প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সেনার শক্তি আর না বাড়ানো নিয়ে সহমত ভারত ও চিন। লাদাখে নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে মলডোতে সোমবার ভারত-চিনা সেনা পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকেই নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তেজনা প্রশমণের লক্ষ্যে আলোচনা এগিয়েছে বলে দুই দেশই যৌথ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে। তবে, ভারত-চিন বিরোধ এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে ওই বিবৃতিতে কিছু বলা হয়নি। মনে করা হচ্ছে, নিয়ন্ত্রণরেখায় সামরিক আক্রমনাত্মক আচরণে নতুন করে যাতে উত্তেজনা না ছড়ায় তাই দু'দেশের সেনাস্তরে এই সিদ্ধান্তে সহমত পোষণ করা হয়েছে।
লাদাখে নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তেজনার আবহেই সেপ্টেম্বরের শুরুতে মস্কোয় ভারত-চিন বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হয়। সেখানেই দুই দেশের সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে পাঁচটি বিষয়ে সহমত হয়েছিলেন জয়শঙ্কর ও ওয়াং। তারপরই থমকে যাওয়া ভারত-চিন সেনা স্তরের ষষ্ঠ বৈঠক হয় চিনের মলডোতে।
মঙ্গলবারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, '২১ সেপ্টেম্বর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনতে ভারত-চিন সেনাস্তরে আলোচনা হয়েছে। স্থিতাবস্থা ফেরানোর প্রশ্নে দু’দেশের রাজনৈতিক নেতারা যে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন, তা বাস্তবায়িত করতে তৃণমূল স্তরে যোগাযোগ বাড়ানো, আলোচনা ও পারস্পরিক ভুল বোঝাবুঝি এড়াতেও রাজি হয়েছে দু’পক্ষ। সীমান্তে নতুন করে বাড়তি সেনা মোতায়েন করা হবে না বলে সম্মত হয়েছে দু’দেশ। কোনও দেশ একক ভাবে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পরিবর্তনের চেষ্টা করবে না কিংবা সীমান্ত পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে এমন কোনও পদক্ষেপ না করার বিষয়ও দুই দেশই সহমত।'
আরও পড়ুন- ডোকলাম বিবাদের পর LAC বরাবর দ্বিগুণ সামরিক নির্মাণ করেছে চিন! মার্কিন রিপোর্টে চাঞ্চল্য
এছাড়াও ওই বিবৃতিতে উল্লেখ, 'সেনা পর্যায়ে সপ্তম বৈঠকের জন্য রাজি ভারত-চিন। দ্রুত তা হবে। সীমান্ত সুরক্ষা ও সেখানে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে এ ধরণের বৈঠক খুবই গুরুত্বপূর্ণ।'
নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা প্রত্যাহারের আগে দুই দেশের পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সেখানে বাড়তি সেনা মোতায়েন না করার সিদ্ধান্তে সহমত হওয়াকে তাৎপর্যবাহী পদক্ষেপ বলেই মনে করা হচ্ছে।
তবে শুধু সহমতে পৌঁছনোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থেকে সিদ্ধান্ত বাস্তবে কতটা প্রতিফলিত হচ্ছে সেদিকেও নজর রাখছে নয়া দিল্লি।
মলডোতে ভারতীয় দলের নেতৃত্বে ছিলেন লেহতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ১৪ কর্পস বাহিনীর কম্যান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরিন্দর সিং। চিনা দলের নেতৃত্ব দেন দক্ষিণ শিনজিয়াং সামরিক অঞ্চলের কম্যান্ডার মেজর জেনারেল লিউ লিন। উল্লেখ্য, এই প্রথম ভারত-চিন সীমান্ত সমস্যা সংক্রান্ত সামরিক পর্যায়ের বৈঠকে বিদেশমন্ত্রকের প্রতিনিধি হিসাবে ছিলেন মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব পর্যায়ের আধিকারিক-লেফটেন্যান্ট জেনারেল পি জি কে মেনন।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন