/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2020/06/modi-trump.jpg)
প্রথা-বহির্ভূত পথে হেঁটে মঙ্গলবার নয়া দিল্লি জানাল, "ভারত-চিন সীমান্তের পরিস্থিতি" নিয়ে আলোচনা করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে দুই নেতার মধ্যে ফোনে কথা হয়। সম্প্রসারিত জি-৭ গোষ্ঠীতে ভারতের অন্তর্ভুক্তি চান তিনি, এই ঘোষণা করার দু'দিন পর মোদীকে ফোন করেন ট্রাম্প।
আমেরিকায় অনুষ্ঠেয় জি-৭ এর পরবর্তী শীর্ষ বৈঠকে মোদীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, তাঁর ইচ্ছে "বর্তমান সদস্য দেশগুলির বাইরে গিয়ে ভারতের মতো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দেশকে" এই গোষ্ঠীর আওতায় নিয়ে আসবেন তিনি।
গত সপ্তাহেই ট্রাম্প দাবি করেছিলেন যে ভারত-চিন সীমান্ত নিয়ে মোদীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে, তবে নয়া দিল্লির সূত্র জানায়, দুই নেতার মধ্যে "সম্প্রতি কোনও যোগাযোগ হয়নি"। তাঁর একটি টুইটে ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার পরিস্থিতিকে "তুমুল সীমান্ত দ্বন্দ্ব" হিসেবে অভিহিত করেন ট্রাম্প।
We have informed both India and China that the United States is ready, willing and able to mediate or arbitrate their now raging border dispute. Thank you!
— Donald J. Trump (@realDonaldTrump) May 27, 2020
মঙ্গলবার প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে প্রথমবার কথা হয় দুই নেতার। গত সপ্তাহে মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক এসপার এবং কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের মধ্যে ফোনে কথোপকথন হয়।
একেবারে শীর্ষস্তরে ভারত-আমেরিকার এই আদানপ্রদানের নেপথ্যে রয়েছে ওয়াশিংটন এবং বেইজিংয়ের মধ্যে হংকংয়ে স্বায়ত্তশাসন, তাইওয়ান, Covid-19 ভাইরাসের উৎপত্তি, দক্ষিণ চিন সমুদ্রে উত্তেজনা, এবং বাণিজ্য যুদ্ধ সমেত নানা বিষয়ে চরম বাগবিতণ্ডার আবহ।
আরও পড়ুন: লাদাখ সীমানায় উত্তেজনার কারণ- বিভিন্ন সম্ভাবনা
জি-৭ গোষ্ঠীর সম্প্রসারণের প্রস্তাব বিষয়ে বিদেশ মন্ত্রক জানায়, "প্রধানমন্ত্রী মোদী রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের অভিনব ভাবনা এবং দূরদর্শীতার প্রশংসা করে বলেন, এই সম্প্রসারিত মঞ্চ COVID-পরবর্তী পৃথিবীর বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে প্রস্তাবিত শীর্ষ বৈঠকের সাফল্য নিশ্চিত করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে সানন্দে কাজ করবে ভারত।"
বিবৃতিতে আরও বলা হয় যে প্রধানমন্ত্রী "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে চলতে থাকা অভ্যন্তরীণ গোলযোগ সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে, এই শুভেচ্ছা জানান"।
মন্ত্রকের তরফে এও বলা হয় যে দুই নেতার মধ্যে "অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়, যেমন দুই দেশের COVID-19 পরিস্থিতি, ভারত-চিন সীমান্ত পরিস্থিতি, এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (World Health Organisation) সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও মত বিনিময় হয়"।
"রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প গত ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁর ভারত সফর নিয়ে আনন্দ জ্ঞাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন যে এই সফর নানা কারণে স্মরণীয় এবং ঐতিহাসিক, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন গতি এনে দিয়েছে। এই অসাধারণ উষ্ণ এবং অকপট কথোপকথন ভারত-মার্কিন সম্পর্কের বিশেষত্বের প্রতিফলন, এবং দুই নেতার পারস্পরিক বন্ধুত্ব এবং শ্রদ্ধারও," জানায় মন্ত্রক।
ফোনালাপের পর টুইট করে মোদী বলেন, "আমার বন্ধু রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে অমায়িক এবং ফলপ্রসূ আলোচনা হলো। জি-৭ গোষ্ঠীর মার্কিন সভাপতিত্ব নিয়ে তাঁর প্রস্তাব সম্পর্কে আলোচনা করি আমরা, এছাড়াও COVID-19 মহামারী এবং অন্যান্য বিষয়েও কথা হয়।"
Had a warm and productive conversation with my friend President @realDonaldTrump. We discussed his plans for the US Presidency of G-7, the COVID-19 pandemic, and many other issues.
— Narendra Modi (@narendramodi) June 2, 2020
অন্যদিকে রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রকের এক মুখপাত্র বলেছেন, "সম্প্রসারিত জি-৭ শীর্ষ বৈঠক সঠিক পদক্ষেপ, তবে প্রতিনিধিত্বের বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। উদাহরণস্বরূপ, চিনকে বাদ দিয়ে যে কোনও আন্তর্জাতিক উদ্যোগ নেওয়া বা রূপায়ণ করা যেতে পারে না, সেকথা স্পষ্ট।" এই মন্তব্য টুইট করে ভারতে রাশিয়ার দূতাবাস।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন