Advertisment

করোনা আতঙ্কে প্লেন টিকিট বাতিল করলে জুটছে মোটা টাকার 'শাস্তি'

এই সংক্রান্ত কোনও স্পষ্ট নীতি না থাকায়, এবং অধিকাংশ এয়ারলাইনই 'ক্যান্সেলেশন ফি' বাতিল করতে রাজি না হওয়ার ফলে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে যাত্রীদের মধ্যে। 

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
coronavirus travel restrictions

প্রতীকী ছবি

করোনাভাইরাস আতঙ্কের জেরে পৃথিবী জুড়ে প্রভাবিত হচ্ছে লক্ষ লক্ষ সফরসূচি, যার ব্যতিক্রম নয় ভারতও। কিন্তু এই আতঙ্কের আবহেও ডোমেস্টিক অথবা আন্তর্জাতিক টিকিট বাতিল বা পরিবর্তন করতে চাইলে দিতে হচ্ছে বড় অঙ্কের 'ক্যান্সেলেশন ফি', সৌজন্যে ভারতের প্রধান কয়েকটি এয়ারলাইন।

Advertisment

ইন্ডিগো এবং গো এয়ারের মতো এয়ারলাইন যাত্রীদের কথা ভেবে কিছুটা ছাড় ঘোষণা করলেও, তাতে সন্তুষ্ট নন গ্রাহকরা। স্পাইসজেট এবং এয়ার ইন্ডিয়া এখনও এ ব্যাপারে কোনও নির্দিষ্ট নীতি ঘোষণা করেনি।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী যদিও জানিয়েছিলেন যে 'ক্যান্সেলেশন ফি' নেবে না এয়ার ইন্ডিয়া, টিকিট বাতিল করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে যে রীতিমতো বহাল তবিয়তে রয়েছে 'ক্যান্সেলেশন ফি', এবং এয়ার ইন্ডিয়ার কর্মীরা জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে কোনোরকম সরকারি নির্দেশ এখনও পান নি তাঁরা।

এই সংক্রান্ত কোনও স্পষ্ট নীতি না থাকায়, এবং অধিকাংশ এয়ারলাইনই 'ক্যান্সেলেশন ফি' বাতিল করতে রাজি না হওয়ার ফলে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে যাত্রীদের মধ্যে।

পুণের তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী অমনদীপ সিংয়ের তাঁর পরিবারের ১১ জন সদস্যের সঙ্গে মার্চের শেষে দুবাই যাওয়ার কথা। "আমরা টিকিট কেটেছিলাম ফেব্রুয়ারির গোড়ায়, যখন করোনাভাইরাস এতটা ছড়ায় নি। এখন দুবাই থেকে ফেরত আসা পুণেরই এক দম্পতির শরীরে ভাইরাস পাওয়া গেছে, কাজেই আমরা যাব কিনা বুঝতে পারছি না। কিন্তু ট্যুর কোম্পানি আমাদের সফর বাতিল করতে দিচ্ছে না। এবং ভারত বা দুবাইয়ের সরকারের তরফে কোনোরকম নির্দেশিকাও নেই, যা দেখিয়ে আমরা টিকিটের টাকা ফেরত চাইতে পারি বা তারিখ বদলাতে পারি," বলছেন তিনি।

পুণের আরেক বাসিন্দা মনোজ ভাটিয়ার সপরিবারে জম্মু যাওয়ার কথা ছিল। দলে একটি শিশুও রয়েছে। তাঁর দাবি, গো এয়ার তাঁর টিকিটের টাকা আংশিক ফেরত দিয়েছে, যার ফলে তাঁর লোকসান হয়েছে ১৯ হাজার টাকা। "আমি ফ্লাইট বুক করি বেশ কিছু সপ্তাহ আগে। সঙ্গে বাচ্চা থাকায় পরে সফর বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু গো এয়ার বড়সড় 'ক্যান্সেলেশন ফি' নিয়েছে। আমি দিয়েছিলাম ৩৭ হাজার টাকা, কিন্তু ফেরত পেয়েছি মাত্র ১৭ হাজার," বলেন মনোজ।

তিনি স্বীকার করছেন যে টিকিট বাতিল সংক্রান্ত গো এয়ারের ৮ মার্চে ঘোষিত নীতির ফলে ৩০ সেপ্টেম্বরের আগে যাঁদের সফর করার কথা, তাঁরা উপকৃত হবেন। তবে তাঁর বক্তব্য, "আমার মতো যাত্রী, যাদের মার্চ-এপ্রিলে সফর করার কথা ছিল, তাদের কোনও লাভ হলো না।"

ট্র্যাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অফ পুণের কর্ণধার নীলেশ ভনশালি বলেছেন, যাত্রীদের কথা ভেবে এ বিষয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ করা উচিত। তাঁর কথায়, "বিভিন্ন এয়ারলাইন 'ক্যান্সেলেশন ফি' নেবে কিনা, সে সম্পর্কে কোনও স্পষ্ট নীতি নেই। কোনও কোনও এয়ারলাইন ব্যক্তিস্তরে কিছু পদক্ষেপ নিলেও, গ্রুপ বুকিংয়ের ক্ষেত্রে কোনও ছাড় দিতে রাজি নয়। রোজ কথা শুনতে হচ্ছে গ্রাহকদের কাছে। আমরা চাই না কেউই ঝুঁকি নিয়ে সফর করুন, কিন্তু এয়ারলাইনরা আমাদের কোনও রাস্তা দেখাচ্ছে না।"

ভনশালি আরও বলছেন, করোনা আতঙ্কের জেরে গোটা গ্রীষ্মকালীন ছুটির সিজন নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। "সাধারণত গরমের ছুটির বুকিং হয় নভেম্বর-ডিসেম্বরে। সেই বুকিং যাতে বেশি হয়, তার জন্য অনেক খরচ করে বিজ্ঞাপন দিই আমরা। এখন মনে হচ্ছে, পুরোটাই জলে যাবে। করোনার ফলে ব্যবসা এতটাই কমে গেছে যে অনেক ট্র্যাভেল এজেন্সি তাদের কর্মীদের বেতন ছাড়া ছুটিতে পাঠিয়ে দিয়েছে। আমরা তো গ্রাহক, হোটেল, এবং এয়ারলাইনের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের কাজ করি। সরকারের উচিত, আমাদের দিকটাও দেখা।"

Advertisment