যুদ্ধের তৎপরতা? গত কয়েকদিন ধরেই লাদাখকে কেন্দ্র করে ভারত-চিন উত্তেজনা বাড়ছে। তারই মধ্যে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করলেন তিন বাহিনীর প্রধান, ডিফেন্স স্টাফ রাওয়াত। বৈঠকে ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালও। এই বৈঠকই ইন্দো-চিন যুদ্ধের পরিস্থিতির জোরাল ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ভারত-চিন সীমান্তে উত্তেজনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ৫ মে থেকেই ওয়েস্টার্ন সেক্টরের লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় এই সংঘাত চলছে। ওই দিনই পূর্ব লাদাখের প্যাঙ্গন লেকের কাছে চিন ভারতীয় সেনার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। উত্তর সিকিমেও এ মাসের শুরুতে দুই সেনাবাহিনীর সংঘাত হয়।প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ফিঙ্গার ফোর-এ মধ্যে রাস্তা নির্মাণ ঘিরে চিন আপত্তি জানিয়েছিল। যা থেকেই সমস্যার সৃষ্টি।
লাদাখের প্রকৃত পরিস্থিতি, বাহিনী মোতায়েন ও বাহিনী কতটা প্রস্তুত- এদিন জেনারেল রাওয়াত ও তিন বহিনীর প্রধানরা তা নিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংকে রিপোর্ট দেন। তবে, সরকারিভাবে জানানো হয়েছে যে, এই বৈঠক পূর্ব নির্ধারিত ছিল এবং বাহিনীর সংস্কারই ছিল মূল আলোচ্য বিষয়।
আজ থেকে সেনা বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক রয়েছে। সেই বৈঠকেই হাজির থাকার কথা নর্দান আর্মি কমান্ডার লেফট্যানেন্ট জেনারেল ওয়াই কে যোশীর। লাদাখও এই সেক্টরের মধ্যেই অবস্থিত। এই বৈঠকের আগে তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে মোদী ও রাজনাথের বৈঠক তাই গুরুত্বপূর্ণ বলেই ধরা হচ্ছে। সেনা বাহিনীর বৈঠকটি এপ্রিলের ১৩-১৮ পূর্বনির্ধারিত থাকলেও করোনা মহামারীর কারণে তা পিছিয়ে যায়। পরে ঠিক হয় ওই বৈঠকের প্রথম পর্যায়ে হবে ২৭-২৯ মে ও দ্বিতীয় পর্যায়টি হবে জুনের শেষে। সেনার তরফে এই বৈঠক প্রসঙ্গে জানানো হয়েছে যে, বর্তমান প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ ও সেনার ভবিষ্যৎ রূপরেখা নির্ধারণই মূল লক্ষ্য।
আরও পড়ুন- ভারত-চিন উত্তেজনা বাড়ছে, উত্তরাখণ্ডে বিপুল পরিমানে সেনা মোতায়েন
চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে আরও বেশি সেনা ও যুদ্ধাস্ত্র মোতায়েন করছে বলে ভারতীয় সেনা সূত্রে খবর। পাল্টা হিসাবে উত্তরাখণ্ড, সিকিম, অরুণাচলপ্রদেশ, লাদাখেও বাড়তি বাহিনী মোতায়েন করছে ভারতীয় সেনা। চলছে কড়া নজরদারি। ফলে উত্তেজনার আবহ আরও গভীর হয়েছে। জানা যাচ্ছে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যতক্ষণ চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে বেশি সেনা ও যুদ্ধাস্ত্র মোতায়েন করবে, ভারতও পাল্লা দিয়ে সেনা-যুদ্ধাস্ত্র মোতায়েন করবে। ভারতীয সেনা কোনও মতেই পিছ-পা হবে না।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তেজনা প্রশমনে এর আগে লাদাখে ভারত-চিন সেনাবাহিনীর শীর্ষ আধিকারিকদের মধ্যে ৬ বার আলোচনা হয়েছে। কিন্তু, তা ব্যর্থ হয়। সূত্রের খবর, চিনা বাহিনী তিন জায়গা দিয়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পার করে ভারতে প্রবেশ করছে। ভারতীয় ভূখণ্ড চিনা সেনাদের ছাড়তে বলা হলেও তারা যেতে নারাজ । এদিকে, গালওয়ান ভ্যালির চিনা অংশে বাহিনী বিস্তার করছে বেজিং। যা যুদ্ধের প্রস্তুতি বলে মনে করা হচ্ছে। এই অবস্থায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে দৌলতবাগ সড়ককে কাজে লাগাতে মরিয়া ভারত।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন