অনুষ্ঠান হবে না। আমন্ত্রিতদের কতজন কর্মী চা বিতরণ করতে পারবেন তাও নির্ধারিত হবে।'
লাল কেল্লায় স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়েছে। এই কাজে নিয়োজিত এক সরকারি আধিরাকির জানিয়েছেন যে, 'সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনেই অভ্যাগতদের জন্য বসার আসন পাতা হবে। প্রস্তুতির জন্য অ্যান্যবার ৭ই অগাস্ট থেকে লাল কেল্লা বন্ধ করা হলেও এবার তা ১লা থেকেই দর্শকদের জন্য বন্ধ থাকবে।'
মহামারীর কারণে মঞ্চ বাঁধার বহু কর্মী দিল্লি থেকে নিজেদের গ্রামে ফিরে গিয়ছেন। ফলে এবার অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিতে বেগ পেতে হচ্ছে। প্রতিবার প্রায় দু'হাজার কর্মী লাল কেল্লার সামনে মঞ্চ তৈরি করে থাকেন। এবার সেই সংখ্যা অর্ধেকেরও কম। বাড়তি মজুরি দিয়ে অনেক কর্মীকে ডাকা হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে খবর।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন